সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: হাদীসে ক্বোরআন তেলাওয়াতের ফজীলত এবং গুরুত্ব

হাদীসে ক্বোরআন তেলাওয়াতের ফজীলত এবং গুরুত্ব



ইসলামের অন্যতম গ্রন্থ পবিত্র ক্বোরআনের তেলাওয়াত করা অন্যতম সওয়াবের কাজের একটি। ক্বোরআন তেলাওয়াত শয়তানের শরীরে কম্পনের সৃষ্টি করে। ফলে যেখানে ক্বোরআন তেলাওয়াত হয় সেখানে শয়তান থাকে না। পবিত্র এ কুরআন শরীফ এর রয়েছে মর্যাদা, মাহাত্ম ও ফযীলত পবিত্র ক্বোরআন তেলাওয়াতের ফজীলত এবং গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক হাদীস রয়েছে। এরকম কিছু সহীহ হাদীস নিয়ে আজকের পোষ্টটি করছি।



পবিত্র কুরআন পড়ার ফযীলত

1/998 عَنْ أَبي أُمَامَةَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: «اقْرَؤُوا القُرْآنَ ؛ فَإِنَّهُ يَأتِي يَوْمَ القِيَامَةِ شَفِيعاً لأَصْحَابِهِ». رواه مسلم
১/৯৯৮। আবূ উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “তোমরা কুরআন মাজীদ পাঠ কর। কেননা, কিয়ামতের দিন কুরআন, তার পাঠকের জন্য সুপারিশ-কারী হিসাবে আগমন করবে।(মুসলিম) [1]


2/999 وَعَنِ النَّوَّاسِ بنِ سَمْعَانَ رضي الله عنه، قَالَ: سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: «يُؤْتَى يَوْمَ القِيَامَةِ بِالقُرْآنِ وَأَهْلِهِ الَّذِينَ كَانُوا يَعْمَلُونَ بِهِ فِي الدُّنْيَا تَقْدُمُهُ سُورَةُ البَقَرَةِ وَآلِ عِمْرَانَ، تُحَاجَّانِ عَنْ صَاحِبِهِمَا». رواه مسلم
২/৯৯৯। নাওয়াস ইবনে সাম‘আন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “কুরআন ও ইহজগতে তার উপর আমলকারীদেরকে (বিচারের দিন মহান আল্লাহর সামনে) পেশ করা হবে। সূরা বাকারাহ  ও সূরা আলে ইমরান তার আগে আগে থাকবে এবং তাদের পাঠকারীদের স্বপক্ষে (প্রভুর সঙ্গে) বাদানুবাদে লিপ্ত হবে। (মুসলিম) [2]


3/1000 وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ». رواه البخاري
৩/১০০০। ‘উসমান ইবনে ‘আফ্ফান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি সেই, যে নিজে কুরআন শিখে ও অপরকে শিক্ষা দেয়।(বুখারী)[3]


4/1001 وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «اَلَّذِيْ يَقْرَأُ القُرْآنَ وَهُوَ مَاهِرٌ بِهِ مَعَ السَّفَرَةِ الكِرَامِ البَرَرَةِ، وَالَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَيَتَتَعْتَعُ فِيهِ وَهُوَ عَلَيْهِ شَاقٌّ لَهُ أجْرَانِ». متفقٌ عَلَيْهِ
৪/১০০১। ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কুরআনের (শুদ্ধ ভাবে পাঠকারী ও পানির মত হিফযকারী পাকা) হাফেয মহা সম্মানিত পুণ্যবান লিপিকার (ফেরেশতাবর্গের) সঙ্গী হবে। আর যে ব্যক্তি (পাকা হিফয না থাকার কারণে) কুরআন পাঠে ওঁ-ওঁকরে এবং পড়তে কষ্টবোধ করে, তার জন্য রয়েছে দুটি সওয়াব।” (একটি তেলাওয়াত ও দ্বিতীয়টি কষ্টের দরুন।) (বুখারী, মুসলিম ৭৯৮নং) [4]


5/1002 وَعَنْ أَبي مُوسَى الأَشعَرِيِّ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «مَثَلُ الْمُؤْمِنِ الَّذِيْ يَقْرَأُ القُرْآنَ مَثَلُ الأُتْرُجَّةِ: رِيحُهَا طَيِّبٌ وَطَعْمُهَا طَيِّبٌ، وَمَثَلُ الْمُؤْمِنِ الَّذِيْ لاَ يَقْرَأُ القُرْآنَ كَمَثَلِ التَّمْرَةِ: لارِيحَ لَهَا وَطَعْمُهَا حُلْوٌ، وَمَثلُ المُنَافِقِ الَّذِيْ يَقرَأُ القُرآنَ كَمَثلِ الرَّيحَانَةِ: ريحُهَا طَيِّبٌ وَطَعْمُهَا مُرٌّ، وَمَثَلُ المُنَافِقِ الَّذِيْ لاَ يَقْرَأُ القُرْآنَ كَمَثلِ الحَنْظَلَةِ: لَيْسَ لَهَا رِيحٌ وَطَعْمُهَا مُرٌّ». متفقٌ عَلَيْهِ
৫/১০০২। আবূ মুসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কুরআন পাঠকারী মুমিনের উদাহরণ হচ্ছে ঠিক উতরুজ্জা (কমলা লেবুর মত এক ধরণের ফল); যার ঘ্রাণ উত্তম এবং স্বাদও উত্তম। আর যে মুমিন কুরআন পড়ে না তার উদাহরণ হচ্ছে ঠিক খেজুরের মত; যার (উত্তম) ঘ্রাণ তো নেই, তবে স্বাদ মিষ্ট। (অন্যদিকে) কুরআন পাঠকারী মুনাফিকের দৃষ্টান্ত হচ্ছে সুগন্ধিময় (তুলসী) গাছের মত; যার ঘ্রাণ উত্তম, কিন্তু স্বাদ তিক্ত। আর যে মুনাফিক কুরআন পড়ে না তার উদাহরণ হচ্ছে ঠিক মাকাল ফলের মত; যার (উত্তম) ঘ্রাণ নেই, স্বাদও তিক্ত।(বুখারী, মুসলিম)[5]


