পূর্ণ নাম | আর্সেনাল ফুটবল ক্লাব | |||
ডাকনাম | দ্য গানার্স | |||
প্রতিষ্ঠা | ১৮৮৬ "দিয়াল স্কয়ার" নামে | |||
মাঠ | এমিরেটস্ স্টেডিয়াম হলোওয়ে-লন্ডন,ইংল্যান্ড | |||
ধারণক্ষমতা | ৬০,৪৩২ | |||
চেয়ারম্যান | ||||
ম্যানেজার | আর্সেন ওয়েঙ্গার | |||
লীগ | প্রিমিয়ার লীগ | |||
২০০৯-১০ | প্রিমিয়ার লীগ, ৩য় | |||
আর্সেনাল ফুটবল ক্লাব (আর্সেনাল, গানার্স নামে পরিচিত) একটি ইংরেজ পেশাদার ফুটবল ক্লাব। ইংরেজ ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সফল ক্লাব। আর্সেনাল মোট তের বার প্রথম বিভাগ এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা , দশ বার এফএ কাপ এবং ২০০৫-০৬ মৌসুমে লন্ডনের প্রথম ক্লাব হিসাবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এছাড়াও ইউরোপীয় ফুটবলের সেরা ক্লাবদের সংঘ জি-১৪-এর গুরুত্বপুর্ণ সদস্য।
আর্সেনালের প্রতিষ্ঠা ১৮৮৬ সালে দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের ওউলিচে। ১৯১৩ সালে হাইবারিতে স্থানান্তরিত হয়। সেখানে স্থাপিত হয় আর্সেনাল স্টেডিয়াম। এরপর ২০০৬ সালের মে মাসে লন্ডনের হলোওয়েতে, এমিরেট্স স্টেডিয়াম তাদের প্রধান কার্যালয় হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।যদিও ক্লাবটির প্রতিষ্ঠা ১৮৮৬ সালে, আর্সেনালের সাফল্যের সূচনা ১৯৩০ সালে প্রথমবারের মতো লীগ চ্যাম্পিয়ন শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দল হিসাবে আর্সেনাল যুগ্ম শিরোপা জয় করে। শেষের বিশটি বছর ছিল ক্লাবটির স্বর্ণ যুগ। এসময় তারা দ্বিতীয় বারের মতো আবার ২০০৩-০৪ মৌসুমে যুগ্ম শিরোপা জয় করে। এই মৌসুমেই তারা অপরাজিত থেকে লীগ শিরোপা জয় করে। ২০০৫-০৬ সালে তারা লন্ডনের প্রথম ক্লাব হিসাবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।প্রথাগতভাবে আর্সেনালের রঙ লাল, সাদা। তবে ইতিহাসে বেশ কয়েকবার তারা তা পরিবর্তন করেছে। একইসাথে পরিবর্তিত হয়েছে ক্লাবটির অবস্থান। বর্তমানে তারা আছে লন্ডনের হলোওয়ের এমিরেট্স স্টেডিয়ামে।আর্সেনালের রয়েছে অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী। তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দী টটেনহ্যাম হটস্পার। ইংরেজ ফুটবলে অন্যতম ধনী ক্লাব আর্সেনাল(২০০৭ সালে ৬০০মিলিয়ন পাউন্ড)। ক্লাবটির মহিলা দল আর্সেনাল এলএফসি ইংরেজ মহিলা ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাব।
