সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: বাংলাদেশের সংসদ ভবন

বাংলাদেশের সংসদ ভবন



বাংলাদেশের আইন সভার নাম হচ্ছে জাতীয় সংসদ। টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে এশিয়ার সেরা স্থাপত্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশের সংসদ ভবন। এর স্থাপত্য শিল্প যেকোন কারো মনযোগ আকর্ষন করতে সক্ষম। ১৯৬২ সালে লুই আই কান সংসদ ভবনের মূল নকশা প্রস্তুত করার পর এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯৬৪ সালে।
জাতীয় সংসদ ভবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য এর বিশালত্বের মাঝে নিহিত। মার্বেল পাথর সংযুক্ত বিপুল কংক্রিটের বহিঃ-দেয়ালের মাঝে মাঝে রয়েছে নিখুঁত জ্যামিতিক আকৃতির প্রবেশদ্বার। বৃত্তাকার ও আয়তাকার কংক্রিটের সমাহার ভবনটিকে দিয়েছে এক বিশেষ স্থাপত্যিক সৌকর্য যা এর মহান উদ্দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভবনের বর্গাকার নকশার হলেও এটি নিপুণভাবে অষ্টভুজের মধ্যে স্থাপিত হয়েছে। নয় তলাবিশিষ্ট হলেও অনুভূমিক যোগাযোগ রয়েছে মাত্র তিনটি তলায়। মাটির ওপরে কাঠামোটির উচ্চতা ৪৯.৬৮ মিটার। মূল ভবন কমপ্লেঙ্টির নয়টি স্বতন্ত্র বিভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে আটটি ৩৩.৫৩ মিটার এবং কেন্দ্রীয় অষ্টভুজাকার ব্লকটি ৪৭.২৪ মিটার উঁচু। কেন্দ্রীয় ব্লকটি ৩৫৪ আসন ধারণক্ষম অ্যাসেম্বলি কক্ষ নিয়ে গঠিত। সমগ্র কমপ্লেঙ্টির আয়তন হলো মূল ভবনে ৭৪,৪৫৯.২০ বর্গমিটার, দক্ষিণ প্লাজায় ২০,৭১৭.৩৮ বর্গমিটার এবং উত্তর প্লাজায় ৬,০৩৮.৭০ বর্গমিটার। দক্ষিণ প্লাজার মূল প্রবেশ পথটি একটি প্রশস্ত সিঁড়ির আকারে ধীরে ধীরে ৬.২৫ মিটার উচ্চতায় ওঠে গেছে। এর বেসমেন্টে রয়েছে পার্কিং এরিয়া, তত্ত্বাবধায়ক এজেন্সির অফিস ও মূল ভবনের সুবিধাদি প্রদানের জন্য স্থাপিত বিভিন্ন ব্যবস্থা।

১৯৮২ সালের প্রথম দিকে ভবনটির কাজ সম্পন্ন হয় এবং একই বছর ২৮ জানুয়ারি এর উদ্বোধন করেন। পৃথিবীর প্রায় সব স্থাপত্যবিষয়ক পত্র-পত্রিকায় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন আলোচিত হয়েছে এবং এটি আগা খান স্থাপত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। পুরস্কার প্রদানের সময় প্রকাশিত সম্মাননাপত্রে বিধৃত উক্তি এ প্রকল্পের একটি প্রকৃষ্ট মূল্যায়ন করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে 'অসাধারণ সামর্থ্যতায় স্থাপত্যিক গুরুত্বসহ অবয়ব ও সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ এ ভবনটি জুরিবোর্ড কর্তৃক প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এই বলে, এই গরিব দেশটির কাছে শেরেবাংলা নগরে স্থাপিত এর প্রয়োজন কতটুকু। তারপরও ভবনটির নকশা ও নির্মাণ পরিকল্পনা প্রকাশ করে যে কালক্রমে এটি ব্যাপক জনসমর্থন পেয়েছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে এটি দাঁড়িয়ে আছে এবং বিভিন্ন কল্যাণকর উপায়ে দেশটিকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছে।


সূত্রঃ বাংলাদেম প্রতিদিন, ১৭-০৭-২০১৩

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।