6/1003 وَعَنْ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهَذَا الكِتَابِ أَقْوَاماً وَيَضَعُ بِهِ آخرِينَ». رواه مسلم
৬/১০০৩। উমার ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “মহান আল্লাহ এই গ্রন্থ (কুরআন মাজীদ) দ্বারা (তার উপর আমলকারী) জনগোষ্ঠীর উত্থান ঘটান এবং এরই দ্বারা (এর অবাধ্য) অন্য গোষ্ঠীর পতন সাধন করেন।(মুসলিম) [6]


7/1004 وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ: رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ القُرْآنَ، فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاء اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ، وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً، فَهُوَ يُنْفِقُهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ». متفقٌ عَلَيْهِ
৭/১০০৪। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুজনের ক্ষেত্রে ঈর্ষা করা সিদ্ধ। (১) যাকে আল্লাহ কুরআন (মুখস্থ করার শক্তি) দান করেছেন, সুতরাং সে ওর (আলোকে) দিবা-রাত্রি পড়ে ও আমল করে। (২) যাকে আল্লাহ তাআলা ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং সে (আল্লাহর পথে) দিন-রাত ব্যয় করে।(বুখারী, মুসলিম)[7]


8/1005 وَعَنِ البَرَاءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: كَانَ رَجُلٌ يَقْرَأُ سُورَةَ الْكَهْفِ، وَعِنْدَهُ فَرَسٌ مَرْبُوطٌ بِشَطَنَيْنِ، فَتَغَشَّتْهُ سَحَابَةٌ فَجَعَلَتْ تَدْنُوْ، وَجَعَلَ فَرَسُه يَنْفِرُ مِنْهَا، فَلَمَّا أصْبَحَ أتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم  فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ: «تِلْكَ السَّكِينَةُ تَنَزَّلَتْ لِلقُرْآنِ». متفقٌ عَلَيْهِ
৮/১০০৫। বারাইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা একটি লোক সূরা কাহাফ পাঠ করছিল। তার পাশেই দুটো রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। ইতোমধ্যে লোকটিকে একটি মেঘে ঢেকে নিলোমেঘটি লোকটির নিকটবর্তী হতে থাকলে ঘোড়াটি তা দেখে চমকাতে আরম্ভ করল। অতঃপর যখন সকাল হলো তখন লোকটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে হাজির হয়ে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করল। তা (শুনে) তিনি বললেন, “ওটি প্রশান্তি ছিল, যা তোমার কুরআন পড়ার দরুন অবতীর্ণ হয়েছে।(বুখারী, মুসলিম) [8]


9/1006 وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «مَنْ قَرَأ حَرْفاً مِنْ كِتَابِ اللهِ فَلَهُ حَسَنَةٌ، وَالحَسَنَةُ بِعَشْرِ أمْثَالِهَا، لاَ أَقُولُ: الـم حَرفٌ، وَلَكِنْ: ألِفٌ حَرْفٌ، وَلاَمٌ حَرْفٌ، وَمِيمٌ حَرْفٌ». رواه الترمذي، وقال: (( حديث حسن صحيح ))
৯/১০০৬। আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব (কুরআন মাজীদ) এর একটি বর্ণ পাঠ করবে, তার একটি নেকী হবে। আর একটি নেকী দশটি নেকীর সমান হয়। আমি বলছি না যে, ‘আলিফ-লাম-মীমএকটি বর্ণ; বরং আলিফ একটি বর্ণ, লাম একটি বর্ণ এবং মীম একটি বর্ণ।” (অর্থাৎ তিনটি বর্ণ দ্বারা গঠিত আলিফ-লাম-মীম, যার নেকীর সংখ্যা হবে ত্রিশ।) (তিরমিযী, হাসান)[9]


10/1007 وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَّضِيَ الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إنَّ الَّذِيْ لَيْسَ فِيْ جَوْفِهِ شَيْءٌ مِنَ القُرآنِ كَالْبَيْتِِ الْخَرِبِ» رواه الترمذي وقال:  حديث حسن صحيح .
১০/১০০৭। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: কুরআনের কোনো অংশই যে ব্যক্তির পেটে নেই সে (সেই পেট বা উদর) বিরান ঘরের সমতুল্য। (তিরমিযি) দুর্বল।[10]


11/1008 وَعَنْ عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم  قَالَ: «يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ: اِقْرَأْ وَارْتَقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا، فَإِنَّ مَنْزِلَتَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا». رواه أَبُو داود والترمذي، وقال: (( حديث حسن صحيح ))
১১/১০০৮। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “পবিত্র কুরআনের পাঠক, হাফেয ও তার উপর আমলকারীকে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, ‘তুমি কুরআন করীম পড়তে থাক ও চড়তে থাক। আর ঠিক সেইভাবে স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে পড়তে থাক, যেভাবে দুনিয়াতে পড়তে। কেননা, (জান্নাতের ভিতর) তোমার স্থান ঠিক সেখানে হবে, যেখানে তোমার শেষ আয়াতটি খতম হবে।(আবূ দাউদ, তিরমিযী হাসান)[11]


কুরআন মাজীদ সযত্নে নিয়মিত পড়া ও তা ভুলে যাওয়া থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ

1/1009 عَن أَبِي مُوسَى رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «تَعَاهَدُوا هَذَا القُرْآنَ، فَوَالَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَهُوَ أَشَدُّ تَفَلُّتاً مِنَ الإِبِلِ فِي عُقُلِهَا». متفقٌ عَلَيْهِ
১/১০০৯। আবূ মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “এই কুরআনের প্রতি যত্ন নাও। (অর্থাৎ নিয়মিত পড়তে থাক ও তার চর্চা রাখ।) সেই মহান সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের জীবন আছে, উট যেমন তার রশি থেকে অতর্কিতে বের হয়ে যায়, তার চেয়ে অধিক অতর্কিতে কুরআন (স্মৃতি থেকে) বের হয়ে (বিস্মৃত হয়ে) যায়। (অর্থাৎ অতিশীঘ্র ভুলে যাবার সম্ভাবনা থাকে।) (বুখারী-মুসলিম) [12]


