সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: Ridged Gourd-ঝিংগার উপকারিতা

Ridged Gourd-ঝিংগার উপকারিতা


ঝিংগা (ইংরেজি: Luffa), ভিয়েতনামী ঝিংগা, ভিয়েতনামী লাউ, বা চীনা অক্রা একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বর্গ এবং উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় লতাজাতীয় উদ্ভিদ যা শসা কিউকুয়াবিটাশা পরিবারে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। দৈনন্দিন একে লূফা হিসেবে বানান করা হয়, সাধারণত দুই প্রজাতির ফল luffa aegyptiaca এবং luffa acutangula -কে বোঝানো হয়। এই প্রজাতির ফলের চাষ করা হয় এবং একে সবজি হিসাবে খাওয়া হয়। এই ফলকে খাবারের জন্য অল্প বয়স্ক অবস্থায় সংগ্রহ করা হয়। এই সবজি চীন ও ভিয়েতনামের অতি জনপ্রিয়। এই ফল যখন সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ বয়সে পৌছায় তখন এটা খুব আঁশাল হয়ে যায়। বর্ষজীবি, ফেব্রুয়ারি-মে তে পাওয়া যায়। ৬"-১৮" দৈর্ঘ হতে পারে। ১৮শ-শতাব্দীতে ইউরোপীয় উদ্ভিদবিজ্ঞানী মিশরীয় আরবি নাম لوف লুফ থেকে এর ইংরেজী নামকরণ করা হয়।(উইকিপিডিয়া)

খাবারে অরুচি হলে কচি ঝিঙে ও শিং মাছের ঝোল খান অনেকে। তবে কুচো চিংড়ি আর ঝিঙের যুগলবন্দীর কোনো জবাব নেই। ভাজি কিংবা ভর্তা হিসেবেও ঝিঙে খেতে দারুণ। তবে কেবল সুস্বাদুই নয়,এর অসাধারণ ভেষজ গুণ রয়েছে। পাশাপাশি বাড়তি ওজন ঝরাতে চান যাঁরা, তাঁরা নিয়মিতই ঝিঙে রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়। কারণ,এতে যেকোনো সবজির তুলনায় বেশি আঁশ রয়েছে,যা বাড়তি মেদ ও কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। তা ছাড়া খাবারে ঝিঙে রাখলে ঘন ঘন খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছেও কমে যায়।

ইংরেজিতে রিজ গ্রাউন্ড নামে পরিচিত এই সবজি সারা বিশ্বে পুষ্টিকর খাবার হিসেবে স্বীকৃত। এতে খাদ্য-আঁশ ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন সি, রিবোফ্ল্যাভিন, জিঙ্ক, লোহা, থায়ামিন ও ম্যাগনেশিয়াম। ১০০ গ্রাম ঝিঙেতে রয়েছে ৯৩ গ্রাম জলীয় অংশ, শূন্য দশমিক ৩ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ২ দশমিক ৬ গ্রাম আঁশ, ৩০ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ১ দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ, ৪ দশমিক ৩ গ্রাম শর্করা, ১৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৬ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ ও ৩৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। আসুন এবার ঝিঙের উপকারী দিকগুলো জেনে নেওয়া যাক।


ওজন নিয়ন্ত্রণের মহৌষধ: ঝিঙে খুবই কম ক্যালরি বা খাদ্যশক্তির একটি সবজি। এতে চর্বি নেই। এর আঁশ কোলেস্টেরল কমায়। এ ছাড়া এতে প্রচুর পানিও রয়েছে। তাই ঝিঙে খেলে বারবার খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছে কমে যায়। ফলে একে ওজন কমানোর মহৌষধ বলা চলে।

রক্ত শোধক: রক্তকে দূষণ থেকে রক্ষা করতে ঝিঙে অতুলনীয়। যকৃতের জন্য খুবই উপকারী এই সবজি। পাশাপাশি এটি অ্যালকোহলের ক্ষতিকর প্রভাবও দূর করে।

জন্ডিস নিরাময়কারী: জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ঝিঙে আদর্শ পথ্য। ঝিঙের জুস পান করলে যকৃতের কর্মক্ষমতা বাড়ে।

পাকস্থলী ভালো রাখে: এতে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি পেট পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। পাইলস রোগ দূরে রাখে। অ্যাসিডিটি ও আলসারও নিরাময় করে এটি। নিয়মিত ঝিঙে খেলে পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বাড়ে, খাবারও হজম হয়।

ডায়াবেটিসে উপকারী: ঝিঙেতে বিদ্যমান পেপটাইড এনজাইম রক্তের চিনির পরিমাণ কমায়। রক্তের ইনসুলিনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ঝিঙে খুবই উপকারী।

প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক: প্রদাহরোধী ও অ্যান্টিবায়োটিকের চমৎকার গুণ রয়েছে এই সবজিতে। শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয় এটি। ত্বকেরও সুরক্ষা দেয়। এটি বিভিন্ন রোগজীবাণু, ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।


হাসিনা আকতার
প্রধান পুষ্টিবিদ
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল


সূত্রঃ প্রথম আলো, ০২:১৮, মে ১৫, ২০১৬

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।