ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ‘বায়ো-ডাইজেস্টার টয়লেট’ ব্যবসায়িকভাবে বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷কাশ্মীরের সমতল থেকে প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার উঁচুতে কাজ করছেন ভারতের প্রায় পাঁচ হাজার সেনা৷ সেখানকার তাপমাত্রা মাঝে মধ্যে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে যায়৷ এত ঠাণ্ডার কারণে সেনারা এতদিন মলমূত্র ত্যাগের পর বরফ দিয়ে ঢেকে রাখতেন৷ ফলে সমস্যা যেটা হতো সেটা হচ্ছে, গ্রীষ্মকালে যখন বরফ গলে যেত তখন ঐ মলগুলো বের হয়ে যেত৷ ফলে পানি সহ দূষিত হত আশেপাশের পরিবেশ৷
এ থেকে মুক্তি পেতে প্রায় ১৫ বছর আগে গবেষণা শুরু করে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান, ডিআরডিও'র বিজ্ঞানীরা৷ অবশেষে তারা একটি সমাধান খুঁজে পেয়েছেন৷ তারা এমন একটি টয়লেট উদ্ভাবন করেছেন যেটা আসলে বিশেষভাবে তৈরি একটি ট্যাঙ্ক৷ মানুষের মলগুলো এই ট্যাঙ্কে থাকা ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিশে মিথেন গ্যাস আর পানিতে রূপান্তরিত হয়৷ইতিমধ্যে, লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসন প্রায় ১২ হাজার বায়ো-ডাইজেস্টার টয়লেট কিনতে চেয়েছে৷ প্রতিটি টয়লেটের মূল্য ২৫ হাজার ভারতীয় রূপি৷উল্লেখ্য, লাক্ষাদ্বীপ হচ্ছে ভারতের কেরালা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে কয়েকটি দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি দ্বীপপুঞ্জ৷ পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় জায়গা সেটি৷ভারতের বণিক সমিতি ‘ফেডারেশন অব ইণ্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, এফআইসিসিআই' এই টয়লেট বিক্রির দায়িত্ব নিয়েছে৷ এটা ছাড়াও প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীদের তৈরি আরও নয়টি প্রযুক্তি বিক্রির জন্য এফআইসিসিআই ও ডিআরডিও'র মধ্যে চার বছরের চুক্তি হয়েছে৷
২০০৮ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রযুক্তির সুফল সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন৷ এ লক্ষ্যে ডিআরডিও'র প্রায় ২০০ প্রযুক্তি বাছাই করা হয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহনের জন্য তাপরোধক ঢাল, আলো নিয়ন্ত্রক জানালা, মশা তাড়ানোর যন্ত্র ও ডেঙ্গু নিরোধক যন্ত্র৷ এ ছাড়া এমন এক ধরনের স্প্রে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা পোশাককে পোকামাকড়মুক্ত রাখবে৷ আগুন নেভানোর যন্ত্র ও ছারপোকা দমনকারী ক্রিমও বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা চলছে৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সূত্রঃ জার্মানবেতার ১৫/০১/২০১২
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।