2/1010 وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم  قَالَ: «إنَّمَا مَثَلُ صَاحِبِ الْقُرْآنِ كَمَثَلِ الإِبِلِ المُعَقَّلَةِ، إِنْ عَاهَدَ عَلَيْهَا أَمْسَكَهَا، وَإِنْ أَطْلَقَهَا ذَهَبَتْ». متفقٌ عَلَيْهِ
২/১০১০। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কুরআন-ওয়ালা হল বাঁধা উট-ওয়ালার মত। সে যদি তা বাঁধার পর তার যথারীতি দেখাশোনা করে, তাহলে বাঁধাই থাকবে। নচেৎ ঢিল দিলেই উট পালিয়ে যাবে।(বুখারী, মুসলিম)[13]

সুললিত কণ্ঠে কুরআন পড়া মুস্তাহাব। মধুরকণ্ঠ কারীকে তা পড়ার আবেদন করা ও তা মনোযোগ সহকারে শোনা প্রসঙ্গে
1/1011 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعْتُ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم  يَقُوْلُ: «مَا أَذِنَ اللهُ لِشَيءٍ مَا أَذِنَ لِنَبِيٍّ حَسَنِ الصَّوْتِ يَتَغَنَّى بِالقُرْآنِ يَجْهَرُ بِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ
১/১০১১। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “মহান আল্লাহ এভাবে উৎকর্ণ হয়ে কোন কথা শোনেন না, যেভাবে সেই মধুরকণ্ঠী পয়গম্বরের প্রতি উৎকর্ণ হয়ে শোনেন, যিনি মধুর কণ্ঠে উচ্চ স্বরে কুরআন মাজীদ পড়তেন।(বুখারী, মুসলিম) [14]
আল্লাহর উৎকর্ণ হয়ে শোনার মধ্যে এ কথার ইঙ্গিত রয়েছে যে, তিনি সেই তেলাওয়াতে সন্তুষ্ট হন এবং তা কবুল করেন।


2/1012 وَعَنْ أَبي مُوسَى الأَشعَرِي رضي الله عنه  أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم  قَالَ لَهُ: «لَقدْ أُوتِيتَ مِزْمَاراً مِنْ مَزَامِيرِ آلِ دَاوُدَ». متفقٌ عَلَيْهِ.
وفي رواية لمسلمٍ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ: «لَوْ رَأَيْتَنِي وَأنَا أسْتَمِعُ لِقِراءتِكَ الْبَارِحَةَ» ..
২/১০১২। আবূ মুসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, “তোমাকে দাউদের সুললিত কণ্ঠের মত মধুর কণ্ঠ দান করা হয়েছে।(বুখারী, মুসলিম)[15]
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, “যদি তুমি আমাকে গত রাতে তোমার তেলাওয়াত শোনা অবস্থায় দেখতে (তাহলে তুমি কতই না খুশি হতে)!


3/1013 وَعَنِ البَراءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم  قَرَأَ فِي الْعِشَاءِ بالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ، فَمَا سَمِعْتُ أَحَداً أَحْسَنَ صَوْتاً مِنْهُ . متفقٌ عَلَيْهِ
৩/১০১৩। বারাইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এশার নামাযে সূরা ওয়াত্তীন অয্যাইতূনপড়তে শুনেছি। বস্তুতঃ আমি তাঁর চেয়ে মধুর কণ্ঠ আর কারো শুনিনি।(বুখারী, মুসলিম) [16]


4/1014 وَعَنْ أَبي لُبَابَةَ بَشِيرِ بنِ عَبدِ المُنذِرِ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم  قَالَ: «مَنْ لَمْ يَتَغَنَّ بِالقُرْآنِ فَلَيْسَ مِنَّا» رواه أَبُو داود بإسنادٍ جيدٍ.
৪/১০১৪। আবূ লুবাবাহ বাশীর ইবনে আব্দুল মুনযির রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিষ্ট স্বরে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের মধ্যে নয়।” (অর্থাৎ আমাদের ত্বরীকা ও নীতি-আদর্শ বহির্ভূত।) (আবূ দাউদ, উত্তম সূত্রে) [17] 


5/1015 وَعَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: «اِقْرَأْ عَلَيَّ القُرْآنَ»، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَقْرَأُ عَلَيْكَ، وَعَلَيْكَ أُنْزِلَ ؟! قَالَ: «إنِّي أُحِبُّ أَنْ أَسْمَعَهُ مِنْ غَيْرِي». فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ سُورَةَ النِّسَاءِ، حَتَّى جِئْتُ إِلَى هَذِهِ الآيَةِ: فَكَيْفَ إِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ أُمَّةٍ بِشَهِيدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هَؤُلاَءِ شَهِيداً  قَالَ: «حَسْبُكَ الآنَ»  فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ، فَإذَا عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ . متفقٌ عَلَيْهِ
৫/১০১৫। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “(হে ইবনে মাসঊদ!) আমাকে কুরআন পড়ে শুনাও।আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনাকে পড়ে শোনাব, অথচ আপনার উপরে তা অবতীর্ণ করা হয়েছে?’ তিনি বললেন, “অপরের মুখ থেকে (কুরআন পড়া) শুনতে আমি ভালবাসি।সুতরাং তাঁর সামনে আমি সূরা নিসা পড়তে লাগলাম, পড়তে পড়তে যখন এই (৪১নং) আয়াতে পৌঁছলাম---যার অর্থ, “তখন তাদের কি অবস্থা হবে, যখন প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকেও তাদের সাক্ষী-রূপে উপস্থিত করব?” তখন তিনি বললেন, “যথেষ্ট, এখন থাম।অতঃপর আমি তাঁর দিকে ফিরে দেখি, তাঁর নয়ন যুগল অশ্রু ঝরাচ্ছে। (বুখারী, মুসলিম) [18]