ইতিহাসঃ আর্সেনালের প্রতিষ্ঠা ১৮৮৬ সালে রয়েল আর্সেনালে কর্মরত কিছু শ্রমিকের মাধ্যমে। শুরুতে ক্লাবটির নাম ছিল ডায়াল স্কয়ার। কিছুদিন পরে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রয়েল আর্সেনাল। ১৮৯১ সালে পেশাদার দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করার পর এর নাম রাখা হয় ওউলিচ আর্সেনাল। ১৮৮৩ সালে প্রথম বারের মত ফুটবল লীগে যোগ দেয় এবং প্রায় ২১ বছর পর ১৯০৪ সালে প্রথম বিভাগ দলের মর্যাদা লাভ করে। ভৌগলিক কারণে শুরু থেকেই তাদের দর্শক সংখ্যা ছিল অনেক কম। যার কারণে ১৯১০ সালের মধ্যেই তারা অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু হয়ে পড়ে।১৯১৩ সালে রেলিগেশনের কারণে আর্সেনাল দ্বিতীয় বিভাগে নেমে যায় এবং ঠিক এই সময়ে তারা হাইবারিতে আর্সেনাল স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করে সেখানে চলে আসে। একই বছরে দলটি তাদের নাম থেকে রয়েল শব্দটি বাদ দিয়ে দেয়। ১৯১৯ সালে পঞ্চম স্থানে থেকে বছর শেষ করার পর তারা টটেনহ্যাম হটস্পারের পরিবর্তে প্রথম বিভাগে ফিরে আসে।
১৯৮৮ সালের আর্সেনাল দল
১৯২৫ সালে আর্সেনালের ম্যানেজার হিসাবে যোগ দেন হার্বার্ট চ্যাপম্যান। তার হাত ধরেই আর্সেনাল প্রথম বারের মতো ১৯২৩-২৪ এবং ১৯২৪-২৫ সালে লীগ শিরোপা জিতে। তিনি দলে টেনে আনেন অ্যালেক্স জেম্স এবং ক্লিফ ব্যাস্টিন সহ আরো নামী দামী খেলোয়াড়। ১৯৩০-১৯৩৮ পর্যন্ত আর্সেনাল পাঁচবার প্রথম বিভাগে শিরোপা, দুইবার এফএ কাপ শিরোপা জিতে নেয়। যদিও চ্যপম্যান দলের এই স্বর্ণযুগ পুরোটা উপভোগ করে যেতে পারেননি। ১৯৩৪ সালে এই কিংবদন্তি ম্যানেজার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। চ্যপম্যান ১৯৩২ সালে লন্ডনের একটি স্থানীয় পাতাল স্টেশনের নাম "গিলেস্পি রোড" পরিবর্তন করে "আর্সেনাল" রাখার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। কোন ফুটবল ক্লাবের নামে রাস্তার নাম রাখার ইতিহাস সেখান থেকেই শুরু।পরবর্তীতে নতুন ম্যানেজার টম হুইটেকারের সময়ে আর্সেনাল ১৯৪৭-৪৮ ও ১৯৫২-৫৩ সালে লীগ শিরোপা এবং ১৯৪৯-৫০ সালে এফএ কাপ শিরোপা জিতে। এই সময় ক্লাবটি তারকাশূন্য হতে শুরু করে। সাথে সাথে তারা নতুন প্রতিভাবান খেলোয়াড় দলে টেনে আনতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে ১৯৫০-১৯৬০ সাল পর্যন্ত ক্লাবটি গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা ঘরে তুলতে পানেনি। স্বয়ং ইংল্যান্ড জাতীয় দলের অধিনায়ক বিলি রাইট আর্সেনালের ম্যানেজারের (১৯৬২-১৯৬৬) দায়িত্ব পালনের সময়ও আর্সেনাল গুরুত্বপুর্ণ কোন সাফল্য পায়নি।আর্সেনালের দ্বিতীয় সাফল্যের অধ্যায় শুরু হয় যখন ক্লাব কর্তৃপক্ষ ১৯৬৬ সালে বারটাই মিকে ম্যানেজারের দায়িত্ব দেয়। ১৯৭০ সালে তারা প্রথম বারের মত ইউরোপীয় শিরোপা জয় করে। ১৯৭০-৭১ সালে তারা একই সাথে জিতে নেয় লীগ এবং এফএ কাপ শিরোপা। কিন্তু এই সময় অনেক খেলোয়াড় দল ত্যাগ করে। যার কারণে আর্সেনাল ১৯৭২-৭৩ সালে লীগে রানার আপ হয়। (১৯৭২-৭৩), (১৯৭৭-৭৮), (১৯৭৯-৮০) সালে এফএ কাপ ফাইনালে হেরে যায়। এই সময়টাতে ক্লাবটির একমাত্র সাফল্য ছিল ১৯৭৭-৭৮ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৩-২ গোল ব্যবধানে পরাজিত করে এফএ কাপ জেতা।