গোল-লাইন প্রযুক্তি নিয়ে আলোচিত সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ফিফা৷ এছাড়া মেয়েরা হিজাব পরেও ফুটবল খেলার জন্য মাঠে নামতে পারবে – এমন সিদ্ধান্ত ফিফা’র৷ আগামী ডিসেম্বর মাসে জাপানে অনুষ্ঠিতব্য ক্লাব বিশ্বকাপ ফুটবল আসরেই ফিফা চালু করবে গোল-লাইন প্রযুক্তির প্রয়োগ৷ এরপর ২০১৩ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিতব্য কনফেডারেশন্স কাপ এবং ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল আসরেও এই প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ফিফা৷
বৃহস্পতিবার ফিফা'র প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটারের সভাপতিত্বে ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড - আইএফএবি'র বৈঠকে গোল-লাইন প্রযুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়৷ বৈঠক শেষে ব্লাটার বলেন, ‘‘আজকের বৈঠকে অনুমোদিত হক-আই এবং গোল-রেফ ব্যবস্থা কার্যকর করা হলে গোলের ব্যাপারে ৯৯ শতাংশ নিশ্চিত সিদ্ধান্ত প্রদান সম্ভব হবে৷ এর ফলে গত বিশ্বকাপে বিতর্কিত গোল নিয়ে ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্তের ফলে ইংল্যান্ডকে যেভাবে বিদায় নিতে হয়, তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না৷'' তাঁর ভাষায়, ‘‘জীবনে শতভাগ নিশ্চয়তা কোথাও নেই৷ অতীতে আমাদের সামনে সম্পূর্ণ নির্ভুল কোন পদ্ধতি ছিল না৷ তবে আমাকে বলতেই হবে, ধন্যবাদ, ল্যাম্প্যার্ড৷'' গত বিশ্বকাপে জার্মানির বিরুদ্ধে ইংলিশ দলের মধ্যমাঠের খেলোয়াড় ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্প্যার্ডের একটি সুস্পষ্ট গোল নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়৷ ল্যাম্পার্ড'এর সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই এতোদিনে গোল-লাইন প্রযুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিল ফিফা৷ তাই ল্যাম্প্যার্ড'কে ধন্যবাদ দেন ব্লাটার৷
প্রসঙ্গত, ‘হক-আই' হচ্ছে একটি ব্রিটিশ ক্যামেরা ভিত্তিক ব্যবস্থা যা ইতিমধ্যে টেনিস এবং ক্রিকেট খেলায় ব্যবহার করা হচ্ছে৷ আর ‘গোল-রেফ' হলো ড্যানিশ-জার্মান প্রকল্প৷ এক্ষেত্রে বিশেষভাবে বিতর্কিত বলের গতিপথ নির্ধারণে গোলপোস্টের সাথে চৌম্বকীয় সেন্সর ব্যবহার করা হয়৷
ফিফার এই সিদ্ধান্তের ফলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আগামী মৌসুমের মধ্যেই স্টেডিয়ামগুলোতে গোল-লাইন প্রযুক্তি চালু করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে খবরে প্রকাশ৷ উল্লেখ্য, একেকটি স্টেডিয়ামে এই গোল-লাইন প্রযুক্তি চালু করতে খরচ পড়বে প্রায় আড়াই লাখ ডলার৷ এদিকে, আইএফএবি'র গতকালের বৈঠকে ফুটবল মাঠে নারীদের মাথায় বিশেষ রুমাল পরার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ ফিফার বড়মাপের ফুটবল আসরে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ২০০৭ সালে নারী ফুটবলারদের হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল৷ উত্তর আয়ারল্যান্ড ফুটবল সংস্থার প্রধান নির্বাহী প্যাট্রিক নেলসন বলেন, ফিফার এসব সিদ্ধান্ত ফুটবল জগতে সুদূর প্রসারী এবং অনুস্মরণীয় হয়ে থাকবে৷
এএইচ / এসবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।