উন্নত
বিশ্বে প্রায় ৮২ শতাংশ বয়স্ক নারী-পুরুষ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সম্পূরক বা বড়ি
খেয়ে থাকেন। কিন্তু ভিটামিন বেশি খেলে কি কোনো ক্ষতির ঝুঁকি থাকে? সত্যি বলতে কি, প্রায় সব ভিটামিনেরই একটি
টক্সিক মাত্রা আছে। এই মাত্রার ওপর ভিটামিন সেবন অবশ্যই ক্ষতিকর। যদিও দুর্ঘটনা
ছাড়া এত বেশি মাত্রার ভিটামিন সেবন করা সাধারণত হয়ে ওঠে না। তার পরও শিশুদের মধ্যে
দুর্ঘটনাবশত অতিরিক্ত ভিটামিন খেয়ে ফেলাটা একেবারে বিরল নয়। তাই সব ধরনের ওষুধ
অবশ্যই শিশুদের নাগালের বাইরে থাকতে হবে। এ ছাড়া বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের
স্মৃতিভ্রম বা মানসিক রোগ আছে,
তাঁরাও
অনেক সময় ভুল করে অনেক বেশি মাত্রায় ভিটামিন বড়ি খেয়ে ফেলতে পারেন। দীর্ঘদিন ধরে
অকারণে উচ্চমাত্রার ভিটামিন খাওয়া থেকেও বিপদ হতে পারে।
ক্যালসিয়াম: অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম খেলে রক্তে এর মাত্রা বেড়ে গিয়ে
কোষ্ঠকাঠিন্য, কিডনিতে পাথরসহ
আরও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি একসঙ্গে
উচ্চমাত্রায় সেবন করলে অনেক সময় এ সমস্যা দেখা দেয়।
ভিটামিন এ: উচ্চমাত্রার ভিটামিন এ সেবন গর্ভবতী নারীদের
জন্য বিপজ্জনক। কেননা টক্সিক মাত্রায় ভিটামিন এ অনাগত শিশুর নানা ধরনের জন্মগত
ত্রুটির কারণ হতে পারে। এ ছাড়া উচ্চমাত্রার ভিটামিন এ যকৃৎ, হাড় ও ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। দুর্ঘটনাবশত হঠাৎ
বেশি ভিটামিন এ খেয়ে ফেললে বমি, মাথাব্যথা, ত্বকের সমস্যা হতে পারে।
ভিটামিন সি: এক গ্রামের বেশি ভিটামিন সি একসঙ্গে খেয়ে ফেললে
ডায়রিয়া হতে পারে। শিশুরা চুষে খাবার ভিটামিন সি লজেন্স বেশি খেয়ে বিপদ ঘটাতে পারে।
লৌহ: আয়রন বা লৌহজাতীয় বড়ি গ্যাস্ট্রিকের মাত্রা বাড়িয়ে
দেয়, কোষ্ঠকাঠিন্য করতে
পারে। থ্যালাসেমিয়া ও জন্মগত হিমোগ্লোবিন ত্রুটি আছে, এমন রোগী আয়রন খেলে যকৃৎ, মস্তিষ্ক ও বিভিন্ন গ্রন্থিতে অতিরিক্ত আয়রন জমে
অকার্যকারিতা দেখা দিতে পারে। এদের আয়রন বড়ি খাওয়া নিষেধ। তা ছাড়া বেশি মাত্রায়
আয়রন যেকোনো মানুষের পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা করতে পারে। শিশুরা বেশি আয়রন খেয়ে
ফেললে বিষক্রিয়া পর্যন্ত হতে পারে।
জিংক: মাল্টি ভিটামিন বড়িতে জিংক উপাদান থাকে। জিংক একটি
প্রয়োজনীয় ও উপকারী উপাদান। কিন্তু অতিরিক্ত জিংক দেহে স্বাভাবিক লৌহ ও কপারের
শোষণ কমিয়ে দিয়ে রক্তশূন্যতার সৃষ্টি করতে পারে।
ভিটামিন বি: ভিটামিন বি কমপ্লেক্স স্নায়ু ভালো রাখে বলে ধারণা করা
হয়। কিন্তু অতিরিক্ত ভিটামিন বি৬ নিজেই স্নায়ুর ক্ষতি করতে সক্ষম।
ভিটামিন ডি: মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন ডি, বিশেষ করে কোলেক্যালসিফেরল রক্তে ক্যালসিয়ামের
মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
ফ্লোরাইড: অনেক সময় পানিতে বা টুথপেস্টে অতিরিক্ত ফ্লুরাইড যোগ
করা হয়। ফ্লুরাইড দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় হলেও অতিরিক্ত ফ্লুরাইড
দাঁতের এনামেলের ক্ষয় করে ও দাঁতকে হলুদ করে। সূত্র: এবিসি হেলথ।
এ সম্পর্কে আরো পড়ুনঃ স্বাস্থ্য
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।