সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: তারুণ্য ধরে রাখবে বিস্ময়কর উদ্ভিদ?

তারুণ্য ধরে রাখবে বিস্ময়কর উদ্ভিদ?



জাপানের ওকিনাওয়ার নিশিহারা অঞ্চলে রয়েছে শিনকিচি তাওয়ান্দার একটি গবেষণাগার। সেখানে তিনি একটি পাত্রে ঢেলে দিলেন ক্রান্তীয় একধরনের গাছের নির্যাস থেকে তৈরি স্বচ্ছ হলুদাভ বাদামি তরল। তা থেকে ছড়িয়ে পড়ল মিষ্টি সুবাস। তাঁর বিশ্বাস, জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের দীর্ঘজীবনের রহস্য হয়তো এই নির্যাসেই লুকিয়ে আছে। 


ওকিনাওয়া রিউকিউস বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিদ্যার অধ্যাপক তাওয়ান্দা দাবি করেন, স্থানীয় গেতোউদ্ভিদ থেকে সংগৃহীত ওই নির্যাস সেবনে গড় আয়ু প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ বৃদ্ধি পেতে পারে। বিভিন্ন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এ রকমই ইঙ্গিত মিলেছে। ওকিনাওয়ার মানুষের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ গড় আয়ু দেখা যাচ্ছে। আর স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী খাদ্যাভ্যাসের মধ্যেই এ রহস্যের কারণ নিহিত থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। গেতো গাছে রয়েছে বড় বড় সবুজ পাতা। আদাজাতীয় উদ্ভিদ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত আলফিনিয়া জেরামবেট প্রজাতির ওই রহস্যময় বুনো গাছ নিয়ে গবেষণা করছেন ২০ বছর ধরে তাওয়ান্দা। ইতিমধ্যে তিনি সেই পরিশ্রমের ফলও পেতে শুরু করেছেন! একধরনের পোকাকে দৈনিক গেতো খাইয়ে তাদের গড় আয়ু ২২ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি করতে সমর্থ হয়েছেন। 

ওকিনাওয়ার জঙ্গলে এখনো বিপুল পরিমাণ গেতো জন্মায়। এটি স্থানীয় লোকজনের খাদ্যতালিকায় রয়েছে শত শত বছর ধরে। তারা গাছটির অদ্ভুত ক্ষমতা সম্পর্কে জানত না, কেবল জানত এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং মানুষকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে এবং বাড়তি শক্তি জোগায়। এখনো সেখানকার শীতকালীন খাবারে গেতো পাতার ঘন লেই ব্যবহার করা হয় প্রচুর পরিমাণে। এতে রয়েছে একধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা আঙুরেও পাওয়া যায়। অবশ্য ওকিনাওয়ার শাকসবজি ও মাছের মতো সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী খাবারে পরিবর্তনও আসছে। পশ্চিমা প্রভাবে বিভিন্ন ফাস্টফুড ও বিদেশি খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে নতুন প্রজন্ম। ওকিনাওয়ার নারীদের গড় আয়ু ৮৭ বছর। তবে পুরুষের ক্ষেত্রে এই আয়ু ৭৯ বছর চার মাসে সীমিত। তাওয়াদা বলেন, আজকাল লোকে ফাস্টফুড বেশি খায়। তাদের মধ্যে স্থূলতা ও অন্যান্য অসুখ-বিসুখ বাড়ছে। কমে যাচ্ছে গড় জীবনকাল। এখন তাই সময় এসেছে প্রথাগত খাদ্যাভ্যাসের প্রতি মনযোগী হওয়ার। গেতো এখন বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রী তৈরিতেও ব্যবহূত হচ্ছে। এটির বিস্ময়কর ক্ষমতা সম্পর্কে হয়তো শিগগিরই আরও জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। তখন বাণিজ্যিকভাবে উদ্ভিদটির উৎপাদন বাড়বেএমনটা নিশ্চিত। আর তাতে দ্বীপটির অর্থনীতিও চাঙা হবে বলে স্বপ্ন দেখেন তাওয়ান্দা। এএফপি।

সূত্রঃ প্রথম আলো, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।