বিগ বেন (ইংরেজি: Big Ben) লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার সংসদ
ভবনের উত্তরাংশের ক্লক টাওয়ারে অবস্থিত সুবিশাল ঘন্টার ডাক নাম যা
সময়ে সময়ে বেজে উঠে।[১][২]আনুষ্ঠানিকভাবে টাওয়ারটি ক্লক টাওয়ার কিংবা প্যালেস অব ওয়েস্টমিনস্টার নামে পরিচিত।
লন্ডনের নাগরিকদের অধিকাংশই
টাওয়ারটিকে বিগ বেন নামে শখ করে
ডেকে থাকেন। কেননা, ঘন্টাটি
খুবই বৃহৎ আকৃতির। সর্বসাকুল্যে এর ওজন প্রায়
১৩ টন।[৩] বর্তমান বিগ বেন
ঘন্টাটি দ্বিতীয় বারের মতো প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ১৮৫৬ সালে প্রথম ঘন্টাটি
বিনষ্ট করা হয়েছিল মূলতঃ ভুল হিসাব প্রদানের জন্যে।[৪]
এলিজাবেথ টাওয়ার Elizabeth Tower | |
---|---|
এলিজাবেথ টাওয়ার
| |
বিকল্প নাম | বিগ বেন |
সাধারণ তথ্য | |
ধরন | টাওয়ার |
স্থাপত্য রীতি | Gothic Revival |
অবস্থান | লন্ডন, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য |
স্থানাঙ্ক | ৫১°৩০′২.৭২″ উত্তর০০°০৭′২৮.৭৮″ পশ্চিম |
সম্পূর্ণ | ১৮৫৫ |
উচ্চতা | ৯৬ মিটার (৩১৫ ফু) |
নকশা এবং নির্মান | |
স্থপতি | Augustus Pugin |
ইতিহাস
বিগ বেন লন্ডনের অতি
পরিচিত ও জনপ্রিয় স্থাপনাবিশেষ। তবে বিগ বেন নামকরণের
উৎপত্তি নিয়ে খানিকটা বিতর্ক রয়েছে। ডাক নাম হিসেবে প্রথমে
এটি গ্রেট বেল হিসেবে পরিচিত ছিল। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে এ নামটির উৎপত্তি ঘটেছে
স্যার বেঞ্জামিন
হলের নামানুসারে।[৩]কেননা, তিনি গ্রেট বেলের
নির্মাণ কার্য তদারক করেছিলেন। আবার ইংরেজ মুষ্টিযোদ্ধা ও হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন বেঞ্জামিন
কন্টের নামানুসারে বিগ বেন
হয়েছে বলে ধারনা করা হয়ে থাকে।[৫][৬][৭][৮] বর্তমানে বিগ বেন প্রায়শঃই ঘড়ি, টাওয়ার এবং ঘন্টা - সবগুলোকে
একত্রে চিহ্নিতকরণে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে ডাক নাম হিসেবে বিগ বেন শুধুমাত্র ঘড়ি এবং
টাওয়ার হিসেবে বৈশ্বিকভাবে পরিচিত নয়।[৯][১০][১১][১২]
কিছুসংখ্যক
লেখক বিগ বেন শব্দের ব্যবহারজনিত কারণে টাওয়ার, ঘড়ি এবং ঘন্টা নিয়ে অনুসন্ধান
কার্য পরিচালনা করেন। সেখানে তারা দেখতে পান যে, বিগ বেন শিরোনামের বইটির মূল
বিষয়বস্তু হচ্ছে ঘন্টার; পাশাপাশি ঘড়ি এবং টাওয়ারও রয়েছে।[১৩][১৪]
এটি
বিশ্বের সর্ববৃহৎ শব্দ প্রদানকারী চতুর্মূখী ঘড়ি। শুধুমাত্র ঘড়িটির
ওজনই ৫.০৮ টন। ঘড়িটির সম্মুখাংশের সংখ্যাগুলো ২ ফুট (৬১০ মিলিমিটার) এবং মিনিটের
কাটাটি ১ ফুট (৩০৫ মিলিমিটার) লম্বা। ঘন্টাটি নির্মাণে ১৩ বৎসর সময়কাল ব্যয়িত
হয়েছে। এর নির্মাণ কার্য ১৮৫৯ সালে সমাপ্ত হয়। টাওয়ারটি গড়পড়তা ১৬ তলার সমমানের
উচ্চতাবিশিষ্ট।[১৫]
সাংস্কৃতিক অঙ্গন
ঘড়িটি লন্ডন তথা
যুক্তরাজ্যের ব্যাপক পরিচিতি বহন করে আসছে। এ পরিচিতিতে দর্শন
মাধ্যম ব্যাপক ও গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। যখন একজন টেলিভিশন কিংবা চলচ্চিত্র
নির্মাতা ব্রিটেনের কোন স্থান
নির্ধারণ করার ইচ্ছা পোষণ করেন, তখন অবশ্যম্ভাবী নাম হিসেবে বিগ বেন স্থাপনাকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
তারা জনপ্রিয় পন্থা হিসেবে টাওয়ারের চিত্রকে তুলে ধরতে লাল ডাবল-ডেকার বাস কিংবা ব্ল্যাক
ক্যাবের সাহায্য নেন।[১৬] শ্রবণ
মাধ্যমে ঘড়ির শব্দচিত্র ধারণপূর্বক তুলে ধরা হয়ে থাকে। নববর্ষ উদযাপনের প্রাক্কালে ক্লক টাওয়ার
সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। যুক্তরাজ্যের রেডিও এবং টেলিভিশন সম্প্রচার
কেন্দ্রগুলোর সকলই একযোগে নতুন বছরকে বরণ করতে বিগ বেনের ঐক্যসুরকে শুভেচ্ছা
বার্তারূপে শ্রোতা-দর্শকদের প্রদান করে থাকে। ২০১২ সালের
নববর্ষের শুভেচ্ছা-পর্বটিতে বিস্ফোরণের মাধ্যমে তীব্র আলোকচ্ছটার
দৃশ্যমালা তুলে ধরা হয়। এছাড়াও, স্মারক দিবসের একাদশ মাসে একাদশ দিনের একাদশ
ঘন্টায় বিগ বেনের শব্দ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে দুই মিনিট নীরবতা ভেঙ্গে
পুণরায় ঘড়ির শব্দ শোনানো হয়।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।