বিশেষ বিশেষ সূরা ও আয়াত পাঠ করার উপর উৎসাহ দান

1/1016 عَن أَبي سَعِيدٍ رَافِعِ بن الْمُعَلَّى رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «أَلاَ أُعَلِّمُكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ فِي القُرْآن قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ مِنَ الْمَسْجِدِ ؟» فَأخَذَ بِيَدِي، فَلَمَّا أَرَدْنَا أَنْ نَخْرُجَ، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، إنَّكَ قُلْتَ: لأُعَلِّمَنَّكَ أَعْظَمَ سُورَةٍ فِي القُرْآنِ ؟ قَالَ: «اَلْحَمْدُ للهِ رَبِّ العَالَمِينَ، هِيَ السَّبْعُ المَثَانِي وَالقُرْآنُ العَظِيمُ الَّذِيْ أُوتِيتُهُ». رواه البخاري
১/১০১৬। আবূ সাঈদ রাফেইবনে মুআল্লা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “মসজিদ থেকে বের হবার পূর্বেই তোমাকে কি কুরআনের সবচেয়ে বড় (মাহাত্ম্যপূর্ণ) সূরা শিখিয়ে দেব না?” এই সাথে তিনি আমার হাত ধরলেন। অতঃপর যখন আমরা বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা করলাম, তখন আমি নিবেদন করলাম, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি যে আমাকে বললেন, তোমাকে অবশ্যই কুরআনের সবচেয়ে বড় (মাহাত্ম্যপূর্ণ) সূরা শিখিয়ে দেব?’ সুতরাং তিনি বললেন, “(তা হচ্ছে) আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন’ (সূরা ফাতেহা)এটি হচ্ছে সাবউ মাসানী’ (অর্থাৎ নামাযে বারংবার পঠিতব্য সপ্ত আয়াত) এবং মহা কুরআন; যা আমাকে দান করা হয়েছে।(বুখারী) [19]


2/1017 وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِِيِّ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ فِي: - قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ -: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إنَّهَا لَتَعْدِلُ ثُلُثَ القُرْآنِ» .
وفي روايةٍ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ ِلأَصْحَابِهِ: «أَيَعْجِزُ أحَدُكُمْ أنْ يَقْرَأَ بِثُلُثِ القُرْآنِ فِي لَيْلَةٍ؟»، فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ، وَقَالُوا: أَيُّنَا يُطِيقُ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللهِ ؟ فَقَالَ: «قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ اللهُ الصَّمَد: ثُلُثُ الْقُرْآنِ». رواه البخاري
২/১০১৭। আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সূরা) ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদসম্পর্কে বলেছেন, “সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ আছে, নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল।
অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণকে বললেন, ‘তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে অপারগ?’ প্রস্তাবটি তাঁদের পক্ষে ভারী মনে হল। তাই তাঁরা বলে উঠলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! এ কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে?’ (অর্থাৎ কেউ পারবে না।) তিনি বললেন, “ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস স্বামাদ’ (সূরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল।” (অর্থাৎ এই সূরা পড়লে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান নেকী অর্জিত হয়) (বুখারী) [20]


3/1018 وَعَنْه: أَنَّ رَجُلاً سَمِعَ رَجُلاً يَقْرَأُ: «قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ» يُرَدِّدُهَا، فَلَمَّا أصْبَحَ جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم  فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ وَكَانَ الرَّجُلُ يَتَقَالُّهَا، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، إنَّهَا لَتَعْدِلُ ثُلُثَ القُرْآنِ». رواه البخاري
৩/১০১৮। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি কোন লোককে সূরাটি বারবার পড়তে শুনল। অতঃপর সে সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তা ব্যক্ত করল। সে সূরাটিকে নগণ্য মনে করছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “সেই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ আছে, নিঃসন্দেহে এই সূরা (ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।(বুখারী) [21]


4/1019 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ فِي: ﴿ قُلۡ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ «إنَّهَا تَعْدِلُ ثُلُثَ الْقُرْآنِ». رواه مسلم
৪/১০১৯। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সূরা) ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদসম্পর্কে বলেছেন, “নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।(মুসলিম) [22]


5/1020 وَعَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه : أَنَّ رَجُلاً قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنِّي أُحِبُّ هَذِهِ السُّورَةَ: ﴿ قُلۡ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ قَالَ: «إنَّ حُبَّهَا أدْخَلَكَ الجَنَّةَ». رواه الترمذي، وقال: ((حديث حسن)) . ورواه البخاري في صَحِيحِهِ تعليقاً.
৫/১০২০। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নিবেদন করল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি এই (সূরা) ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদভালবাসি।তিনি বললেন, “এর ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।(তিরমিযী হাসান সূত্রে, বুখারী বিচ্ছিন্ন সনদে) [23]


6/1021 وَعَنْ عُقبَةَ بنِ عَامِرٍ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «أَلَمْ تَرَ آيَاتٍ أُنْزِلَتْ هَذِهِ اللَّيْلَةَ لَمْ يُرَ مِثْلُهُنَّ قَطُّ ؟  قُلْ أَعْوذُ بِرَبِّ الفَلَقِ  وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ». رواه مسلم
৬/১০২১। উক্ববাহ ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা বললেন, “তুমি কি দেখনি, আজ রাত্রে আমার উপর কতকগুলি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে; যার অনুরূপ আর কিছু দেখা যায়নি? (আর তা হল,) ‘ক্বুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক্বক্বুল আঊযু বিরাব্বিন নাস।(মুসলিম ৮১৪ নং, তিরমিযী) [24]


7/1022 وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِيِّ رضي الله عنه قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم  يَتَعَوَّذُ مِنَ الجَانِّ، وَعَيْنِ الإِنْسَانِ، حَتَّى نَزَلَتْ المُعَوِّذَتَانِ، فَلَمَّا نَزَلَتَا، أَخَذَ بِهِمَا وَتَرَكَ مَا سِوَاهُمَا. رواه الترمذي، وقال: ((حديث حسن))
৭/১০২২। আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সূরা ফালাক্ব ও নাস অবতীর্ণ হবার পূর্ব পর্যন্ত নিজ ভাষাতে) জিন ও বদ নজর থেকে (আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। পরিশেষে যখন উক্ত সূরা দুটি অবতীর্ণ হল, তখন ঐ সূরা দুটি দ্বারা আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং অন্যান্য সব পরিহার করলেন।(তিরমিযী হাসান)[25]