ক্লাবটির তৃতীয় সাফল্যের অধ্যায় শুরু হয় যখন ১৯৮৬ সালে ক্লাবটি সাবেক খেলোয়াড় জর্জ গ্রাহাম ক্লাবের দায়িত্ব নেন। তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম বছরেই আর্সেনাল লীগ কাপ শিরোপা জিতে নেয়। সাথে সাথে ১৯৮৮-৮৯ সালে শেষ মিনিটের গোলে লিভারপুলকে পরাজিত করে লীগ শিরোপা, ১৯৯০-৯১ সালে লীগ শিরোপা, ১৯৯২-৯৩ সালে একত্রে লীগ ও এফএ কাপ শিরোপা ও দ্বিতীয় ইউরোপীয় শিরোপা জিতে নেয়। ১৯৯৩-৯৪ সালে একজন খেলোয়াড়কে দলে নেয়ার জন্য তিনি একজন দালালের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন যা পরবর্তীতে ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ে। ১৯৯৫ সালে তিনি চাকুরিচ্যুত হন। তার বদলী হিসাবে আসেন ব্রুস রায়চ। ক্লাব কর্তৃপক্ষের সাথে মন কষাকষির কারণে এক মৌসুম পরেই তিনি আর্সেনাল ত্যাগ করেন।
২০০৪ সালে লীগ শিরোপা পাবার পর আর্সেনাল ক্লাব ও সমর্থকদের বাস প্যারেড
এরপর ১৯৯৬ সালে আর্সেনালের দায়িত্ব নেন ফরাসি আর্সেন উইঙ্গার। উইঙ্গার এসেই দলের কৌশল এবং প্রশিক্ষণে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন। সাথে সাথে তিনি দলে আনেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড় যারা দলের আন্যান্য ইংরেজ খেলোয়াড়দের সাথে পাল্লা দিতে সমর্থ হয়। আর্সেনাল ১৯৯৭-৯৮ ও ২০০১-০২ সালে আবারো যুগল শিরোপা ঘরে তুলে আনে। ১৯৯৯-০০ সালে তারা উয়েফা কাপের ফাইনালে পরাজিত হয়। এবং সেই প্রতিক্ষীত শিরোপা তারা অর্জন করে ২০০২-০৩ সালে। ২০০৩-০৪ সালে তারা অপরাজিত থেকে লীগ শিরোপা অর্জন করে। এই কারণে ক্লাবটির নতুন ডাক নাম হয় দ্য ইনভিন্সিব্ল। টানা ৪৯ ম্যাচে অপরাজিত থেকে ক্লাবটি জাতীয় রেকর্ড স্থাপন করে।উইঙ্গারের দশ বছরে আর্সেনাল আটটি লীগ শেষ করে প্রথম অথবা দ্বিতীয় হয়ে। ১৯৯৩ সালে প্রিমিয়ার লীগ শুরু হবার পর শিরোপা জয়ী ৪টি দলের মধ্যে আর্সেনাল একটি। বাকি দল গুলো হল (চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স) ২০০৫-০৬ সালে আর্সেনাল লন্ডনের প্রথম ক্লাব হিসাবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালের উঠে। যদিও বার্সেলোনার কাছে ৩-২ এ পরাজিত হয়।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া।
যারা এই পোস্টটি পড়বেন তারা মতামত জানিয়ে লিখতে পারেন । পরবর্তিতে আপনাদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে এই বিভাগটিকে আরো সমৃদ্ধ , তথ্যবহুল এবং আবেদনময়ী করার চেষ্টা করব।
উত্তরমুছুনসুন্দর সুন্দর।
মুছুন