পাশ্চাত্যের
তুলনায় এশীয় দেশগুলোর খাবারের তালিকায় গোশতের ব্যবহার কম। আমাদের দেশে দৈনিক
খাদ্যতালিকায় ৭০-৮০ শতাংশ শস্যজাতীয় খাদ্য থাকে। বাকি অংশ থাকে মাছ বা গোশত। এ
দেশে মধ্যবিত্ত মুসলিম সম্প্রদায় কোরবানির ঈদে যতখানি গোশত খেয়ে থাকেন, বছরের অন্য সময়ে ততখানি খাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার কোনো উৎসব
পার্বণেও গোশত বেশি খাওয়া হয়।
গরু, মহিষ ও খাসির গোশত দেহে
অধিক শক্তি সরবরাহ করে থাকে। গোশতের চর্বি দেহে গ্লাইকোজেন রূপে জমা হয়।
গোশত
একটি দামি, পুষ্টিকর
ও উপাদেয় খাবার হলেও
এর সপক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা রয়েছে। যদি দেহে উৎকৃষ্ট শ্রেণীর প্রোটিন প্রয়োজন হয়
তা হলে গোশতই উত্তম। কারণ,
এতে
প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। গোশতের প্রোটিন শস্যজাতীয় প্রোটিনের চেয়ে অনেক
উন্নত। এতে নিকোটিনিক অ্যাসিড,
লৌহ, ফসফরাস, ভিটামিন এ এবং বি রয়েছে। গোশতের
চর্বি দেহে ভিটামিন এ সরবরাহ করে। এটি সবজির লৌহের চেয়ে অনেক উন্নত। লৌহের অভাবে দেহে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এ
জন্য বাড়ন্ত শিশু-কিশোর-কিশোরীদের
খাদ্যতালিকায় গোশত এবং কলিজা রাখা একান্ত প্রয়োজন। কলিজার মধ্যে প্রোটিন আছে ১৭-২০ শতাংশ। আরও আছে ভিটামিন এ, রাইবোফ্লাভিন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি১২ ও ফসফরাস। গরু ও খাসির গোশতের চর্বি
সম্পৃক্ত। এ কারণে এই চর্বি দেহ সংরক্ষণ করে। মগজে রয়েছে ১০০ শতাংশ কোলেস্টরল।
কথায়
আছে, গোশতে
গোশত বৃদ্ধি। সুতরাং যাদের ওজন বেশি, তাঁরা অবশ্যই গোশত পরিহার করে চলবেন। আবার ওজন বাড়াতে হলে খাদ্যতালিকায় গোশত
রাখলে সুফল পাওয়া যাবে।
দেহের পোড়া ঘা ও ক্ষত সারানোর জন্য জিঙ্ক প্রয়োজন। এই জিঙ্ক আসে গোশত থেকে। যারা খুব কম
ক্যালরিতে খাদ্য গ্রহণ করে এবং যারা নিরামিষভোজী, তাদের দেহে জিঙ্কের অভাব হয়। জিঙ্ক মানুষের শরীর থেকে ঘামের
মাধ্যমে বের হয়ে
যায়। খেলোয়াড়দের প্রচুর ঘাম হয় বলে তাদের জিঙ্কের অভাব হয়। যদি তাদের খাবারে প্রতিদিনই পরিমিত
গোশত থাকে, তা হলে
ভালো হয়।
পেট ফাঁপা ও কিডনিতে পাথর হলে গোশত একেবারে বাদ দিতে হয়। বাত হলে মগজ, গুর্দা, কলিজা, সংরক্ষণ করা গোশত এবং স্যুপ নিষেধ। তবে সীমিত পরিমাণে গোশত খেলে ক্ষতি নেই। কিডনির অসুখ, হূৎপিণ্ডের ব্যাধি ইত্যাদিতে গোশত যত কম খাওয়া যায় তত ভালো। লিভার, গলব্লাডার ও প্যানথিয়াসের অসুখে প্রাণিজ চর্বি বাদ দেওয়া উচিত।
পেট ফাঁপা ও কিডনিতে পাথর হলে গোশত একেবারে বাদ দিতে হয়। বাত হলে মগজ, গুর্দা, কলিজা, সংরক্ষণ করা গোশত এবং স্যুপ নিষেধ। তবে সীমিত পরিমাণে গোশত খেলে ক্ষতি নেই। কিডনির অসুখ, হূৎপিণ্ডের ব্যাধি ইত্যাদিতে গোশত যত কম খাওয়া যায় তত ভালো। লিভার, গলব্লাডার ও প্যানথিয়াসের অসুখে প্রাণিজ চর্বি বাদ দেওয়া উচিত।