8/1023 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مِنَ القُرْآنِ سُورَةٌ ثَلاثُونَ آيَةً شَفَعَتْ لِرَجُلٍ حَتَّى غُفِرَ لَهُ، وَهِيَ: -تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ المُلْكُ-». رواه أَبُو داود والترمذي، وقال:((حديث حسن))
৮/১০২৩। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কুরআনে ত্রিশ আয়াতবিশিষ্ট একটি সূরা এমন আছে, যা তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে এবং সব শেষে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে, সেটা হচ্ছে তাবা-রাকাল্লাযী বিয়্যাদিহিল মুলক’ (সূরা মুলক)(আবূ দাউদ, তিরমিযী হাসান)[26]


9/1024 وَعَنْ أَبي مَسعُودٍ البَدْرِيِّ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ قَرَأَ بِالآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ البَقَرَةِ فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ». متفقٌ عَلَيْهِ.
৯/১০২৪। আবূ মাসঊদ বদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাক্বারার শেষ আয়াত দুটি পাঠ করবে, তার জন্য সে দুটি যথেষ্ট হবে।(বুখারী, মুসলিম) [27] 
বলা হয়েছে যে, সে রাতে অপ্রীতিকর জিনিসের মোকাবেলায় যথেষ্ট হবে। অথবা তাহাজ্জুদের নামায থেকে যথেষ্ট হবে।


10/1025 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم  قَالَ: «لاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ مَقَابِرَ، إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْفِرُ مِنَ البَيْتِ الَّذِي تُقْرَأُ فِيهِ سُورَةُ البَقرَةِ». رواه مسلم
১০/১০২৫। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা নিজেদের ঘর-বাড়িগুলোকে কবরে পরিণত করো না। যে বাড়িতে সূরা বাকারাহ পাঠ করা হয়, নিশ্চয় সে বাড়ি থেকে শয়তান পলায়ন করে।(মুসলিম) [28]
(অর্থাৎ সুন্নত ও নফল নামায তথা পবিত্র কুরআন পড়া ত্যাগ করে ঘরকে কবর বানিয়ে দিয়ো না। যেহেতু কবরে এ সব বৈধ নয়।)


11/1026 وَعَنْ أُبَيِّ بنِ كَعبٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «يَا أَبَا الْمُنْذِرِ، أَتَدْرِي أَيُّ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ الله مَعَكَ أعْظَمُ ؟» قُلْتُ: اللهُ لاَ إلَهَ إِلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ  فَضَرَبَ فِي صَدْرِي، وَقَالَ: «لِيَهْنِكَ العِلْمُ أَبَا الْمُنْذِرِ» . رواه مسلم
১১/১০২৬। উবাই ইবনে কারাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হে আবূ মুনযির! তুমি কি জান, মহান আল্লাহর গ্রন্থ (আল-কুরআন)এর ভিতর তোমার যা মুখস্থ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় (মর্যাদাপূর্ণ) আয়াত কোনটি?” আমি বললাম, ‘সেটা হচ্ছে আয়াতুল কুরসিসুতরাং তিনি আমার বুকে চাপড় মেরে বললেন, “আবুল মুনযির! তোমার জ্ঞান তোমাকে ধন্য করুক।(মুসলিম) [29]
(অর্থাৎ তুমি, নিজ জ্ঞানের বরকতে উক্ত আয়াতটির সন্ধান পেয়েছ, সে জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।)


