সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: মুটিয়ে যাওয়ার বিড়ম্বনা- সতর্ক হোন

মুটিয়ে যাওয়ার বিড়ম্বনা- সতর্ক হোন



আপনি কি মুটিয়ে যাচ্ছেন? বিশেষ করে আপনার উদর বা ভুঁড়ি কি স্ফিত হচ্ছে? আপনার কোমরের ব্যাস (পুরুষ হলে) কি ৯৪ সে.মি. এবং (মেয়ে হলে) কি ৮০ সে. মি. এর বেশি? ইদানীং আহারের পর কি বেশ ক্লান্তিবোধ করছেন? চিন্তা-চেতনাগুলো কি ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে? মেজাজ কি খিটখিটে হচ্ছে? হঠাৎ কি রেগে যাচ্ছেন? আচ্ছা আপনার রক্ত চাপ মেপে দেখুন তো। রক্তচাপ কি ১৪০/৯০ মি.মি. পারদের বেশি? এবার সকালে অভুক্ত অবস্থায় রক্তের সুগার, লিপিডপ্রোফাইল (কোলেস্টেরল) এবং ইউরিক এসিড চেক করুন তো। হায় কপাল! সুগারও বেড়ে গেছে? সেই সঙ্গে বেড়েছে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল তথা এলডিএল ও ট্রাইগি্লসারাইড এবং কমে গেছে বন্ধু বা উপকারী কোলেস্টেরল তথা এইচডিএল। রক্তের ইউরিক এসিডও কি বেড়ে গেছে?

যদি উপরের ব্যাপারগুলোর যে কোনো দুটি বা তিনটি অথবা সবগুলোই আপনার মধ্যে বিদ্যমান থাকে তাহলে আপনি বর্তমান সভ্যতার এক মারাত্দক এপিডেমিক বা মহামারীতে ভুগছেন। আর এই মহামারীটির নাম মেটাবোলিক সিনড্রোম বা সিনড্রোম এঙ্। নিজের দেহে এ সিনড্রোম তৈরিতে আপনি নিজেই সক্রিয় হতে দিয়েছেন তিন বেলা পেট ভরে ভাত, প্রচুর মিষ্টি, কেক, পেস্ট্রি, আইসক্রিম, রুটি, জেলি, মাংস, মাখন, ফাস্টফুড খেয়ে এবং অপরিণামদর্শীর মতো প্রচুর পেপসিকোলা পান করে। খাদ্য তালিকায় মোটেও শাক-সবজি, ফলমূল রাখেননি আর অলস জীবনযাপন করেছেন। প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবার খেয়েছেন বলে রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে গেছে স্থায়ীভাবে। আর এ বাড়তি সুগার হেন্ডেল করতে ইনসুলিনও নিঃসরণ হয়েছে প্রচুর। সেই অতিরিক্ত ইনসুলিন প্রতিনিয়ত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত রক্তের সুগারকে পোড়াতে না পেরে সৃষ্টি হচ্ছে ইনসুলিন রেসিস্টেন্সের। যার ফলে আপনি হচ্ছেন ইনসুলিন রেসিস্টেন্স তথা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। নিয়মিত না হেঁটে, খেলাধুলা না করে, অলস জীবনযাপন করছেন বলে আপনার রক্তের সুগার কমছে না। রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে যাচ্ছে।
মেটাবোলিক সিনড্রোম থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম করুন, অন্তত ঘণ্টায় তিন মাইল বেগে ৩০ মিনিট হাঁটুন। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ওজন কমান। খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনুন। যে খাবারগুলো পরিহার করবেন- অতিরিক্ত ভাত, রুটি, কেক, পেস্ট্রি, মিষ্টি, আইসক্রিম, জেলি, ক্রেকারস, কোমলপানীয়, ফাস্টফুড, চতুষ্পদ প্রাণীর মাংস যেমন- গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া। আরও বাদ দেবেন মগজ, কলিজা, ডিমের কুসুম, ঘি, মাখন, ভেজিটেবল অয়েল তথা ডালডা, মারজারিন, গলদা চিংড়ি, আলগা লবণ, বিভিন্ন বাদাম ইত্যাদি। বেশি খাবেন শাক-সবজি, ফলমূল, ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ, সরিষা, সয়াবিন/সূর্যমুখী তেল, রসুন, পিঁয়াজ ইত্যাদি।


অধ্যাপক ডা. মো. আবু সিদ্দিক
চেয়ারম্যান,
কার্ডিওলজি বিভাগ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি,
ঢাকা। ফোন : ০১৮১৭-০১১৮১৮


সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৫ আগষ্ট ২০১২ ইং।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।