মরণশয্যায় এক যুবক। শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ রোগ ক্যান্সার। শুকনো চোখের কোণে ঝলমল করছে
একটুকরো স্বপ্ন। কিন্তু হাতে যে আর বেশি সময় নেই! সঙ্গিনীকে দিয়ে যেতে হবে স্ত্রীর
সম্মান। স্বীকৃতি দিতে হবে তাদের একমাত্র ভালোবাসার চিহ্ন কন্যাটিকেও।
চিকিৎসককে ইশারায় ডেকে নিজের শেষ
ইচ্ছের কথা জানালেন ৩০ বছরের রওডেন। তাকে চার্চে নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই৷ তাই হাসপাতালেই সকলের সহযোগিতায়
হয়ে উঠল চার্চ। বধূবেশে সাদা গাউন পড়ে বিয়ে করতে এলেন রওডনের সঙ্গিনী লেইজল। বিয়ের আনন্দে মেতে উঠল গোটা
হাসপাতাল। চার্চ থেকে এলেন ফাদার৷ হাসাপাতাল সাজানো হলো সাদা কারনেশন দিয়ে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব
এলেন সকলেই। রওডনের ফ্যাকাসে মুখ আনন্দে রাঙা হয়ে উঠল। বাইবেল পাঠ করলেন ফাদার৷ সকলের
সামনে বিয়ে হল তাদের৷ রওডনের ঠোঁটে চুম্বন করলেন লেইজল৷ দু'জনের
চোখই তখন ভেসে যাচ্ছে পানিতে৷ এ যেন একই সঙ্গে মিলন আর চিরবিচ্ছেদের খেলা৷
করতালি আর চোখের পানিতে
নবদম্পতিকে অভিন্দন জানালেন উপস্হিত সবাই। মা-বাবার বিয়ের স্বাক্ষী রইল দু'বছরের
ফুটফুটে মেয়েটি। বেশ কয়েকবছর ধরেই একসঙ্গে থাকতেন রওডন এবং লেইজল। দু'বছর আগে লেইজলের কোলে আসে ফুটফুটে
এক কন্যা সন্তান। চলতিবছরের ৮ জুলাই তারা সামাজিকভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন৷কিন্তু গত
মে মাসেই লিভার ক্যান্সার ধরা পড়ে রওডেনের। এবং চিকিৎসক জানিয়েছে দেন একেবারে
লাস্ট স্টেজ। তাই আর কিছু করা যাবে না। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রওডেনকে। চলছিল কেমো থেরাপি। গত ১১ জুন রওডেন টের পান দেহে প্রাণ হয়তো আর বেশিক্ষণ নেই। শেষ ইচ্ছেপূরণ করে যেতে হবে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে আয়োজন করা হয়
লেইজল এবং রওডেনের বিবাহবাসরের। সঙ্গীনীকে বধূর স্বীকৃতি দিয়ে আর তাদের একমাত্র সন্তানের মাথায় হাত
দিয়েই চোখ বুজলেন রওডেন। তাদের ভালবাসার স্বাক্ষী থাকল গোটা বিশ্ব।
সুত্রঃ বাংলাদেশপ্রতিদিন, ০২ জুলাই, ২০১৪
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।