12/1027 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: وَكَّلَنِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم  بِحِفْظِ زَكَاةِ رَمَضَانَ، فَأتَانِي آتٍ فَجَعَلَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَام، فَأَخَذْتُهُ فَقُلْتُ: لأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: إنِّي مُحْتَاجٌ، وَعَليَّ عِيَالٌ، وَبِي حَاجَةٌ شَدِيدَةٌ، فَخَلَّيْتُ عَنْهُ، فَأصْبَحْتُ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «يَا أَبَا هُرَيرَةَ، مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ ؟» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، شَكَا حَاجَةً وَعِيَالاً، فَرحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ . فَقَالَ: «أمَا إنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ» فَعَرَفْتُ أنَّهُ سَيَعُودُ، لِقَولِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم  فَرَصَدْتُهُ، فَجَاءَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ، فَقُلْتُ: لأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: دَعْنِي فَإنِّي مُحْتَاجٌ، وَعَلَيَّ عِيَالٌ لاَ أَعُودُ، فَرحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، فَأَصْبَحْتُ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «يَا أَبَا هُرَيرَةَ، مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ ؟» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، شَكَا حَاجَةً وَعِيَالاً، فَرحِمْتُهُ فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ . فَقَالَ: «إنَّهُ قَدْ كَذَبَكَ وَسَيَعُودُ» فَرَصَدْتُهُ الثَّالثَة، فَجَاءَ يَحْثُو مِنَ الطَّعَامِ فَأَخَذْتُهُ، فَقُلتُ: لأَرْفَعَنَّكَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَهَذَا آخِرُ ثَلاَثِ مَرَّاتٍ أَنَّكَ تَزْعُمُ أنَّكَ لاَ تَعُودُ ! فَقَالَ: دَعْنِي فَإنِّي أُعَلِّمُكَ كَلِمَاتٍ يَنْفَعُكَ اللهُ بِهَا، قُلْتُ: مَا هُنَّ ؟ قَالَ: إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الكُرْسِيِّ، فَإِنَّهُ لَنْ يَزَالَ عَلَيْكَ مِنَ الله حَافِظٌ، وَلاَ يَقْرَبُكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ، فَخَلَّيْتُ سَبِيلَهُ، فَأَصْبَحْتُ، فَقَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «مَا فَعَلَ أَسِيرُكَ البَارِحَةَ ؟» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، زَعَمَ أَنَّهُ يُعَلِّمُنِي كَلِمَاتٍ يَنْفَعُنِي اللهُ بِهَا، فَخَلَّيْتُ سَبيلَهُ، قَالَ: «مَا هِيَ ؟» قُلْتُ: قَالَ لِي: إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَة الكُرْسِيِّ مِنْ أَوَّلِهَا حَتَّى تَخْتِمَ الآيَةَ: - اللهُ لاَ إلَهَ إِلاَّ هُوَ الحَيُّ القَيُّومُ - وَقَالَ لِي: لاَ يَزَالُ عَلَيْكَ مِنَ اللهِ حَافِظٌ، وَلَنْ يَقْرَبَكَ شَيْطَانٌ حَتَّى تُصْبِحَ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم : «أمَا إنَّهُ قَدْ صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوْبٌ، تَعْلَمُ مَنْ تُخَاطِبُ مُنْذُ ثَلاَثٍ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ؟» قُلْتُ: لاَ . قَالَ: «ذَاكَ شَيْطَانٌ». رواه البخاري
১২/১০২৭। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একবার) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমযানের যাকাত (ফিতরার মাল-ধন) দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেনবস্তুতঃ (আমি পাহারা দিচ্ছিলাম ইত্যবসরে) একজন আগমনকারী এসে আঁজলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল। আমি তাকে ধরলাম এবং বললাম, ‘তোকে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পেশ করব।সে আবেদন করল, ‘আমি একজন সত্যিকারের অভাবী। পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব আমার উপর, আমার দারুণ অভাব।কাজেই আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির হলাম।) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হে আবূ হুরাইরা! গত রাতে তোমার বন্দী কি আচরণ করেছে?” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! সে তার অভাব ও (অসহায়) পরিবার-সন্তানের অভিযোগ জানাল। সুতরাং তার প্রতি আমার দয়া হলে আমি তাকে ছেড়ে দিলাম।তিনি বললেন, “সতর্ক থেকো, সে আবার আসবে।
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুরূপ উক্তি শুনে সুনিশ্চিত হলাম যে, সে আবার আসবে। কাজেই আমি তার প্রতীক্ষায় থাকলাম। সে (পূর্ববৎ) এসে আঁজলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল। আমি তাকে বললাম, ‘অবশ্যই তোকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে পেশ করব।সে বলল, ‘আমি অভাবী, পরিবারের দায়িত্ব আমার উপর, (আমাকে ছেড়ে দাও) আমি আর আসব না।সুতরাং আমার মনে দয়া হল। আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে উঠে (যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গেলাম তখন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “আবূ হুরাইরা! গত রাত্রে তোমার বন্দী কিরূপ আচরণ করেছে?” আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে তার অভাব ও অসহায় সন্তান-পরিবারের অভিযোগ জানাল। সুতরাং আমার মনে দয়া হলে আমি তাকে ছেড়ে দিলাম।তিনি বললেন, “সতর্ক থেকো, সে আবার আসবে।
সুতরাং তৃতীয়বার তার প্রতীক্ষায় রইলাম। সে (এসে) আঁজলা ভরে খাদ্যবস্তু নিতে লাগল। আমি তাকে ধরে বললাম, “এবারে তোকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে হাযির করবই। এটা তিনবারের মধ্যে শেষবার। ফিরে আসবো নাবলে তুই আবার ফিরে এসেছিস।সে বলল, ‘তুমি আমাকে ছেড়ে দাও, আমি তোমাকে এমন কতকগুলি শব্দ শিখিয়ে দেব, যার দ্বারা আল্লাহ তোমার উপকার করবেন।আমি বললাম, ‘সেগুলি কি?’ সে বলল, ‘যখন তুমি (ঘুমাবার জন্য) বিছানায় যাবে, তখন আয়াতুল কুরসি পাঠ করে (ঘুমবে)। তাহলে তোমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রক্ষক নিযুক্ত হবে। আর সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না।
সুতরাং আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। আবার সকালে (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম।) তিনি আমাকে বললেন, “তোমার বন্দী কি আচরণ করেছে?” আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! সে বলল, “আমি তোমাকে এমন কতিপয় শব্দ শিখিয়ে দেব, যার দ্বারা আল্লাহ আমার কল্যাণ করবেন।বিধায় আমি তাকে ছেড়ে দিলাম।তিনি বললেন, “সে শব্দগুলি কি?” আমি বললাম, ‘সে আমাকে বলল, “যখন তুমি বিছানায় (শোয়ার জন্য) যাবে, তখন আয়াতুল কুরসি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুমপড়ে নেবে।সে আমাকে আরও বলল, “তার কারণে আল্লাহর তরফ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবে। আর সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসবে না।” (এ কথা শুনে)  তিনি বললেন, “শোনো! সে নিজে ভীষণ মিথ্যাবাদী; কিন্তু তোমাকে সত্য কথা বলেছে। হে আবূ হুরাইরা! তুমি জান, তিন রাত ধরে তুমি কার সাথে কথা বলছিলে?” আমি বললাম, ‘জী না।তিনি বললেন, “সে শয়তান ছিল।(বুখারী)  [30]


13/1028 وَعَنْ أَبي الدَّردَاءِ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «مَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الكَهْفِ، عُصِمَ مِنَ الدَّجَّالِ» . وفي رواية: «مِنْ آخِرِ سُورَةِ الكَهْفِ» رواهما مسلم
১৩/১০২৮। আবূ দরদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দিক থেকে দশটি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের (ফিতনা) থেকে পরিত্রাণ পাবে।অন্য বর্ণনায় কাহাফ সূরার শেষ দিক থেকেউল্লেখ হয়েছে। (মুসলিম) [31]


