এলিয়েন অথবা ভিনগ্রহী বলে আদৌ কিছু আছে কিনা বিজ্ঞানীরা আজও পরিষ্কার করে জানাতে পারেননি; কিন্তু তাদের সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য-উপাত্ত হাজির করেছে অনেকে। ভিনগ্রহীদের নিয়ে সদুত্তর মেলেনি অনেক রহস্যজনক প্রশ্নের। কিন্তু টম মাঙ্ল এবার আশ্চর্যজনক ঘটনার অবতারণা করে বলেছেন_ এটি এখনো আমার কাছে ধাঁধার মতোই লাগছে। আমরা শেষ যেবার এটির উপস্থিতি টের পাই তখন থেকেই এ সিগন্যালের ওপর নজর রাখতে থাকি। বছর পেরিয়ে গেছে, এর ওপর গবেষণা চলছে। এ বিজ্ঞানী দলের দাবি_ তারা নিকটস্থ ছায়পথ থেকে একটি রেডিও সিগন্যাল পাচ্ছেন।
পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বিরল ঘটনা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের আগ্রহী করে তুলেছে। ছায়াপথ এম-৮২ থেকে এ রেডিও ওয়েব বা তরঙ্গ আসছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জড্রেল ব্যাংক সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিঙ্রে কো-ডিসকভারার টম মাঙ্ল অবশ্য স্বীকার করেছেন তারা জানেন না, আসলে এটি কী বা কেন ঘটছে। ঘটনাটি তাদের চোখে ধরা পড়ে যখন তারা এম-৮২ ছায়াপথের বিস্ফোরণ নিয়ে টেলিস্কোপে নজরদারি করছিলেন। কিছুদিনের জন্য তারা একটি রেডিও তরঙ্গ নির্গত হতে দেখেন, খুব দুর্বল তরঙ্গ হলেও তারা সেটির উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা পান। সুপারনোভা থেকে সাধারণত যে ধরনের তরঙ্গায়িত তরঙ্গ পাওয়া যায়, এটি তার চেয়ে ব্যতিক্রম বলেই মনে করা হচ্ছে। সুপারনোভার ক্ষেত্রে যা ঘটে না বললেই চলে তা দেখা গেল এই তরঙ্গে।
সুপারনোভার ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেটি কয়েক সপ্তাহব্যাপী স্থায়ী হয়ে আরও উজ্জ্বল হয় এবং মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর মিইয়ে যায়। রেডিয়েশনে স্বকীয়তা বজায় রাখে। কিন্তু এই তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এটি তার উৎস থেকে উজ্জ্বলতা অনেকাংশে কম তারতম্য প্রকাশ করছে। ব্রিটেনের রেডিও টেলিস্কোপ 'মার্লিনে' এই উজ্জ্বলতা ধরা পড়ার পর বিজ্ঞানীরা এখন সন্দেহ প্রকাশ করছে এটি মহাকাশের বিস্ফোরণ বা কোনো রেডিয়েশন থেকে উৎপত্তিলাভ করেনি বরং কোনো ভিনগ্রহী এই রেডিও সিগন্যালটি পাঠাচ্ছে। এমন সন্দেহ আরও তীব্রতর হয় যখন এর ওপর নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছিল। হঠাৎ করেই একদল বিজ্ঞানী ভিনগ্রহীদের যোগাযোগের চেষ্টার কথা উড়িয়ে দিয়ে জানালেন_ কোনো ব্ল্যাকহোলের কারণে এটি ঘটতে পারে। চুম্বকায়িত তরঙ্গের বিস্তারে। কিন্তু খুঁটিয়ে দেখা গেল, এম-৮২ এর কেন্দ্রে বা আশপাশে এমন তীব্রতর ব্ল্যাকহোল থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এ সময় বিজ্ঞানীদের মাঝে নতুনভাবে আরও একটি বিষয় গুরুত্ব নিয়ে হাজির হয় তা হলো এটি কি তবে কোনো মাইক্রোকিউসারের কাজ?
মাইক্রোকিউসার মূলত গঠিত হয় তারকার বিস্ফোরণের মাধ্যমে। এটির ক্ষেত্রে সূর্যের বৃহত্তম অংশের বিস্ফোরণের মতোই মহাকাশ বিস্ফোরণে একটি গা-ঢাকা ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে। সেখান থেকে এমন কোনো তরঙ্গ আসছে না তো যাকে ভিনগ্রহীদের পাঠানো রেডিও তরঙ্গ ভেবে সবাই ধোঁকা খাচ্ছে? না, এই যুক্তিযুক্ত প্রশ্নের সরল জবাব পাওয়া গেছে। মাইক্রোকিউসারের ফলে প্রচুর এঙ্-রে রশ্মির উদ্ভব ঘটে, যা এই রহস্যঘেরা রেডিও তরঙ্গ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত এ রকম বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর মিললেও ঠিক কে বা কোন বস্তু থেকে তাহলে এই তরঙ্গ ভেসে আসছে তার উত্তর মিলছে না। সবচেয়ে বড় সম্ভাবনার উত্তরটি হলো কোনো ব্ল্যাকহোলের কারণেই এটি ঘটছে এবং বস্তুটি অবশ্যই অত্যন্ত নিরেট। কিন্তু ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব যখন পাওয়া যাচ্ছে না তখন এই রহস্যময় তরঙ্গকে ব্যাখ্যা করার মতো আপাতত কোনো উত্তর বিজ্ঞানীদের মুখ থেকে আসছে না। বিজ্ঞানীদের হাতে থাকা অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর ঘেঁটে এই রহস্যময় তরঙ্গের সুষ্ঠু ব্যাখ্যা না আসায় তাই এখন পর্যন্ত এই ধারণাই সবচেয়ে প্রবল যে, কোন এই রহস্যময় সিগন্যাল যেটি তরঙ্গাকারে আসছে এবং তা কোন ভিনগ্রহী পাঠাচ্ছে!
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।