সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: বাংলাদেশের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক তৃতীয় প্রজন্মের শুরু

বাংলাদেশের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক তৃতীয় প্রজন্মের শুরু



দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর অবশেষে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে চালু হয়েছে তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রিজি) প্রযুক্তি-সুবিধা। যদিও অনেক দেশেই এখন চালু আছে চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক। দেশে১৪ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় থ্রিজি প্রযুক্তির। মোবাইলফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিটক পূর্ণাঙ্গভাবে থ্রিজি প্রযুক্তি চালু করেছে। টেলিটকের গ্রাহকেরা এখন থ্রিজি ব্যবহার করতে পারছেন।


থ্রিজি প্রযুক্তিঃ
এককথায় থ্রিজি প্রযুক্তি হচ্ছে উচ্চগতির মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধাযুক্ত একটি প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে মোবাইল ফোনে ভিডিও কল থেকে শুরু করে টেলিভিশন দেখাসহ নানা সুবিধা পাওয়া যাবে। থ্রিজি প্রযুক্তির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বলার পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা ভৌগোলিকভাবে যে অবস্থানেই থাকবেন সেখানেই উচ্চগতির ইন্টারনেট-সুবিধা পাবেন।এ ছাড়া মোবাইল ফোনে করা যাবে ভিডিও সম্মেলনও। ব্যবহার করা যাবে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস), যার মাধ্যমে নিখুঁত পথনির্দেশনা পাওয়া যাবে।


প্রযুক্তির প্রজন্মঃ
থ্রিজি হচ্ছে উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধাযুক্ত মোবাইল নেটওয়ার্ক। বাংলাদেশে এর আগে ব্যবহূত নেটওয়ার্ক ছিল ২.৫ জি বা ২.৭৫ জি। সাধারণত মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে প্রযুক্তির প্রজন্মান্তর ঘটে এভাবে২জি, ২.৫জি, ২.৭৫জি, থ্রিজি, ফোরজি। নেটওয়ার্ককে পরের প্রজন্মে উন্নীত করে স্বল্পমূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যায়। এ সুবিধার মাধ্যমে বর্তমান মোবাইল সেবাদাতারা তাদের গ্রাহকদের নিজস্ব এবং অন্য নেটওয়ার্কে কম মূল্যে ভিডিও কলসহ অন্যান্য সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে পারবে। এ ছাড়া একই সঙ্গে একই সিমকার্ডে ও স্থানে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগও দিতে পারবে।


বাংলাদেশে থ্রিজিঃ
দেশে প্রথম থ্রিজি সুবিধা চালু করেছে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। ২০০৫ সালে চালু হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত এ টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান। টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) হাবিবুর রহমান জানান, শুরুতে টেলিটক থ্রিজি সুবিধার জন্য চালু করে গ্র্যাভিটি ক্লাব। এ ক্লাবের ব্যবহারকারীরা বর্তমানে থ্রিজি সুবিধা পাচ্ছেন। এখন ঢাকায় শুরু হলেও দেশব্যাপী থ্রিজি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা শহরের প্রায় চার লাখ গ্রাহক থ্রিজি ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। এ বছরের শেষ নাগাদ চট্টগ্রামে থ্রিজি চালু করা হবে বলেও জানান তিনি। প্রাথমিকভাবে শুধু কথা বলার জন্য যে খরচ তা দিয়েই থ্রিজিতে কথা বলা যাবে। থ্রিজির সব সেবাতেই থাকছে ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা। এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), সময় টিভি, জিটিভি (গাজী টিভি), আরটিভি ও মাইটিভি দেখা যাবে। এ টিভিগুলো ছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সব টিভি চ্যানেল দেখা যাবে। হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সরকার পরীক্ষামূলকভাবে থ্রিজি চালু করেছে, তবে আমরা পূর্ণাঙ্গভাবেই নেমেছি। বর্তমানে যেকোনো গ্রাহক নতুন থ্রিজি সিম কিনে এ সেবা পেতে পারেন।থ্রিজি সামনে রেখে ইতিমধ্যে ঢাকার ৩২৮টি বেইজ ট্রান্সিভার স্টেশনে (বিটিএস) নতুন প্রযুক্তি বসানো হয়েছে বলে জানান তিনি।


কোথায় পাওয়া যাবে থ্রিজি সিমঃ
ঢাকায় বর্তমানে থ্রিজি লোগো-সংবলিত প্রায় চার হাজার দোকানে এই সংযোগ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া টেলিটক কাস্টমার সেন্টার, বনানীতে টেলিটকের প্রধান কার্যালয়সংলগ্ন স্থানে, উত্তরায় সেক্টর-৩-এর এবি সুপার মার্কেটে, ধানমন্ডির ৩ নম্বর রোডের হ্যাপি আর্কেডে, ৫৯/২ পুরানা পল্টনের সুরমা টাওয়ারে, মিরপুর-১০-এর আখন্দ টাওয়ারে, ফার্মগেটে বড়বাজার শপিং কমপ্লেক্সে, রমনার বিটিসিএল প্রাঙ্গণে, যাত্রাবাড়ীর নওয়াব স্টোন টাওয়ারে এবং টঙ্গীর টেশিস ভবনে পাওয়া যাবে। নতুন এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অনেক ধরনের কাজই সহজ হয়ে যাবে। বর্তমানে টেলিটক এ সুবিধা চালুর পাশাপাশি বিশেষ হেল্পডেস্ক চালু করেছে। থ্রিজি সম্পর্কিত যেকোনো বিষয় জানতে ই-মেইল করা যাবে 3g@teletalk.com.bd ঠিকানায়।

কবে থেকে গ্রাহকেরা থ্রিজি সংযোগ পাবেন?
*পুরোপুরিভাবেই থ্রিজি চালু হয়েছে। গ্রাহকেরা এখনই ইচ্ছে করলে টেলিটক থেকে এ সংযোগ নিতে পারবেন। পুরোনো টেলিটক সিমকার্ড কি থ্রিজিতে উন্নীত (আপগ্রেড) করা যাবে? -পুরোনো সিমকার্ডকে থ্রিজিতে উন্নীত করা যাবে। এ ব্যাপারে খুব শিঘ্রী ঘোষণা দেওয়া হবে।

*আপগ্রেড করার জন্য বাড়তি খরচ লাগবে? লাগলে কত? -পুরোনো সংযোগ থ্রিজিতে আপগ্রেড করতে খরচ হবে ৬০০ টাকা।

*নতুন থ্রিজি সিম কিনতে কত টাকা লাগবে? নিয়ম কী?- সাধারণভাবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যেভাবে সিম কিনতে হয় একইভাবে থ্রিজি সিম কেনা যাবে। নতুন থ্রিজি সিম কিনতে খরচ লাগবে ৯০০ টাকা।

*থ্রিজি সংযোগ ব্যবহারের জন্য কী ধরনের সেট লাগবে?-থ্রিজি সমর্থন করে এমন সেট, ট্যাবলেটে সহজে ব্যবহার করা যাবে থ্রিজি সুবিধা। ভিডিও কলের ক্ষেত্রে দুই পাশের ক্যামেরা হলে ভালো। না হলে কথা বলার সময় একজন ন্যজনকে দেখতে পাবেন না।

উত্তর দিয়েছেনঃ
হাবিবুর রহমান, মহাব্যবস্থাপক
টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড


সূত্রঃ প্রথম আলো তারিখঃ ২১-১০-২০১২ ইং।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।