14/1029 وَعَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: بَيْنَمَا جِبْرِيلُ عليه السلام  قَاعِدٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم  سَمِعَ نَقِيضاً مِنْ فَوقِهِ، فَرَفَعَ رَأسَهُ، فَقَالَ: هَذَا بَابٌ مِنَ السَّمَاءِ فُتِحَ اليَوْمَ وَلَمْ يُفْتَحْ قَطُّ إِلاَّ اليَوْمَ، فنَزلَ منهُ مَلَكٌ، فَقَالَ: هَذَا مَلَكٌ نَزَلَ إِلَى الأَرْضِ لَمْ يَنْزِلْ قَطّ إِلاَّ اليَومَ فَسَلَّمَ وَقَالَ: أَبْشِرْ بِنُورَيْنِ أُوتِيتَهُمَا لَمْ يُؤتَهُمَا نَبِيٌّ قَبْلَكَ: فَاتِحَةُ الكِتَابِ، وَخَواتِيمُ سُورَةِ البَقَرَةِ، لَنْ تَقْرَأَ بِحَرْفٍ مِنْهَا إِلاَّ أُعْطِيتَه. رواه مسلم
১৪/১০২৯। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা জিবরীল عليه السلام নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বসে ছিলেন। এমন সময় উপর থেকে একটি শব্দ শুনতে পেলেন। তিনি (জিবরীল) মাথা তুলে বললেন, ‘এটি আসমানের একটি দরজা, যা আজ খোলা হল। ইতোপূর্বে এটা কখনও খোলা হয়নি। ওদিক দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হল। এই ফেরেশতা যে দুনিয়াতে অবতরণ করেছে, ইতোপূর্বে কখনও অবতরণ করেনি।সুতরাং তিনি এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম জানিয়ে বললেন, “আপনি দুটি জ্যোতির সুসংবাদ নিন। যা আপনার আগে কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। (সে দুটি হচ্ছে) সূরা ফাতেহা ও সূরা বাক্বারার শেষ আয়াতসমূহ। ওর মধ্য হতে যে বর্ণটিই পাঠ করবেন, তাই আপনাকে দেওয়া হবে।(মুসলিম) [32]




কুরআন পঠন-পাঠনের জন্য সমবেত হওয়া মুস্তাহাব
1/1030 وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللهِ يَتلُونَ كِتَابَ اللهِ، وَيَتَدَارَسُونَهُ بَينَهُمْ، إِلاَّ نَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ وَغَشِيتْهُمُ الرَّحْمَةُ، وَحَفَّتْهُمُ المَلاَئِكَةُ، وَذَكَرَهُمُ اللهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ». رواه مسلم
১/১০৩০। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখনই কোনো সম্প্রদায় আল্লাহর ঘরসমূহের মধ্যে কোন এক ঘরে একত্রিত হয়ে আল্লাহর গ্রন্থ (কুরআন) পাঠ করে, তা নিয়ে পরস্পরের মধ্যে অধ্যয়ন করে, তাহলে তাদের প্রতি (আল্লাহর পক্ষ থেকে) প্রশান্তি অবতীর্ণ হয় এবং তাদেরকে তাঁর রহমত ঢেকে নেয়, আর ফেরেশতাবর্গ তাদেরকে ঘিরে ফেলেন। আল্লাহ স্বয়ং তাঁর নিকটস্থ ফেরেশতামণ্ডলীর কাছে তাদের কথা আলোচনা করেন।(মুসলিম) [33] 




