সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: নাইট রাইডার- অবিশ্বাস্য হলেও সত্য

নাইট রাইডার- অবিশ্বাস্য হলেও সত্য



গাড়ি যদি আপনার মনের কথা বুঝতে পারে কেমন হয়? ধরুন আপনি যেমনটি ভাবছেন, ঠিক তেমনটিই করে চলেছে গাড়িটি। শুধু তাই নয়, গাড়িটি চালানোর সময় আপনাকে গাড়ির কোনো যন্ত্র স্পর্শ করতে হলো না অর্থাৎ হাত বা পা ব্যবহার করারও কোনো প্রয়োজন পড়ল না। আপনি মনে মনে যা ভাববেন বা যেভাবে চিন্তা করবেন সেভাবেই গাড়িটি চলতে শুরু করবে।

এমন গাড়ির কথা শুনলে মনে হবে, এটি নিছক কল্পকাহিনী অথবা সিনেমার কোনো আলোড়ন চিত্র! বাস্তবে এ ধরনের গাড়ি চলা আদৌ কি সম্ভব! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, সম্প্রতি জার্মানিতে এমন একটি গাড়ি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বার্লিনে অবস্থিত ফ্রি ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানী বিস্ময়কর এ গাড়ি তৈরি করেছেন।

হলিউডের সেই আলোচিত সিরিজ 'নাইট রাইডার'-এর কথা অনেকেরই হয়তো মনে আছে। সেখানে আমরা দেখেছি একটি গাড়িকে মৌখিক নির্দেশ দিলেই সেটি অসাধ্য সাধন করে ফেলত। গাড়িটি একা একা চলতে পারত। শুধু তাই নয়, নায়কের পক্ষ হয়ে নায়িকাকে উদ্ধার করত, এমনকি শত্রুর ওপর প্রতিশোধ নিতেও বিভিন্ন ভূমিকা রাখত! সে সময় থেকেই বিজ্ঞানীদের চিন্তা ছিল বাস্তবে এ ধরনের কোনো গাড়ি তৈরি করা যায় কি-না! আর বর্তমানে তৈরি ভাবনা গাড়িটি হচ্ছে সেই চিন্তারই একটি উন্নত প্রযুক্তি। বিস্ময়কর প্রযুক্তির এ ভাবনা গাড়িটি তৈরির পর এ বছরের মার্চ মাসে বার্লিনের পরিত্যক্ত টেম্পেলহফ বিমানবন্দরের রানওয়েতে তা পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে দেখা হয়েছে।

সবাই দেখেন, গাড়িটির চালক যা চিন্তা করছিলেন ঠিক সেভাবেই গাড়ির অ্যাক্সিলারেটর, ব্রেক এবং স্টিয়ারিং চলছিল অর্থাৎ কাজ করছিল। ফ্রি ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা বলেন, গাড়িচালকের মস্তিষ্কের সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ সেন্সর, যা গাড়ির চালক কি চিন্তা করছে তা সহজেই ধরতে পারে গাড়িটি। আর সেই সেন্সরের সঙ্গে একটি উচ্চ প্রযুক্তিনির্ভর বিশেষ কম্পিউটার বিশেষভাবে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। গাড়ির চালকের মাথায় ১৬ সেন্সরের একটি স্পেশাল ক্যাপ মস্তিষ্ক থেকে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল সংগ্রহ করে এবং সিগন্যালটি সেই কম্পিউটার দ্বারা পরিচালিত হয়। কম্পিউটার গাড়ির চালকের চিন্তাকে কোডিং করে শব্দতে রূপান্তর করে সেই নির্দেশকে পাঠিয়ে দেয় গাড়ির কাছে এবং কম্পিউটারযুক্ত সেই গাড়ি ওই নির্দেশ অনুযায়ীই চলতে থাকে। সত্যিই কি বিস্ময়কর ঘটনা! তবে এত সুখকর একটি সংবাদের মধ্যেও সামান্য একটুখানি হতাশার খবর অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। আর তা হলো, এখনো গাড়ি তৈরির সব কাজ চূড়ান্ত হয়নি। বিজ্ঞানীরা এখনো এ আবিষ্কারের কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেননি।

তারা ধারণা করছেন, পুরোপুরিভাবে তৈরি হয়ে এবং পুরো ক্ষমতা নিয়ে এ গাড়িটি রাস্তায় বের হতে সময় লাগবে আরও কয়েক বছর। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে আমরা কোনোভাবেই এখন আর শুধু নাইট রাইডার সিরিজের মতো কল্পকাহিনীর মধ্যে আটকে থাকতে চাই না। বিস্ময়কর এই গাড়ির বাস্তব প্রতিফলন দেখার জন্য আমরাও অপেক্ষায় রইলাম। জয় হোক বিজ্ঞানের, জয় হোক প্রযুক্তির।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, ০৯ জুলাই ২০১২ খ্রিঃ।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।