বুকে
ব্যথা হলে কমবেশি অনেকেই ভয় পান, হার্টের সমস্যা হলো না তো? হ্যাঁ,
বুকে ব্যথা হৃদ্রোগের একটি অন্যতম উপসর্গ বটে, কিন্তু এ সমস্যা ছাড়াও বুকে ব্যথা হতে
পারে। খাদ্যনালির
সমস্যা,
পেপটিক আলসার, ফুসফুস ও পাঁজরের সমস্যায় এমনকি মানসিক উদ্বেগজনিত সমস্যায়ও বুকে ব্যথা হয়। আবার হৃদ্রোগে যে বুকে ব্যথা হবেই, এমনও কোনো কথা নেই। কোনো রকম বুকে ব্যথার ইতিহাস
ছাড়াই বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেছে বা হৃদ্যন্ত্রের রক্তনািলতে ব্লক পাওয়া গেছে—এমন ঘটনা বিরল নয়। বিশেষ করে দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিসে, বয়স্ক পুরুষ ও নারীদের এবং স্নায়ু
জটিলতার কারণে হৃদ্রোগ থাকা সত্ত্বেও কোনো
রকম বুকে ব্যথা অনুভূত হয় না।
তবে কখন সন্দেহ?
সাধারণত হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় বা করোনারি ধমনিতে বাধার কারণে যে বুকে ব্যথা হয়ে থাকে,
তার কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ থাকতে পারে। এটি সাধারণত বুকের
একেবারে মাঝখানটিতে অনুভূত হয়। এমন মনে হয় যে কেউ
বুকটাকে চাপ দিয়ে ধরছে, ভার বোধ হচ্ছে বা মুচড়ে যাচ্ছে। ব্যথা ঘাড়, কাঁধ, চোয়াল, বাম হাত,
এমনকি পিঠেও ছড়িয়ে যেতে পারে। হাঁটাচলা, সিঁড়ি ভাঙা, পরিশ্রম,
দৌড়ঝাঁপ ইত্যাদিতে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। কখনো ভারী খাবারদাবার, ঠান্ডা আবহাওয়া বা অধিক উত্তেজনাও হতে পারে ব্যথার উৎপত্তি। ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন
দেখে বুকে ব্যথা হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। করোনারি ধমিনতে বাধা বা
ব্লকের কারণে হৃৎপিণ্ডে যথেষ্ট রক্ত বা
অক্সিজেন সরবরাহ না হওয়াই এই ব্যথার কারণ। একে অ্যানজিনা বলা হয়। অ্যানজিনার
ব্যথা বিশ্রাম নিলে বা জিবের নিচে নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে নিলে সেরে যায়। তবে যখন এ ধরনের ব্যথা বিশ্রাম নিয়েও কমছে না, দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হচ্ছে, প্রচণ্ডতায় বাড়ছে, সঙ্গে ঘাম ও বমি ভাব হচ্ছে, তখন হার্ট
অ্যাটাক হয়েছে বলে সন্দেহ করা যায়। বুকে ব্যথা একটি জরুরি
অবস্থা অল্পস্বল্প বুকে ব্যথা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত; বিশেষ করে যদি আপনার বয়স চল্লিশের ওপর, পরিবারে হৃদ্রোগের ইতিহাস থাকে, আপনি যদি ধূমপায়ী
হয়ে থাকেন বা আপনার উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা রক্তে চর্বির আধিক্য থাকে। এসব বিবেচনা করে এবং কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আপনার আসলেই হৃদ্রোগ আছে কি না,
তা নিশ্চিত হয়ে নেওয়াই ভালো।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল|
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।