অ্যালার্জির কারণে অনেকেরই
নাভিশ্বাস হতে হয়। হাঁচি-কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া থেকে শুরু
করে খাদ্য ও ওষুধের জন্য মারাত্মক প্রতিক্রিয়া, শ্বাসকষ্ট বা ত্বকে
দানা বা চাকা হতে পারে অ্যালার্জির কারণে। এমনকি কখনো রোগী জ্ঞান হারাতে পারে। তাই
অ্যালার্জিকে ছোট করে দেখা ঠিক নয়।
লক্ষণ
ঘরের ধুলাবালি পরিষ্কার করছেন, হঠাৎ করে শুরু হলো হাঁচি বা শ্বাসকষ্ট। কেউ হয়তো বেড়াতে গেছেন পার্কে, ফুলের রেণু নাকে যেতেই দম আটকে আসতে চাইল। গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ মাছ, দুধ খেলেই কারও শুরু হয় চুলকানি বা লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠে চামড়া। এগুলোই অ্যালার্জির লক্ষণ।
কেন হয়?
সাধারণত বস্তুবিশেষের প্রতি
অতি সংবেদনশীলতার প্রবণতা মানুষ পরিবার থেকেই পেয়ে থাকে। যেসব শিশু জন্মের পর
মাতৃদুগ্ধ পান করেনি, তাদের এই সমস্য বেশি।
অ্যালার্জি থাকলে ওই বিশেষ পদার্থের সংস্পর্শে এলেই রক্তে অবস্থিত বিশেষ কোষ থেকে
প্রচুর পরিমাণে হিস্টামিন, সেরোটনিন ইত্যাদি রাসায়নিক
পদার্থ নিঃসৃত হতে থাকে। এই পদার্থগুলো দ্রুত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ও নানা উপসর্গ
তৈরি করে। যেমন কাশি, হাঁচি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। কখনো
রক্তচাপ কমিয়ে দিয়ে বিপদ ঘটাতে পারে।
চিকিৎসা
অ্যালার্জি হয় এমন বস্তু বা দ্রব্য থেকে সযত্নে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। অ্যালার্জির প্রকোপ কমাতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহূত হয়, বিশেষ ও জরুরি পরিস্থিতিতে ইনজেকশনও দরকার হয়। এ ছাড়া রয়েছে ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি। সত্যিকার অর্থে অ্যালার্জির কোনো সুনির্দিষ্ট ও স্থায়ী চিকিৎসা নেই। ওষুধ দিয়ে উপসর্গ কিছু দিন দমিয়ে রাখা যায়। কিন্তু ওষুধ বন্ধ করলেই আবার শুরু হয়। তবে ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে স্বল্পমাত্রা থেকে পর্যায়ক্রমে উচ্চতর মাত্রায় অ্যালার্জেন (যে বস্তুর মাধ্যমে রোগীর শরীরে উপসর্গ দেখা দেয়) রোগীর শরীরে প্রবেশ করানো হয়, যাতে পরে ওই বস্তুর প্রতি সংবেদনশীলতা কমে যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁপানি (অ্যাজমা), অ্যালার্জিক রাইনাইটিস ও অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র
দাস
বিভাগীয় প্রধান
অ্যালার্জি ও
ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজি বিভাগ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী
মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
সূত্রঃ প্রথমআলো, ১৩-০২-২০১৪
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।