Great Wall of China কে পৃথিবীর সবচেয়ে বড়
স্থাপত্য বলা হয়। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতক থেকে ষোড়শ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চীনের উত্তর সীমান্ত
রক্ষার জন্য পাথর ও মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল অনেকগুলো দীর্ঘ প্রাচীর সারি। চীনের প্রথম সম্রাট কিং শি হুয়াপাং এটি ব্যবহার
করেছিলেন। ধারণা করা হয়, তিনি শত্রুর হাত থেকে নিজের সাম্রাজ্য রক্ষার জন্য
দীর্ঘ করে নির্মাণ করেছিলেন। এর মধ্যে ২২০ থেকে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে
চীনের প্রথম সম্রাট কিং শি হুয়াপাংয়ের আদেশে নির্মিত প্রাচীরটিই সবচেয়ে বিখ্যাত। এটি বর্তমান প্রাচীরের অনেক উত্তরে অবস্থিত
এবং এর খুব সামান্যই এখনো অবশিষ্ট আছে। বর্তমান প্রাচীরটি নির্মিত হয়েছে মিং রাজবংশের
শাসনামলে।
চীনের মহাপ্রাচীরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়
খ্রিস্টপূর্ব ২১৪ অব্দে এবং শেষ হয় ১৬ শতকে। চীনের মহাপ্রাচীরের ইংরেজি নাম 'গ্রেট ওয়াল অব চায়না'। এর দৈর্ঘ্য ছয় হাজার ৪০০ কি.মি বা চার হাজার মাইল।
চীনের প্রাচীর বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় ১৯৮৭ সালে। এ প্রাচীরের উচ্চতা ৫ থেকে ৮ মিটার
আর লম্বায় ছয় হাজার
৫৩২ কিলোমিটার। এ প্রাচীরের মূল অংশের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ২০৮ সালের দিকে।
শুরু করেছিলেন চৈনিকরা, কিং সাম্রাজ্যের সময়।
প্রতিদিন লাখ লাখ পর্যটক বিস্মকর এ
প্রাচীন স্থাপত্য দর্শনে
ভিড় জমান। চীনের মহাপ্রাচীরের মোট দৈর্ঘ্য নিয়ে মতভেদ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে
এ প্রাচীর নির্মিত হয়েছে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় ১৮০ মাইল প্রাচীরের সন্ধান মিলেছে।
যার অস্তিত্ব আগের হিসেবে গণণা
করা হয়নি। চীনের স্টেট ব্যুরো অব সার্ভেইং অ্যান্ড ম্যাপিং ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে
দুই বছর সমীক্ষা চালিয়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্যানসু প্রদেশের জিয়াওপাস থেকে উত্তরাঞ্চলীয় লিয়াওনিং প্রদেশের হু মাউন্টেম পটং ১৮০ মাইল দীর্ঘ
প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এটাই প্রতীয়মান হয় যে, চীনের মহাপ্রাচীর
ইতিপূর্বে করা ধারণার চেয়েও
বেশি দীর্ঘ।
চায়না ডেইলির এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন করে প্রাচীরের যে অংশের সন্ধান
পাওয়া গেছে তার নির্মাণকাল মিং রাজবংশের শাসনামলে। অর্থাৎ ১৩৬৮ থেকে ১৯৪৪ সালের যে
কোনো একসময় প্রাচীরের ওই অংশ
নির্মিত হয়। ঐতিহাসিকদের মতে, মঙ্গোলীয়দের হামলা এ মরুময় এলাকার বালুকা ঝড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তৎকালীন
সিংরাজবংশ প্রাচীরের ওই অংশ
নির্মাণ করে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পর্বতময় অপর এলাকায় প্রাচীরের আরও প্রাচীনতম অংশের
সন্ধান মিলতে পারে। সে লক্ষ্যেই সমীক্ষা কাজ অব্যাহত রয়েছে। চীনের এই প্রাচীর হাজার বছর
ধরে পৃথিবীর মানুষের কাছে একটি
অপার বিস্ময় হয়েই আছে।
রণক ইকরাম
সূত্রঃ বাংলাদেম প্রতিদিন, ১৮-০৭-২০১৩
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।