খুশকির
সমস্যায় নারী-পুরুষে ভেদ নেই। খুশকি
নিয়ে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী
কিংবা যুবক-যুবতী—সবাইকে
দেখা যায় উশখুশ করতে। চুলের
খুশকি নিয়ন্ত্রণে
রাখাটা অনেকের কাছেই যেন অসাধ্য! কিন্তু নানা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ঘরে বসেই
বেয়াড়া খুশকির লাগাম টেনে ধরতে পারেন আপনি।
অর্গানিক
হেলথ ডটকম অবলম্বনে জেনে নিন খুশকি দূর করার কিছু সহজ উপায়।
খুশকি
কেন হয়?
অনেক কারণেই
খুশকি হতে পারে। খুশকির সবচেয়ে সাধারণ
কারণ বলা যেতে পারে সেবোরেইক
ডারমাটাইটিস বা ত্বকের তৈলাক্ত ও চুলকানিপ্রবণ অবস্থাকে। এক
ধরনের ছত্রাক আছে যার নাম মেলাসেজিয়া। সব
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাথার খুলিতেই এই
মেলাসেজিয়া ছত্রাক থাকে। মেলাসেজিয়া নতুন ত্বক কোষ
জন্মাতে সহায়তা করে। কিন্তু
ত্বকে ময়লা জমে তেল চিটচিটে অবস্থার মধ্যে এই ছত্রাক বিপদে ফেলতে
পারে। এ অবস্থায় জন্মানো
অতিরিক্ত ত্বক কোষগুলো মরে যায় এবং ঝরে পড়ে। মাথা
থেকে ঝরে পড়া সাদা-হলদে খুশকি আসলে আমাদের ত্বকের মৃত কোষ। তবে, মাথা
ছাড়াও বাহুমূল, ঊরুসন্ধিসহ শরীরের
অন্যত্রও খুশকি হতে পারে। এ ছাড়া
শুষ্ক ত্বকও খুশকির একটা সাধারণ কারণ। শুষ্ক ত্বকের ছোট ছোট মৃত
কোষ খুশকি তৈরিতে সহায়তা করে। তবে, এ
কারণে খুশকি হলে তা আপনি এমনিতেই টের পাবেন, কেননা
মাথা ছাড়াও শরীরের অন্যত্রও শুষ্ক ত্বকের নমুনা দেখা যাবে। তবে, খুশকি
হলে দ্রুত তার প্রতিকার করা দরকার। নইলে এই সমস্যা থেকে চুলপড়াসহ
নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। এখানে প্রাকৃতিক উপাদান
ব্যবহার করে ঘরে বসেই খুশকির প্রতিকারের কিছু উপায়
তুলে ধরা হলো।
জলপাই তেল
খুশকির সমস্যা
দূর করতে জলপাই তেল বা অলিভ অয়েলের ব্যবহার নানা দেশে খুবই জনপ্রিয়। নিয়মিত
জলপাই তেল ব্যবহারে খুশকি কমে। কারণ জলপাই তেল প্রাকৃতিকভাবেই
ভালো ময়েশ্চারাইজার এবং ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে বা ত্বকের আর্দ্রতা
ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে।
কর্পূর ও নারকেল তেল
নারকেল তেল
ও কর্পূরের তেল নানা ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ। আধা কাপ নারকেল তেলের মধ্যে এক
চা-চামচ কর্পূরের তেল নিয়ে একটা বোতল বা পাত্রে রাখুন। খেয়াল
রাখতে হবে যাতে বোতলের মুখ ভালো করে লাগানো
থাকে বা পাত্রটির ঢাকনা ঠিকঠাক আটকানো থাকে, যাতে
ভেতরে বাতাস না ঢোকে। শুষ্ক স্থানে এভাবে রাখা
পাত্র থেকে কিছুটা তেল নিয়ে প্রতিরাতে ঘুমাতে
যাওয়ার আগে মাথায় দিন। মিনিট দশেক ধরে ঘষে
ঘষে চুলের গোড়ায় মাখুন। সকালে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে
টানা দুই সপ্তাহ ব্যবহার করে উপকার পেলে ধীরে
ধীরে এটা একদিন পর পর মাখুন বা আরও কমিয়ে
দিন।
বেকিং সোডা
হালকা পানিতে মাথা ভিজিয়ে নিয়ে খানিকটা বেকিং সোডা পুরো মাথায় মেখে নিন। ভালো করে ঘষে ঘষে শ্যাম্পু না করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা মাথার খুলিতে থাকা ছত্রাক দমন করে প্রথমদিকে ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক করে ফেলতে পারে। কিন্তু অল্পদিনেই ত্বকে স্বাভাবিক তৈলাক্ত অবস্থা ফিরে আসবে। কিন্তু এ সময়ে আপনি খুশকি থেকে মুক্তি পাবেন।
হালকা পানিতে মাথা ভিজিয়ে নিয়ে খানিকটা বেকিং সোডা পুরো মাথায় মেখে নিন। ভালো করে ঘষে ঘষে শ্যাম্পু না করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটা মাথার খুলিতে থাকা ছত্রাক দমন করে প্রথমদিকে ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক করে ফেলতে পারে। কিন্তু অল্পদিনেই ত্বকে স্বাভাবিক তৈলাক্ত অবস্থা ফিরে আসবে। কিন্তু এ সময়ে আপনি খুশকি থেকে মুক্তি পাবেন।
লেবুর রস
দুই টেবিল-চামচ লেবুর রস
নিয়ে পুরো মাথায় চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে মাখুন। পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এবার
এক টেবিল-চামচ লেবুর রস নিয়ে এক কাপ পানিতে মেশান। লেবুর
রস মেশানো পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। খুশকি
না কমা পর্যন্ত প্রতিদিন এভাবে লেবু
চিকিৎসা চালিয়ে দেখতে পারেন।
ঘৃতকুমারী
খুশকি ভরা মাথায় ঘৃতকুমারীর রস মেখে নিলে দারুণ আরাম পাবেন। খুশকির জ্বালায় দিনরাত চুলকানো থেকে খানিকটা ছুটিও দেবে ঘৃতকুমারীর রসের শীতল আরাম। এই উদ্ভিদ রসের সমৃদ্ধ উপাদানগুলো আপনার ত্বকের অনেক সমস্যাই দূর করবে।
মেথি-তেল
সাধারণ নারকেল তেলের সঙ্গে মেথি মিশিয়ে কয়েকদিন বোতলে রেখে দিন। নিয়মিত এই মেথি মেশানো তেল মাখুন মাথায়। রাতে মেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহারে মাথার চুল ও ত্বক দুইই ভালো থাকবে। খুশকি থেকেও রেহাই পাবেন।
লবণ
প্রতিদিনই কাজে লাগা লবণের অনেক ব্যবহারই হয়তো আমরা জানি না। মাথায় হালকা করে লবণ ব্যবহার করে দেখুন। প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে লবণ খুশকি দূর করতে দারুণ কাজ করবে। হালকা করে লবণ ব্যবহার করে তারপর শ্যাম্পু করলে শ্যাম্পুর পুরো সুবিধা আপনি কাজে লাগাতে পারবেন। এ ছাড়া চুলকাতে থাকা খুশকি ভরা মাথায় লবণ-চিকিৎসা দারুণ প্রশান্তিও দেবে আপনাকে।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।