সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: রহস্যময় ডার্ক ম্যাটারের স্বচ্ছ ছবি

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটারের স্বচ্ছ ছবি



এই মহাবিশ্বে এক রহস্যময় বস্তু আছে যা দেখা যায় না। সেই অদৃশ্য বস্তুর নাম ডার্ক ম্যাটার। এই ডার্ক ম্যাটার হেলাফেলার ব্যাপার নয়। আমাদের চোখে দৃশ্যমান স্বাভাবিক বস্তু মহাবিশ্বের মাত্র ৫ শতাংশ। বাকি সবই ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি। আরও নির্দিষ্টভাবে বললে মহাবিশ্বের গঠন উপাদানের মাত্র ৫ শতাংশ স্বাভাবিক বস্তু, ২৫ শতাংশ ডার্ক ম্যাটার এবং ৭৫ শতাংশ ডার্ক এনার্জি। ডার্ক ম্যাটার আলো বা অন্য কোনো ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক বিকিরণ ঘটায় না বা ছড়িয়ে দেয় না।

সরাসরি টেলিস্কোপ দিয়েও তা দেখা যায় না। দৃশ্যমান বস্তুর ওপর অভিকর্ষগত প্রভাব থেকে এর অস্তিত্ব নির্ণয় করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি দু'দল পদার্থবিজ্ঞানী এক নতুন কৌশল অবলম্বন করে এই ডার্ক ম্যাটারের এ যাবৎকালের বৃহত্তম ছবি তুলেছেন। বলা যেতে পারে ডার্ক ম্যাটারের এমন স্বচ্ছতম ছবি এতদিন তোলা যায়নি। তারা এ ক্ষেত্রে যে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন তাতে ভূ-পৃষ্ঠের টেলিস্কোপ দিয়ে ডার্ক এনার্জির অস্তিত্ব বুঝতে পারার পথে মূল বাধাগুলো দূর হয়ে যাবে। ডার্ক ম্যাটারের মানচিত্র নির্মাণের জন্য বিজ্ঞানীরা ২০০০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এসডিএসএস জরিপের দ্বারা সংগৃহীত হাজার হাজার নীহারিকার ইমেজ উপাত্তকে কাজে লাগিয়েছেন।

তারা দূরবর্তী নীহারিকার ছবিগুলোয় সামান্য বিকৃতি বা তারতম্যের সন্ধান করেছেন। এগুলোকে বলা হয় 'মহাজাগতিক শিয়ার'। এই মহাজাগতিক শিয়ার তৈরি হয় পুরো ভূমির সুবিশাল, অদৃশ্য ডার্ক ম্যাটার কাঠামোর মাধ্যাকর্ষণগত প্রভাবের কারণে। মানচিত্র নির্মাণের জন্য বিজ্ঞানীরা নীহারিকাগুলো বিকিরিত আলো পৃথিবীতে আসার পথে ডার্ক ম্যাটারের বিশাল ঝড় অতিক্রম করার সময় কিভাবে বিকৃত হয়ে যায় তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। বিকৃতিটা মূলত হলো স্থান ও কালের। এই বিকৃতি থেকেই তারা ডার্ক ম্যাটারের জটিল মহাজাগতিক অস্তিত্ব নির্ণয় করতে পারেন, যা অন্য আর কোনোভাবে দেখতে পাওয়া সম্ভব নয়। বস্তু মানেই তার ভর ও মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আছে।

ডার্ক ম্যাটারেরও নিশ্চয়ই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আছে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ডার্ক ম্যাটারকে ঘনীভূতরূপে ধরে রাখতে চায়। কিন্তু ডার্ক এনার্জি বিকর্ষী শক্তি হিসেবে কাজ করে যার জন্য ডার্ক ম্যাটারের ঘনীভূত অবস্থা প্রাপ্তি বিলম্বিত হয় এবং সেটা একটা কদাকার বা জবরজং আকার ধারণ করে। দৃশ্যমান বস্তুর ওপর এই ডার্ক ম্যাটারের মাধ্যাকর্ষণের টান থেকে এর অস্তিত্ব যেমন নির্ণয় করা যায় তেমনি এই কিম্ভূতকিমাকার ডার্ক ম্যাটার অতিক্রম করার আলোর বিকৃতি থেকেও এটা নির্ণয় করা যায়। মানচিত্রে এই ডার্ক ম্যাটারকে দেখতে বিশাল বিশাল সাদা ও কালো অঞ্চলের একটি নেটওয়ার্কের মতো দেখায়।
হাসান ভূইয়া

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।