সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: Huawei Mobile Service, The worst one in the world। বিশ্বের সবচেয়ে বাজে সার্ভিস!!!

Huawei Mobile Service, The worst one in the world। বিশ্বের সবচেয়ে বাজে সার্ভিস!!!


মোবাইলের ভাগ্য আমার বরাবরই খারাপ। এর আগে স্যামসাং একটা নিয়েও কম কস্ট পাই নি যা নিয়ে একটা পোস্টও করেছিলাম টিটিতে। গত জানুয়ারীর দিকে একটা Huawei Y5C নিলাম। ভালই সার্ভিস দিচ্ছিল। বিশেষ করে এর Hearing Service টা দারুন। খুব ব্যস্ত জায়গায়ও স্পষ্ট শুনা যেতো। নিজের কাছে ভাল লাগায় ৭/৮ জনকে কিনেও দিয়েছি মডেলটা। গত মাসে কথা বলার সময় হঠাৎ করে Hearing Speaker টা নস্ট হয়ে যায়। বাইরে দিলে Original Speaker নাও পেতে পারি সে ভয়ে দিয়ে আসলাম সার্ভিসিং সেন্টারেদেয়ার সময় জিজ্ঞেস করলাম কত সময় লাগতে পারে। বলল এক সপ্তাহ। আপত্তি ছিল না আমার। কিন্তু সেই যে দিলাম, এক সপ্তাহ আর শেষ হয় না।

ফোন করলে বলে সার্ভিস সেন্টারে নাকি Hearing Speaker নাই। চিন্তা করেন-বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম একটা মোবাইল কোম্পানির কাছে নাকি ১০/১৫ টাকা দামের একটা Hearing Speaker নাই!!! বিশ্বাস করা যায়? আগামী সপ্তাহে পাবেন, কাল পাবেন, পরশু পাবেন এভাবেই যাচ্ছে দিন। ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হলো আমার। উপায় না দেখে তাদের Facebook Page এ গেলাম অভিযোগ জানাতে। 







দেখলাম সেখানে আমার মত বিভিন্ন দেশের আরো অনেক হতভাগা অনেক আগেই কমেন্টস করেছেন। তাঁদের সাথে আমিও যুক্ত হলাম। প্রতিত্তোরে কোন আশার বাণী ছিল না। কয়েকবার চিন্তা করলাম ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা করতে পারি কি না। কিন্তু এ দেশে নাগরিক অধিকারটাতো সেই আফ্রিকার হরিণদের মত যারা বলতে পারে না, প্রতিবাধ করতে পারে না, বিচার চাইতে পারে না। নিজের বুদ্ধি দিয়েই বরং যতক্ষণ ঠিকে থাো যায়তাই অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। অবশেষে ৩৬ দিন পর গত সপ্তাহে মোবাইলটা পৌঁছালো সার্ভিস সেন্টারে। একদিকে সার্ভিসিং সিস্টেমের প্রতি প্রচন্ড রাগ, অন্যদিকে সেটটা হাতে পাওয়ার অধিক আগ্রহ নিয়ে গেলাম সার্ভিসিং সেন্টারেসেটটা দেখেই মাথার উপর যেন আমার আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। মোবাইলের স্ক্রীনটা ভাঙ্গা। Service Man কে জিজ্ঞেস করলাম -আমার লাভটা কী হলো ভাই? তিনি বললেন-কোরিয়ার সার্ভিসে আনার সময় ভেঙ্গে গেছে। স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে স্ক্র দিয়ে খোলার সময় স্ক্রোর গোঁথা খেয়ে স্ক্রীন ফেটে গেছে। তাঁকে বললামও স্ক্রীনটা স্ক্রোর আঘাতে ফেটেছে। তারপরও ধরে নিলাম কোরিয়ার সার্ভিসে আনার সময় ভেঙ্গে গেছে। এখন বলেন- কোরিয়ার সার্ভিসের দায়ভারটা কি আমার? তিনি আর কোন উত্তর দেন না। কয়েকবার বলার পরও তিনি নির্বিকার। তাঁরও হয়তো কিছুই করার ছিল না। কারণ দায়টা তার ঘাড়ে পড়ে না। উপায় না দেখে চলে আসলাম সেটটা নিয়ে। ভাগ্য ভাল Screen Protector ছিল তাই Original Screen টা Intact ছিল। কিন্তু সেটে আঘাতটাতো হয়েছে। 

সেটটা নিয়ে Accessories এর দোকানে গেলাম Screen Protector লাগাবো বলে। তাদের বুঝালাম বিস্তারিত। তারা বলল- আসলে ব্রান্ডটা তত খারাপ না। নুতন ফিচার নিয়ে কয়েকটা সেট আসায় দ্রুত মার্কেট পেয়েছে। কিন্তু তাদের সার্ভিস সিস্টেম ভাল না। ঢাকায় সম্ভবত দুটা ছাড়া নিজস্ব কোন সার্ভিস সেন্টার নেই। সবগুলো Service Partner বা চুক্তি ভিত্তিক সার্ভিস। সার্ভিস সেন্টারে অনেকগুলো সেট একসাথে হলে তারপরই সেগুলো চুক্তিতে সার্ভিসিং করিয়ে নেই। সেটগুলো জমা হতে এক সপ্তাহও লাগতে পারে, আবার একমাসও লাগতে পারে। অনেক সময় পার্টসও পরিবর্তন করে ফেলে। যত্ন নেই খুব কম। আমাদের কাছে এরকম অনেকেই অভিযোগ করেতাদের কথা দেখি বরাবর মিলে গেছে। আমার সেটে এখন টাচ সমস্যা দেখা দিয়েছে। টাচ ভালভাবে কাজ করছে না। ব্যাটারি বেকআপও আগের মত নাই। এ হলো Service System. ব্রান্ড হিসেবে নাম করলেও Made in China, একবার গেলে আর পায় না স্বভাবটা বদলাতে পারে নি। আসলে তারা চায় না কাস্টমাররা তাদের কাছে সার্ভিসিং এর জন্য যাক। তাদের চিন্তা হলো-কাস্টমারকে এমন সর্ভিস দেবো যে জীবনে আর কোন দিন সার্ভিসিং এর নাম ধরবে না Huawei Mobile Page থেকে ঘুরে আসলে আমার কথাগুলো আরো বুঝতে পারবেন। প্রতিদিন এত বেশি অভিযোগ পড়ে যে গত সপ্তাহে করা আমার অভিযোগটা খুঁজেই পাই নি। এর পর থেকে এখন কাউকে আর Huawei Mobile এর পরামর্শ দিই না। গতকালও এক বন্ধু ফোন করে নিয়ে গেলো মার্কেটে। গিয়ে দেখলাম তাঁর আরেক বন্ধু সহ দুজনেই Huawei GR5 কিনার জন্য এসেছে। আমার অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করলাম। বললাম-ইলেক্ট্রনিক্স জিনীস। ডিস্টার্ব দিবে না তার কোন গ্যারান্টি নাই। তুমি যদি চাও এত টাকা দামের তোমার প্রিয় জিনীসটা সার্ভিস সেন্টারে যাওয়ার পর তার সাথে বিরোধী দলের আসামীর মত আচরণ করুক তাহলে Huawei Mobile কিনো। পরে একজনকে Sony Xperia M2 Dual এবং অন্যজন Samsung Galaxy J5 (2016) নিলো। এটা হলো আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। এরপরও কারো যদি ভাল লাগে কিনতে পারেন।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।