সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: হুমায়ুন ফরীদি, কাঁদিয়েই গেলেন!!!

হুমায়ুন ফরীদি, কাঁদিয়েই গেলেন!!!


বাংলা চলচিত্রে যে কয়জন অভিনেতা দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহমুখী করতে পেরেছিলন তাঁদের মধ্যে হুমায়ুন ফরীদি একজন। তিনি একসাথে বড় পর্দা, ছোট পর্দা ও মঞ্চে অভিনয় করেছেন। সত্তরের দশকে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় নাট্যদলের সাথে যুক্ত ছিলেন। পরে আশির দশকে বিটিভিতে যোগ দেন। বিটিভিতে তাঁর অভিনিত প্রথম নাটক সম্ভবত নিখোঁজ সংবাদ । সে সময় তাঁর অভিনয়টি খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

পরে অসংখ্য চলচিত্র, মঞ্চ নাটক আর টিভি নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। খলনায়কের চারিত্রটিকে দর্শক প্রায় সময় অপছন্দ করে। কিন্তু হুমায়ুন ফরীদির এই চরিত্রটি দর্শকদেরকে আনন্দ দিত খুব বেশি। স্কুল জীবনে ফিল্ম দেখার জন্য পাগল ছিলাম। তখন থেকেই এই ফরীদি ছিলেন আমার প্রিয় একজন অভিনেতা। তাঁর লম্বা হাসি আর দ্রুত বেগে কথা বলার ভঙ্গিটা সবসময় আমার চোখে ভাসে। তাঁকে প্রথম দেখি ভন্ড ছবির শ্যুটিং এ। ছবিটিএই টানা টানা চোখ দুটি দেখ গানটির দৃশ্যায়ন হচ্ছিল কক্সবাজার। রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শুনলাম হুমায়ুন ফরীদির শ্যুটিং। প্রিয় অভিনেতাকে দেখার সুযোগটা হাতছাড়া না করে ঢুকে গেলাম শ্যুটিং স্পটে। তাঁকে দেখে, তাঁর কথা শুনে এতটাই মুগ্ধ হলাম যা বুঝানো মুশকিল। পরে তাঁর কারণেই ছবিটি দেখেও ফেলি কয়েকবার। এখন আর ছবি বা নাটক দেখার সময় হয় না। কিন্তু হুমায়ুন ফরীদিকে দেখলেই টিভিতে বসে যায়। তাঁর অভিনয় না দেখে পারি না। পত্র-পত্রিকায় ছবি দেখলে একটু চোখ বুলিয়ে নিই প্রিয় মানুষটা সম্পর্কে কি লেখেছে দেখার জন্য। আর সে প্রিয় অভিনেতাই আমার চলে গেল হঠাৎ করে। মনে হয় যেন আমি অনেক বড় কিছু হারিয়ে ফেলেছি।

কেউ চীরজীবন এ দুনিয়াই থাকে না সত্যি। তবে কিছু কিছু মানুষের চলে যাওয়া বড়ই শূণ্যতা সৃষ্টি করে। ফরীদি সে রকম একজন ব্যক্তি যাঁর কারণে অভিনয় জগতে বড় একটি শুণ্যতা সৃষ্টি হল। কিন্তু সে মানুষটা চলে গেল এভাবে যে মনকে বুঝাতে পারি না। জীবনের শেষ কয়েকটি বছর তিনি খুবই একাকীত্ব জীবন কাটিয়েছেন। এ সময় তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে দেখা গেছে। তাঁর অভিনয় আর দিনকাল দেখেই মনে হত তিনি এই পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বা পৃথিবীতে আর থাকতে চান না। কোথাও সাক্ষাৎকার দিলে সেখানেও বলত একদম সাদামাটা জীবন যাপনের কথা।
মৃত্যুর আগে তিনি ফেব্রুয়ারীর শুরুতে ঢাকার মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সুস্থ হলে ১১ তারিখ তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১২ খ্রিঃ বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেলে তাঁর মৃত্যু হয়। জন্ম তারিখ হিসেবে বয়স ৬০। টিভিতে শিরোনামটা দেখে কিছুক্ষণ আওয়াজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আমার। কি দেখছি আমি। পরক্ষণে বেশ কয়েকজন ফোন করে বলে তোমার প্রিয় অভিনেতা চলে গেছে। কিন্তু এখনো তাঁর মৃত্যুটা সহজভাবে নিতে পারছিনা। আল্লাহর কাছে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।