মাঝেমধ্যেই কিছু রোগী
আসেন চেম্বারে, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। সমস্যা ব্যথায় ঘাড় ঘোরাতে পারে
না। ব্যথা পিঠের ওপরের অংশেও। কারও কারও হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে হাত
ঝিনঝিন বা অবশ ভাব অনুভূত হয়। হাতে কম শক্তি পায়। কোমরে ব্যথার উপসর্গ নিয়ে যারা
আসে, তাদের বেশির ভাগই বলে
থাকে, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার
পর উঠতে গেলে কোমরের মাংসপেশিতে টান লাগে। কিছু রোগীর বক্তব্য এমন, দীর্ঘক্ষণ উপুড় হয়ে
শুয়ে ল্যাপটপ কিংবা মোবাইলে ফেসবুক বা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করছিলেন। ওঠার সময়
বিছানা থেকে উঠতে কষ্ট হয়, তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। আসুন জেনে নিই এ সমস্যাগুলোর কারণ।
সমস্যার মূল কারণ একটু
অসচেতনতা,
অসতর্কতা
বা অসাবধানতা। যেমন: ধরুন জেরিনের (ছদ্মনাম) কথাই। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছে। এখন ক্লাসে যেতে হয় না। হাতে অফুরন্ত সময়। তাই
ইন্টারনেটই সঙ্গী। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ
পর্যন্ত ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে সামনে বই রেখে পড়াশোনা করে। এতে জেরিন
কোমর ব্যথায় আক্রান্ত। কিন্তু এ ব্যথার জন্য কোনো প্যাথলজিক্যাল কারণ নেই। শুধু
অসচেতনতা। এ কারণে জেরিনের কোমরের মাংসপেশি স্ফিত বা শক্ত ও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
পরামর্শ : সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যা করতে হবে: একটানা আধা ঘণ্টার বেশি সময়
বসে কিংবা শুয়ে কম্পিউটিং বা ব্রাউজ করবেন না। কাজের মধ্যে ১০-১৫ মিনিট করে
বিশ্রাম নিন। এ সময় হাঁটাহাঁটি করুন। তারপর আবার বসুন। দীর্ঘক্ষণ উপুড় হয়ে শুয়ে বই
পড়বেন না। ল্যাপটপও চালাবেন না। কম্পিউটিংয়ের সময় কম্পিউটারের মনিটর চোখের লেভেলে
রাখুন, যাতে আপনাকে সামনের
দিকে ঝুঁকতে না হয়। বসার চেয়ার ও টেবিলের উচ্চতা এমন হতে হবে, যেন আপনি সোজা হয়ে
কোমরের পেছনে সাপোর্ট অবস্থায় বসে কম্পিউটার চালাতে পারেন। নিয়মিত ঘাড় ও কোমরের
মাংসপেশির শক্তি বজায় রাখার জন্য বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
ব্যায়াম করুন। সর্বোপরি একটু নিয়ম মেনে চলুন, সুস্থ ও ব্যথামুক্ত জীবনযাপন
করুন।
ডা.
এম ইয়াছিন আলী
লেখক: চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট
ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি
হাসপাতাল,
ধানমণ্ডি, ঢাকা
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।