লন্ডনের কিংসওয়ে শহরের দক্ষিণে ওয়েস্ট মিনিস্টারে অবস্থিত বুশ হাউস ভবনটি বিবিসি'র সদর দফতর হিসেবেই অধিক সমাদৃত। অ্যাল্ডউইচ এবং দি স্ট্র্যান্ট স্ট্রিটের মাঝামাঝি এর অবস্থান। এ ভবনটির নামকরণ করা হয়েছে মূলত এর পরিকল্পনাকারী ইরভিং টি. বুশ এর নামানুসারে। আর এর নকশা করেছেন আমেরিকান স্থপতি এইচ ডবি্লউ করবেট। প্রায় ১৩ বছরের নির্মাণকাল শেষে ১৯৩৫ সালের ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে লর্ড ব্যালফারের নেতৃত্বে এটি উন্মোচন করা হয়।
Bush House |
সম্পূর্ণ ভবনটি মোট পাঁচটি ব্লকে বিভক্ত। এখানে রয়েছে একটি করে রেফারেন্স লাইব্রেরি, প্রদর্শনী লাইব্রেরি, ক্লাব ও রেস্টুরেন্ট। ভবনটির সর্বাধিক চমৎকার ও নয়নাভিরাম স্থান হলো এর প্রধান ফটক, যা প্রায় ৫ তলা উঁচু ভবনের সমান। মূলত বিশাল চারটি গম্বুজের ওপর দণ্ডায়মান দুজন ব্যক্তির প্রতিমূর্তি, আর তাদের দুজনের হাতে একসঙ্গে ধরে রাখা আলোকবর্তিকা এর সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয়, যা ইঙ্গ-মার্কিন বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ স্থাপিত। ভবনটির রয়েছে একটি ইতিহাস। ১৯৩০ সালে এর নির্মাণকাজ চলাকালে মাটির নিচ থেকে একটি মার্বেল পাথরে তৈরি মাথার প্রতিমূর্তি পাওয়া যায়, যা প্রদর্শনীর জন্য এখন কেন্দ্রীয় ব্লকে শোভা পাচ্ছে। ১৯২৯ সালে এটি সর্বাধিক ব্যয়বহুল ভবন হিসেবে স্বীকৃতি পায়_ যার মূল্য ছিল তৎকালীন এক কোটি ডলার। ১৯৪৪ সালে ঠ-১ নামক একটি উড়ন্ত বোমার আঘাতে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এর একটি প্রতিমূর্তির হাত ধ্বংস হয়ে যায়।
Bristol, Bush House, Prince Street |
পরবর্তীতে ১৯৭০ সালে ইন্ডিয়ানা মাইনস্টোন কোম্পানিতে চাকরিরত একজন কর্মকর্তা তার মেয়েকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিঙ্ দেখতে এসে বুশ হাউসের এই ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি দেখেন এবং ফিরে গিয়ে তার কোম্পানির মাধ্যমে এটি সংস্কার করান। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, জনগণের ধারণা হলো, বুশ হাউস বিবিসির সম্পত্তি অথচ তা নয়। বিবিসি এখান থেকে প্রায় ৭০ বছর ধরে তার কার্যক্রম সম্প্রচার করলেও কখনোই এর স্বত্বাধিকারী হতে পারেনি। বর্তমানে বুশ হাউস একটি জাপানি কোম্পানির কাছে ইজারা রয়েছে।
তথ্যঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৪/০৫/২০১২খ্রিঃ
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।