শীতের এ সময়টাতে বক্ষ্যব্যাধি
রোগীদের ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হয়। বিশেষ করে যাদের অ্যাজমা বা হাঁপানি
রয়েছে তাদেরকে হতে হয় অতিযত্নবান। শুধু ডাক্তারের ওপর নির্ভর করলেই হবে না
নিজেদেরকেও কিছু নিয়ম কানুন পালন করতে হবে। তাহলেই অ্যাজমা বা হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে
রাখা যাবে।
অ্যাজমা কমানোর কিছু পরামর্শ
দেওয়া হলো
১. ধূমপান করবেন না। ধূমপায়ী
ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলুন। ২. শয়নকক্ষে খুব বেশি মালামাল রাখবেন না। ৩. ঘরের সম্ভাব্য
সব কিছু ঢেকে রাখবেন, যাতে
ধুলাবালি কম উড়ে। ৪. টিভি, মশারি
স্ট্যান্ড, সিলিং, পাখার উপর জমে থাকা ধুলোবালি সপ্তাহে একবার অন্য
কাউকে দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। ৫. শোকেস বা বুক সেলফে রাখা পুরনো খাতা, ফাইল, বইপত্র অন্য কাউকে দিয়ে ঝেড়ে নিন। ৬। বাস, মোটর গাড়ি বা যানবাহনের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকবেন। ৭। উগ্র সুগন্ধি ব্যবহার
করবেন না। তীব্র দুর্গন্ধ, ঝাঁজালো
গন্ধ থেকে দূরে থাকুন। ৮। বাসায় হাঁস-মুরগি, বিড়াল, কুকুর, পোষাপ্রাণী যেন না থাকে এবং এগুলোর সঙ্গে
মেলামেশা করবেন না। ৯। বাড়িতে ফুলের গাছ লাগাবেন না। ১০. ঘাসের ওপর বসে থাকা
পরিহার করুন। নিজে ঘাস বা গাছ কাটবেন না। ১১. শীতে গরম পানি দিয়ে গোসল করবেন এবং
মাপলার ব্যবহার করবেন। ১২. শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন। জোরে শ্বাস টানুন, প্রায় ১৫ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখুন। দুই ঠোঁট শীষ
দেওয়ার ভঙিতে আনুন এবং ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে শ্বাস ফেলুন প্রতিদিন সকাল ও বিকালে ১০ মিনিট
করে মুক্ত পরিবেশে। ১৩. সর্বদা ভয় ও চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং কখনো
হতাশাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়বেন না। ১৪. ছোট বাচ্চারা লোশম পুতুল নিয়ে খেলা করবে না। ১৫.
ঘর ঝাড়ু দেবেন না। ঘর ঝাড়ু দিতে হলে মাস্ক, তোয়ালে বা গামছা দিয়ে নাক বেঁধে নেবেন। ১৬. কাশি শক্ত হলে চিকিৎসকের
পরামর্শমতো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাবেন। ১৭. ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি/পানীয় কম খাবেন।
হালকা গরম পানি পান করবেন। ১৮. Aerosol বা মশার কয়েল বা Insecticide ঘরে ব্যবহার করবেন না। ১৯. বিছানার চাদর বা বালিশের কভার পাঁচ দিন পর পর
ধুয়ে ব্যবহার করবেন। ২০. মশারি সপ্তাহে একবার ধুঁয়ে ব্যবহার করবেন। ২১. যদি কোনো
খাবারে সমস্যা হয়, যেমন- গরুর
মাংস, ইলিশ মাছ, চিংড়ি, হাঁসের ডিম, বেগুন, কচু, পাকা কলা, আনারস, নারিকেল ইত্যাদি কম খাবেন/খাবেন না। ২২. সর্বদা
ধুলাবালি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। ২৩. অ্যালার্জি ও অ্যাজমা কোনো কঠিন রোগ নয়, একটু মনযোগী হলেই এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে সম্পূর্ণ
সুস্থ থাকা সম্ভব। ২৪. ডাক্তারের দেওয়া সব নিয়ম/ পরামর্শ/ ব্যবস্থাপত্র যথাসম্ভব
মেনে চলুন। ২৫. শীতকালে অ্যাজমা রোগীদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
অধ্যাপক ডা. একেএম
মোস্তফা হোসেন
বক্ষ্যব্যাধি বিশেষজ্ঞ,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।