সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: ধূমপান ডায়াবেটিস ও মুখের স্বাস্থ্য

ধূমপান ডায়াবেটিস ও মুখের স্বাস্থ্য


Smoking attack

সাধারণত আমরা জানতাম যে ধূমপানের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ফুসফুসের ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগ হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, যারা দীর্ঘদিন ধূমপান করেন ভবিষ্যতে তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা আছে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ধূমপান শুধু যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায় তা নয়, এ রোগ নিয়ন্ত্রণ, স্বাভাবিক রাখাও কষ্টকর বা জটিলতর হয়ে পড়ে। গবেষণায় বলা হয়, ধূমপানের মাত্রা যতই বাড়ে ততই ডায়াবেটিস ঝুঁকির মাত্রা বাড়তে থাকে।


তথ্য অনুযায়ী যারা প্রতিদিন ২০টি সিগারেট পান করেন তাদের শতকরা ৫ ভাগ, যারা ২০-৪০টি সিগারেট পান করেন তাদের পুরুষদের ১৯ ভাগ ও মহিলাদের শতকরা ২১ ভাগ এবং যারা প্রতিদিন ২ প্যাকেটের বেশি ধূমপান করেন তাদের শতকরা ৪৫ ভাগ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এ ক্ষেত্রে মহিলাদের মাত্রা ৭৮ ভাগ। ধূমপায়ী ডায়াবেটিস রোগীদের কোনো ক্ষত শুকাতে বা অপারেশনের পর ঘা শুকাতে অধূমপায়ীদের তুলনায় অতিরিক্ত সময় লাগে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ধূমপানের কারণে দেহে ইনসুলিনের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায় এবং প্যানক্রিয়াটিক টিসুর উপর সরাসরি একটি বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতির কারণে শরীরে চর্বি জাতীয় উপাদানের বণ্টন বা বিতরণে তারতম্য হয়ে যায়। গবেষণায় বলা হয়েছে, নিকোটিন গ্রহণের ফলে দেহের চর্বিকে (লাইপোলাইসিস) মাত্রাতিরিক্ত ভেঙে ফেলে এবং ফলশ্রুতিতে ধূমপায়ীর রক্তের মধ্যে ফ্রিফেটি এসিডের পরিমাণও বেড়ে যায়। এর ফলে দেহে ইনসুলিনের সহনশীলতার মাত্রাও বাধাগ্রস্ত হয় যার প্রভাব লিভার, প্যানক্রিয়াস ও মাংসপেশির উপরও পড়ে। সিগারেটের এ নিকোটিন গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে এটা রক্তে মিশে যায় সেখান থেকে লিভারের মধ্যে নিকোটিনের অন্য রূপ কটিনিন নামে মিশে যায়। এসব কারণেই ধূমপায়ীদের ডায়াবেটিসে আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ে এবং মুখের বিভিন্ন রোগের সংক্রমণও লক্ষ্য করা যায়। যেসব ধূমপায়ীর ডায়াবেটিস হয় তাদের সাধারণত মাড়ির রোগ যেমন_ পেরিওডেন্টাল ডিজিজ, মুখের বিভিন্ন ধরনের ঘা ইত্যাদি বেশি হয়।


অনেক ক্ষেত্রে মুখের এসব রোগ নিয়ে ডেন্টাল সার্জনের কাছে সমস্যা দেখাতে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। শুধু ডায়াবেটিস রোগীদের চাইতে ধূমপায়ী ডায়াবেটিস রোগীদের জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ গুণ বেশি। বারডেম ডেন্টাল বিভাগে আগত রোগীদের মধ্যে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দুই বছরে ২ হাজার ৯৯৫ জন রোগীর মধ্যে ২ হাজার ৩৫৮ জন (শতকরা ৭৮.৭২) মাড়ির বিভিন্ন রোগ ও ৬৩৭ জন (শতকরা ২১.২৮) ডেন্টাল ক্যারিজে আক্রান্ত। এর মধ্যে মুখের অন্যান্য রোগ যেমন সাদা ক্ষত, ক্যানডিডিয়াসিস, ওরাল থ্রাস ও লিউকোপ্লাকিয়ার সংখ্যাও কম নয়।

অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরী
বিভাগীয় প্রধান
ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টিস্ট্রি
বারডেম হাসপাতাল।
ফোন :০১৮১৯২১২৬৭৮



সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২২-০২- ২০১৩ ইং


0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।