সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: ডায়াবেটিসে চোখের সমস্যা ও করণীয়

ডায়াবেটিসে চোখের সমস্যা ও করণীয়


ডায়াবেটিস শরীরের যেসব অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তার মধ্যে অন্যতম হল চোখ। ডায়াবেটিসে চোখের সর্বস্তরের কাঠামোই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে রেটিনার ক্ষতিই সবচেয়ে মারাত্মক কেননা তাতে ডায়াবেটিক রোগীর দৃষ্টিশক্তি হারানোর সমূহ আশংকা থেকে যায়। চক্ষু পার্শ্বস্থিত অন্যান্য উপাদান জড়িত হলে দৃষ্টি অস্বচ্ছ হতে পারে। কিছু কিছু সমস্যার কারণে রোগীর মৃত্যুর আশংকাও দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীর চোখের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্তনালির সমস্যাটিই মূলত এজন্য দায়ী।


চোখের এসব সমস্যাকে ৩টি ভাগে ভাগ করা হয়।
* ননপ্রলিফারেটিভ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (ঘচউজ)
* প্রলিফারোটিভ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (চউজ)
* মাকুলার ইডিমা

ডায়াবেটিক রোগীর চোখে সমস্যা হওয়ার ঝুঁকিসমূহ
* ডায়াবেটিসের উপস্থিতির সময়কাল,টাইপ-১ ও টাইপ-২ উভয় ধরনের ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে তা প্রয়োজন।
* ঠিকমতো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থতা
* উচ্চ রক্তচাপ
* প্রস্রাবে আমিষের (প্রোটিনের) উপস্থিতি।
* রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল
* গর্ভধারণ ও
* রক্তস্বল্পতা
ডায়াবেটিক রোগীদের নিয়মিতভাবে চোখের কাঠামোগত পরিবর্তনের হিসাব রাখতে হবে। এজন্য ডায়াবেটিস ধরা পড়ার সময় থেকে শুরু করে প্রতি দুই বছর কমপক্ষে একবার চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। চোখে যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে (রেটিনোপ্যাথি) তবে চক্ষু বিশেষজ্ঞের সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। ডায়াবেটিক রোগীদের কারও কারও উচ্চ ইন্ট্রাঅকুলার (IOL) চাপ থাকতে পারে।

ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি থেকে রক্ষা পেতে হলে নিয়মিত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
* কঠোরভাবে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ : ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তচাপ ১৩০/৭০ মিলিমিটার পারদ রাখতে পারলে ভালো। এক্ষেত্রে এসিইআই (অঈও) ও এআরবি (অজই) জাতীয় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রক ওষুধগুলো ভালো।

মনে রাখতে হবে
* সময় মতো ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করতে পারলে দৃষ্টি শক্তি হারানোর আশংকা কমে যায়।
* ডায়াবেটিসের স্থায়িত্ব সময়কালে রেটিনোপ্যাথির তীব্রতা ও চক্ষুগোলকের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে।
* চিকিৎসা করেও মারাত্মক চোখের সমস্যার তেমন কোনো উন্নতি করা যায় না, এতে চোখের ক্ষতির পরিমাণ স্থবির করা যায়।
* যাদের দৃষ্টিশক্তি ক্রমাগত কমতে থাকছে এবং ইন্ট্রাঅকুলার চাপ বাড়ছে তাদের সত্বর চক্ষু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।
* ১০ বছর থেকে ৩০ বছর বয়সী সব ডায়াবেটিক রোগী যাদের বছরোর্ধ সময় ধরে ডায়বেটিস আছে এবং ৩০ বছরের বেশি বয়সের ডায়াবেটিক রোগীদের চক্ষু. বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরি।
আজকাল লেজার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ডায়াবেটিস রেটিনেপ্যাথির রোগীদের। এতে তাদের দৃষ্টিশক্তি হারানোর সম্ভাবনা কমেছে।

ডা. শাহজাদা সেলিম
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
কমফোর্ট ডক্টরস্ চেম্বার : গ্রিনরোড, ঢাকা
Email: selimshahjada@gmail.com



সূত্রঃ যুগান্তর, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।