[1] মুসলিম ৮০৪, আহমাদ ২১৬৪২, ২১৬৫৩, ২১৬৮১, ২১৭১০
[2] মুসলিম ৮০৫, তিরমিযী ২৮৮৩, আহমাদ ১৭১৮৫
[3] সহীহুল বুখারী ৫০২৭, ৫০২৮, তিরমিযী ২৯০৭, ২৯০৮, আবূ দাউদ ১৪৫২, ইবনু মাজাহ ২১১, আহমাদ ৫০৭, ৪১৪, ৫০২, দারেমী ৩৩২৮
[4] সহীহুল বুখারী ৪৯৩৭, মুসলিম ৭৯৮, তিরমিযী ২৯০৪, আবূ দাউদ ১৪৫৪, ইবনু মাজাহ ৩৭৭৯, আহমাদ ২৩৬৯১, ২৪১১৩, ২৪১৪৬, ২৪২৬৭, দারেমী ৩৩৬৮
[5] সহীহুল বুখারী ৫০২০, ৫৪২৭, ৫০৫৯, ৭৫৬০, মুসলিম ৭৯৭, তিরমিযী ২৮৬৫, নাসায়ী ৫০৩৮, আবূ দাউদ ৪৮২৯, ইবনু মাজাহ ২১৪, আহমাদ ১৯০৫৫, ১৯১১৭, ১৯১৬৫, দারেমী ৩৩৬৩
[6] মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩৩, দারেমী ৩৩৬৫
[7] সহীহুল বুখারী ৫০২৫, ৭৫২৯, মুসলিম ৮১৫, তিরমিযী ১৯৩৬, ইবনু মাজাহ ৪২০৯, আহমাদ ৪৫৩৬, ৪৯০৫, ৫৫৮৬, ৬১৩২, ৬৩৬৭
[8] সহীহুল বুখারী ৫০১১, ৩৬১৪, ৪৮৩৯, মুসলিম ৭৯৫, তিরমিযী ২৮৮৫, আহমাদ ১৮০০৬, ১৮০৩৮, ১৮১১৮, ১৮১৬৩
[9] তিরমিযী ২৯১০
[10] আমি (আলবানী) বলছিঃ অর্থাৎ যে কুরআনের কিছু অংশ হেফয না করবে। হাদীসটির দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে আমি আলমিশকাতগ্রন্থে (নং ২১৩৫) আলোচনা করেছি। হাদীসটির সনদকে মুসনাদু আহমাদএর তাহকীক্ব করতে গিয়ে শুয়াইব আলআরনাঊতও দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। এর সনদে কাবূস ইবনু আবী যিবইয়ান নামক এক বর্ণনাকারী রয়েছেন তিনি দুর্বল। তিরমিযী ২৯১৩, আহমাদ ১৯৪৮, দারেমী ৩৩০৬, ইয়াহইয়া ইবন মুঈন একে দুর্বল বলেছেন।
[11] আবূ দাউদ ১৪৬৪, তিরমিযী ২৯১৪, আহমাদ ৬৭৬০
[12] মুসলিম ৭৯১, আহমাদ ১৯০৫২, ১৯১৮৬
[13] সহীহুল বুখারী ৫০৩১, মুসলিম ৭৮৯, নাসায়ী ৯৪২, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৩, আহমাদ ৪৬৫১, ৪৭৪৫, ৪৮৩০, ৪৯০৪, ৫২৯৩, ৫৮৮৭, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭৩
[14] সহীহুল বুখারী ৭৫৪৪, ৫০২৩, ৫০২৪, ৭৪৮২, ৭৫২৭, মুসলিম ৭৯২, নাসায়ী ১০১৭, ১০১৮, আবূ দাউদ ১৪৭৩, আহমাদ ৭৬১৪, ৭৭৭৩, ৯৫১৩, দারেমী ৩৪৯০, ৩৪৯১, ৩৪৯৭
[15] সহীহুল বুখারী ৫০৪৮, মুসলিম ৭৯৩, তিরমিযী ৩৮৫৫
[16] সহীহুল বুখারী ৭৬৭, ৪৯৫২, ৭৫৪৬, মুসলিম ৪৬৪, তিরমিযী ৩১০, নাসায়ী ১০০০, ১০০১, আবূ দাউদ ১২২১, ইবনু মাজাহ ৮৩৫, মুওয়াত্তা মালিক ১৭৬
[17] আবূ দাউদ ১৪৭১
[18] সহীহুল বুখারী ৪৫৮২, ৫০৪৯, ৫০৫৯, ৫০৫৫, ৫০৫৬, মুসলিম ৮০০, তিরমিযী ৩০২৪, ৩০২৫, আবূ দাউদ ৩৬৬৮, ইবনু মাজাহ ৪১৯৪, আহমাদ ৩৫৪০, ৩৫৯৫, ৪১০৭
[19] সহীহুল বুখারী ৪৪৭৪, ৪৬৪৭, ৪৭০৩, ৫০০৬, নাসায়ী ৯১৩, আবূ দাউদ ১৪৫৮, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৫, আহমাদ ১৫৩০৩, ১৭৩৯৫, দারেমী ১৪৯২, ৩৭১
[20] সহীহুল বুখারী ৫০১৫, ৫০১৪, ৫৫৪৩, ৭৩৭৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবূ দাউদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯, ১০৭৩১, ১০৭৯৭, ১০৯১৩, ১০৯৯৯, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭৭, ৪৮৩
[21] সহীহুল বুখারী ৫০১৫, ৫০১৪, ৫৫৪৩, ৭৩৭৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবূ দাউদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯, ১০৭৩১, ১০৭৯৭, ১০৯১৩, ১০৯৯৯, মুওয়াত্তা মালিক ৪৭৭, ৪৮৩
[22] মুসলিম ৮১২, তিরমিযী ২৮৯৯, ২৯০০, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৭, আহমাদ ৯২৫১, দারেমী ৩৪৩২
[23] সহীহুল বুখারী ৭৭৪ নং হাদীসের পরবর্তী বাব। তিরমিযী ২৯০১, আহমাদ ১২০২৪, ১২১০৩, দারেমী ৩৪৩৫
[24] মুসলিম ৮১৪, তিরমিযী ২৯০২, নাসায়ী ৯৫৩, ৯৫৪, ৫৪৩০, ৫৪৩১, ৫৪৩৩, ৫৪৩৮, ৫৪৩৯, ৫৪৪০, আবূ দাউদ ১৪৬২, আহমাদ ১৬৮৪৫, ১৬৮৭১, ১৬৮৮৩, ১৬৮৯০, দারেমী ৩৪৩৯, ৩৪৪০, ৩৪৪১
[25] তিরমিযী ২০৫৮, নাসায়ী ৫৪৯৪, ইবনু মাজাহ ৩৫১১
[26] আবূ দাউদ ১৪০০, ২৮৯১, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৬
[27] সহীহুল বুখারী ৪০০৮, ৫০১০, ৫০৪০, ৫০৫১, ৮০৭, তিরমিযী ২৮৮১, আবূ দাউদ ১৩৯৭, ইবনু মাজাহ ১৩৬৮, ১৩৬৯, আহমাদ ১৬৬২০, ১৬৬৪২, ১৬৬৫১, দারেমী ১৪৮৭. ৩৩৮৮
[28] মুসলিম ৭৮০, তিরমিযী ২৮৭৭, আবূ দাউদ ২০৪২, আহমাদ ৭৭৬২, ৮২৩৮, ৮৫৮৬, ৮৬৯৮, ৮৮০৯
[29] মুসলিম ৮১০, আবূ দাউদ ১৪৬০, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৭
[30] সহীহুল বুখারী ২৩১১ নং হাদীসের পরবর্তী বাব।
[31] আমি (আলবানী) বলছিঃ দ্বিতীয় বর্ণনাটি শায আর প্রথম বর্ণনাটি নিরাপদ (সহীহ্) যেমনটি আমি সিলসিলাহ্ সহীহাহ্গ্রন্থে (নং ৫৮২) তাহকীক্ব করেছি। এর সাক্ষ্য দিচ্ছে নাওয়াস ইবনু সামআনের আগত হাদীসটি। যেটিকে (১৮১৭) নম্বরে লেখক উল্লেখ করেছেন। কারণ এতে বলা হয়েছে যে, তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি দাজ্জালকে পেয়ে বসবে সে যেন তার বিপক্ষে সূরা কাহাফের প্রথম অংশ পাঠ করে। মুসলিম ৮০৯, তিরমিযী ২৮৮৬, আবূ দাউদ ৪৩২৩, আহমাদ ২১২০০, ২৬৯৭০, ২৬৯৯২
[32] মুসলিম ৮০৬
[33] মুসলিম ২৬৯৯, ২৭০০, তিরমিযী ১৪২৫, ১৯৩০, ২৬৪৬, ২৯৪৫, আবূ দাউদ ১৪৫৫, ৪৯৪৬, নাসায়ী ৯১২, ইবনু মাজাহ ২২৫, আহমাদ ৭৩৭৯, ৭৮৮২, ১০১১৮, ১০২৯৮, দারেমী ৩৪৪

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।