সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইন্টারনেট প্রযুক্তি। নিত্যনতুন বিপ্লব সাধিত হচ্ছে এ সেক্টরে। এরই ধারাবাহিকতায় জার্মানি-রাশিয়াও সমৃদ্ধ করছে তাদের অনলাইন ভাণ্ডার। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাল মিলাতে তারাও এগিয়ে চলেছে সাইবার বিশ্বে । অন্যদিকে সাইবার বিশ্বে ক্রমেই নকল তথ্যের ছড়াছড়ি ও ইন্টারনেটের এরোটিক অপবাদসহ নানা ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘন ঘন দেখা যাচ্ছে। কেমন করে কার্যকরভাবে ইন্টারনেট পরিচালনা ও ব্যবহার করা হয় তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামনে ইন্টারনেটের উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এদিক দিয়ে অন্য দেশগুলো থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে।
কিন্তু জার্মানি এবং রাশিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তারা ইন্টারনেটের দ্রুত পরিবর্তন মোকাবিলা করছে। ব্রিক দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে রাশিয়ায় ইন্টারনেটের উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন ভূমিকা নিচ্ছে। গত কয়েক বছরে বিশ্বের অন্যতম নবোত্থিত অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ইন্টারনেট ক্ষেত্রে রাশিয়ার উন্নয়ন অন্য দেশগুলোর তুলনায় বিন্দুমাত্র কম নয়। রুশ বৈদ্যুতিক সম্প্রচার সমিতির এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের শেষ নাগাদ রাশিয়ার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ৬ কোটি ৩০ লাখে দাঁড়িয়েছে। এটি ২০১০ সালের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। এ সমিতি অনুমান করে বলেছে, ২০১৪ সালের আগে রাশিয়ার নেট নাগরিকদের সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। এটি হবে রাশিয়ার লোকসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ। ইন্টারনেটের বৈশিষ্ট্য ও প্রাধান্যের কথা বিবেচনা করে রুশ সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইন্টারনেটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে ব্যক্ত করেন যে, রাশিয়া বিপুল প্রয়াসের সঙ্গে ইন্টারনেটের উন্নতি ঘটাবে। ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে রুশ প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন ২০১১-২০২০ রুশ তথ্যভিত্তিক সমাজ উন্নয়ন কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করেন। ফলে সরকার প্রতি বছর তথ্যভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত প্রকল্পে কয়েকশ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করবে। রাশিয়ার টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আশ্বাস দিয়ে বলেছে, এ প্রকল্পের মাধ্যমে রাশিয়ার প্রত্যেক নাগরিক তথ্যভিত্তিক সমাজের গঠনকাজ থেকে লাভবান হতে পারবেন।
এদিকে জার্মানিতেও ইন্টারনেট বিপ্লব আরো জোরদার হচ্ছে। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৮ কোটি ২০ লাখের ৮০ শতাংশ লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এ বিরাট সংখ্যার পটভূমিকায় ইন্টারনেট পরিচালনা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জনসাধারণের আইনে বিধিসম্মত টেলিযোগাযোগ ও বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য জার্মানি সরকার নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। পাশাপাশি সরকার ইন্টারনেটের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা ও অপরাধমূলক তৎপরতা দমনের চেষ্টা করে থাকে। ১৯৯৭ সালে জার্মানি তথ্য ও টেলিযোগাযোগের পরিসেবা সংক্রান্ত আইন চালু করে। এটি হচ্ছে ইন্টারনেটের তৎপরতা বিধিসম্মত ও সীমাবদ্ধ করে রাখার একটি আইন। এই আইনে আরও রয়েছে অনলাইনে পরিসেবা প্রদানকারীদের গোপনীয়তা সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা প্রদান। জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ফেডারেল পুলিশ বিভাগ বিশেষভাবে ইন্টারনেট পুলিশের মতো একটি সংগঠন গঠন করে তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং বেআইনি আচরণ খুঁজে বের করে। এছাড়া গ্রাহকদের সবকিছুই আপডেট রাখে তারা।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।