শিশুদেরও রক্তশূন্যতা হতে পারে। এমনকি নবজাতক শিশুরও।
নবজাতকদের রক্তশূন্যতার
মূল কারণ ঠিকমতো বুকের দুধ না খাওয়ানো। তারপর সঠিক বয়সে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার না দেওয়া
হলেও রক্তশূন্যতা হতে পারে। এ ছাড়া নানা ধরনের রোগ ও অপুষ্টির জন্য রক্তশূন্যতা হয় শিশুদের। শিশুর রক্তশূন্যতা
প্রতিরোধে কিছু বিষয় অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে। জন্মের পর শালদুধসহ প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
মায়ের বুকের দুধে
যে পরিমাণ লৌহ ও অন্যান্য খনিজ আছে,
তা
শিশুর রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে
যথেষ্ট।
এ সময় তাই অন্য কিছুরই দরকার হয় না।
—গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে মায়েদের অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাবার, বিশেষ করে লৌহসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন: শাকসবজি—কচুশাক, ডাঁটাশাক, লালশাক, ফুলকপির ডাঁটা, শিমের বিচি, প্রাণীজজাতীয় খাবার—কলিজা, মাংস, ডিমের কুসুম। ঝোলা গুড় ও খেজুরেও প্রচুর পরিমাণ লৌহ রয়েছে। তবে কেবল লৌহ বা আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেলেই চলবে না, পরিপাকতন্ত্রে লৌহ শোষণের জন্য দরকার পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। তাই এর সঙ্গে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার হলো পেয়ারা, আমলকী, লেবু, টমেটো ইত্যাদি। গর্ভকালীন অবস্থায় ও স্তন্যদানকালে প্রয়োজনে আয়রন বড়িও খাওয়া যায়।
—শিশুর বয়স ছয় মাস হওয়ার পর কেবল বুকের দুধে আর পুষ্টিচাহিদা মিটবে না। তাই বুকের দুধের পাশাপাশি একে একে শিশুকে চাল-ডাল মিশ্রিত খিচুড়ি, তার সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সবজি, ফলের রস, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদিও দিতে হবে। এ সময় সুষম খাদ্য না খেলে অপুষ্টির আশঙ্কা খুব বেশি।
—শিশুদের রক্তশূন্যতার একটি বড় কারণ হলো কৃমি সংক্রমণ। তাই শিশুকে খাওয়ানোর আগে-পরে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। শিশুর মল পরিষ্কার করার পর, ডায়াপার পরিবর্তনের পর পরিচর্যাকারীর সাবান দিয়ে হাত ধুবেন, শিশু ও পরিচর্যাকারীর স্যান্ডেল ব্যবহার করা, নিয়মিত নখ কেটে দেওয়া ইত্যাদি নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ব্যবহার করাটা জরুরি। রান্না ও ধোয়ার কাজে টিউবওয়েলের পানি বা বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে। তিন মাস অন্তর দুই বছরের অধিক বয়সী শিশুকে কৃমিনাশক বড়ি খাওয়ানো উচিত।
শিশুস্বাস্থ্য
বিভাগ,
চট্টগ্রাম
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।