এক জরিপে দেখা যায়, গোশত বেশি বেশি খাওয়ার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে হূদেরাগ, ক্যানসারসহ বিভিন্ন ধরনের অসুখের আধিক্য দেখা গেছে। এ কারণে প্রাণিজ আমিষ যত কম খাওয়া যায়, ততই মঙ্গল। প্রতিদিন ৯০-১০০ গ্রামের বেশি প্রাণিজ আমিষ না খাওয়াই ভালো। প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল, শিম, বাদাম, মটরশুঁটি ইত্যাদি আমিষের বিকল্প হতে পারে।
গোশত সংরক্ষণঃ
বাড়িতে
গোশত সংরক্ষণের জন্য রেফ্রিজারেটরই উত্তম। কাঁচা গোশত পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে ঠান্ডা
বাতাসযুক্ত স্থানে তাক অথবা হুকোর সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা যেতে পারে। কোরবানির রান্না করা গোশত
সংরক্ষণ করতে চাইলে বড় বড় টুকরা করতে হবে। তারপর হালকা মসলা দিয়ে আলাদা পানি না দিয়ে গোশত সেদ্ধ করতে হবে।
গরমের দিনে প্রতিদিন, শীতের দিনে এক দিন পর পর
এবং রেফ্রিজারেটরে রাখলে সাত দিন পর এ গোশত জ্বাল দিতে হবে। এভাবে দুই মাস পর্যন্ত কোরবানির রান্না
করা গোশত রাখা যেতে
পারে।
অস্বাস্থ্যকর
উপায়ে রান্না করা গোশত থেকে কৃমি হয়। গরু ও মহিষের অর্ধসেদ্ধ গোশত থেকে ফিতা কৃমির
সৃষ্টি হয়। এর ফলে পেটে ব্যথা,
পেট
খারাপ, মাথা
ধরা, খিঁচুনি
ও জ্বর হতে পারে। কাঁচা গোশতে সহজেই ব্যাকটেরিয়া জন্মে। ফ্রিজে দ্রুত সংরক্ষণ করলে এটি
ধ্বংস হয়ে যায়। আবার ১৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় রান্না করলে খাদ্যবিষ উৎপাদনকারী ব্যাকটেরিয়া মরে
যায়। গোশতের প্রোটিনকে
ভাঙার জন্য এনজাইম প্রয়োজন হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পেপিইন নামক এনজাইম ব্যবহূত হয়। এটা পাওয়া যায় কাঁচা পেঁপে
থেকে। আমাদের দেশে কাঁচা পেঁপে,
ভিনেগার, জায়ফল, সুপারি এগুলো দিয়ে গোশত
নরম করা হয়। সবশেষে বলা যায়,
গোশত
অস্বাস্থ্যকর কোনো
খাবার নয়। শরীরের জন্য এটি একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য সপ্তাহে এক দিন
অথবা সপ্তাহে দুই দিন গোশত খাওয়া যেতে পারে। কোরবানির ঈদে নিজ নিজ স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেই গোশত খাওয়া
উচিত, যাতে অসুস্থ হয়ে ঈদের আনন্দ
ম্লান হয়ে না যায়।
আখতারুন নাহার আলো
বিভাগীয়
প্রধান, পুষ্টি
বিভাগ,
বারডেম
জেনারেল হাসপাতাল
সূত্রঃ
প্রথম আলো তারিখঃ ১৭-১০-২০১২ ইং।
magam EID MOBAROK ..EIDER DOWAT ROILO.....AMAR BARITA.....
উত্তরমুছুনKORBANI GOSTU BALO KORE KAYEN
PILZ HELP PDF FILE BANATE CAI PILZ PILZ PILZ PILZ DOC TO PDF BANGLA LAKHA PILZ PILZ HELP ME
আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদের পরে যোগাযোগ হবে আবার। নিচের লিংক দেখুন।
মুছুনhttp://kamrulcox.blogspot.com/2011/07/blog-post_02.html
ভাল..............
উত্তরমুছুন