ময়লা কাপড়-চোপড় এবং শরীর থেকে দুর্গন্ধ দূর করতে মেসোপটেমিয়ান সভ্যতার মানুষরা প্রথম শরীর ও কাপড় পরিষ্কারের জন্য বিশেষ একটি দ্রব্য আবিষ্কার করে। তারা পশুর চর্বি কাঠের সঙ্গে লাগিয়ে অথবা চর্বির সারাংশের সঙ্গে পানি মিশিয়ে কাপড় এবং শরীরের ময়লা পরিষ্কার করা শুরু করে। ধারণা করা হয়, যিশুখ্রিস্টের জন্মের দুই হাজার আটশ' বছর আগে মানুষ প্রথম কাদার সিলিন্ডারে সাবান তৈরি করে। তবে গবেষকদের ধারণা, পঞ্চদশ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রাচীন মিসরীয়দের অনেকেই ক্ষারধর্মী সাবান ব্যবহার করত।
মনে করা হয়, মেসোপটেমিয়ানরা প্রতিবেশী মিসরীয়দের কাছ থেকেই প্রথম সাবান ব্যবহারের পদ্ধতি শিখে নেয়। তবে রোম সভ্যতায় সাবানের ব্যবহার শুরু হয় বহু পরে। মজার ব্যাপার হলো, প্রাচীন রোমানরা সম্রাটের হুকুমে সবাই নির্দিষ্ট একটি স্থানে মিলেমিশে গোসল করত। কিন্তু গোসলের সময় সাবান ব্যবহার ছিল একেবারেই নিষিদ্ধ! কিছু নারী মাথার চুল পরিষ্কারের জন্য সাবান ব্যবহার শুরু করে যিশুখ্রিস্টের জন্মের পঞ্চাশ বছর পর থেকে। তবে মানুষ যত সভ্য হতে থাকে, নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদে ততই আবিষ্কৃত হতে থাকে নতুন প্রযুক্তি, নতুন পণ্য, কাঁচামাল ইত্যাদি। আকর্ষণীয় মোড়কে সুগন্ধযুক্ত সাবান বাজারে আসে মূলত উনিশ শতকের মাঝামাঝি। সাবান তৈরিতে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। বিশ্বজুড়ে এখন ঠাণ্ডা ও গরম উভয় পদ্ধতিতে সাবান তৈরি করা হয়। তবে হাতে তৈরি ঠাণ্ডা পদ্ধতিই বেশি জনপ্রিয়। হাত-মুখ ধোয়া থেকে শুরু করে গোসলের ক্ষেত্রে এ বস্তুটি ছাড়া মানুষ জীবনযাপন কল্পনাই করতে পারে না।
সাইফুল ইসলাম
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।