সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: Hot or Cold Water- গোসলে ঠাণ্ডা পানি নাকি গরম পানি দরকার

Hot or Cold Water- গোসলে ঠাণ্ডা পানি নাকি গরম পানি দরকার




বিজ্ঞানীরা সহনীয় পর্যায়ের উষ্ণ পানিতে গোসল করাটা উত্তম বলে মনে দেন। তাই বলে ঠান্ডা পানিতে (স্বাভাবিক তাপমাত্রা) গোসল করা যে ক্ষতিকর তা কিন্তু নয়। বরং ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে উপকৃত হবেন এমন ৭টি বিষয় দেওয়া হলো। আবার গরম পানিতে এই ৭টি সুবিধা যে অপকারে পরিণত হবে, তাও কিন্তু নয়। গরম পানিতেও নানা সমস্যার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ নিয়ে নানা জনের বিভিন্ন মতামত রয়েছে। বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনাদের সঠিক তথ্যটি দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। অবশ্য তারা নিশ্চিত করে বলছেন যে, গরম পানির গোসল হচ্ছে জলচিকিৎসা, যা সব সময়ই ভালো। তবে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে যদি এর ব্যবহারে গড়বড় করে ফেলেন।
ঠান্ডা পানিঃ

১. দেহের রক্ত প্রবাহমাত্রা বাড়িয়ে দেয়: মানুষের ত্বক ঠাণ্ডা পানির স্পর্শ পাওয়া মাত্রই সঙ্কুচিত হয়ে আসে। কারণ এসময় ত্বক কিছুটা তাপমাত্রা হারায়। ফলে রক্ত চলাচল কিছুটা ধীর গতিতে হতে থাকে। আবার এ কারণেই রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং শিরা-উপশিরায় দ্রুত গতিতে ধাবিত হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত রক্ত চলাচল আরো বেড়ে যায়।

২. পুরুষের শুক্রাণু পরিপূর্ণতা পায়: অনেকেই হয়তো এ তথ্যটি জানেন না। ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে পুরুষের শুক্রাণু বৃদ্ধি পায়। কারণটি হলো, পুরুষের বীজাণু ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় দ্রুত পরিপূর্ণতা লাভ করে। আর তাদের জন্য এ পরিবেশটি দেয় ঠাণ্ডা পানি। আবার বিপরীতটাও ঘটে। অর্থাৎ, গরম পানি শুক্রাণু বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। তবে তা এর জন্মকে বাধাগ্রস্ত করে না।


৩. সহজাত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বৃদ্ধির সুফল: ঠাণ্ডা পানি গায়ে ঢাললে শীত লাগে। কারণ ত্বক তার স্বাভাবিক তাপমাত্রা হারায়। বাইরের পরিবেশের তাপমাত্রার সাথে মানাসই হতে তখন দেহ নিজেই তাপ উৎপন্ন করে। এর জন্য কিছু কার্বহাইড্রেট পোড়াতে হয়। গোটা ঘটনা দেহের সহজাত রাসায়নিক প্রক্রিয়া। আর এই রাসায়নিক প্রক্রিয়াটিকে সচল রাখা ভাল।


৪. প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: রক্তের শ্বেত কণিকা বাড়াতে চাইলে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করুন। ঠাণ্ডা ত্বক নিজেই তাপ উৎপাদনের সময় অধিক পরিমাণে শ্বেত কণিকার জন্ম দেয়। আর রক্তের এ কণিকা হলো আপনার দেহের সেনাবাহিনী। যেকোনো রোগের আক্রমণ ঠেকাতে এরাই যুদ্ধ করে।


৫. পেশীর ক্ষত নিরাময় করে: পরিশ্রমের সময় পেশীর কাজ হয়। তখন এর সূক্ষ্ম টিস্যুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদের আবার পূর্বের সুস্থতা ফিরিয়ে দিতে বিশ্রামের দরকার। ঠাণ্ডা পানি পরিশ্রমের পর পেশীকে আরাম দেয়।


৬. দেহের স্বাচ্ছন্দ্য ফিরিয়ে আনে: ঠাণ্ডা পানি মুহুর্তেই দেহে সজীবতা ফিরিয়ে আনে। যাদের ঘুমের সমস্যা হয় তারা উপকার পেতে পারেন।


৭. অন্যান্য উপকারিতা: পুরনো কিছু ব্যাথা কমে আসতে পারে, চুলকানি দূর হয়, চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পায়, দেহের অস্বস্তিকর উত্তেজনা প্রশমিত হয় এবং কিছু স্নায়বিক দুর্বলতা দূর হয়। সূত্র: ইন্টারনেট   

গরম পানিঃ

শীতকাল জেঁকে বসছে ধীরে ধীরে। প্রতিদিনের গোসলে এখন আমাদের গরম পানি বনাম ঠাণ্ডা পানির চিন্তা-দুশ্চিন্তায় ভুগতে হবে। শীতের দিনে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিও ঠাণ্ডা থাকে। দুপাটি দাঁতের বাড়ি খেতে খেতে এ পানি দিয়ে গোসল করা রীতিমতো কষ্টসাধ্য ব্যাপার। গরম পানিতে গোসল করলে উপকৃত হবেন এমন কয়েকটি বিষয় দেওয়া হলো।


অতিরিক্ত গরম হবে না: অবশ্যই সহনীয় পর্যায়ে আরামদায়ক উষ্ণতার পানিতে গোসল সারতে হবে। তাপমাত্রা সঠিক থাকলে এ গোসল আপনাকে প্রশান্তি এনে দিবে। সব জ্বরা আর ক্লান্তি ধুয়ে নিয়ে যাবে উষ্ণ পানি। কিন্তু সাবধান! তাপমাত্রা মাত্রাতিরিক্ত হলে অবসাদ একলাফে মাথায় চড়ে বসতে পারে। অতি গরম পানিতে গোসলের পর ঘুম হারাম হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে ইনসমনিয়ায় যারা ভোগেন, তাদের জন্য অধিক উষ্ণতায় গোসল আত্মহত্যার সামিল। আর গর্ভবতী নারীদের ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ওপরে ওঠা উচিত নয়।


অধিক উষ্ণতায় ঘাম বের হয়: মানুষের শারীরবৃত্তীয় অনেক কাজ আছে যা করতে গেলে দেহে বেশ ভালো পরিমাণ তাপমাত্রার উদয় হয়। মেদ কমাতে ক্যালরি খরচের জন্য ব্যায়াম করলে ঘাম ঝরে। আবার অনেকে অধিক গরম পানিতে ঘাম ঝরানোর কথা বলেন। কিন্তু পরিশ্রমের পর বেশি গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে ডিহাইড্রেশনের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। আবার স্বাভাবিক পানি এবং অধিক উষ্ণ পানির ব্যবহার আরো বিপজ্জনক। হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সহনীয় গরম পানি যদি আপনার স্বাভাবিক পরিমাণ ঘাম ঝরাতে পারে, তবে তা ভালো ফল দেবে।


মাথা ঠাণ্ডা রাখুন: গরম পানিতে অনেকেরই হালকা মাথাব্যাথা বোধ হতে পারে। সতেজ ভাব নষ্ট হয়ে যায় অনেকের। এ সমস্যা যাদের হয়, তারা মাথা বা হাত বা পা অথবা তিনটিই গরম পানি থেকে দুরে রাখবেন। কারণ দেহের সব স্থানে ভিন্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে। অধিক তাপ সাধারণত দেহের ওই তিন অংশ দিয়ে বের হয়ে যায়। অন্যথা কৃত্রিম জ্বর হতে পারে। তাই গরম পানির গায়ে ঢালুন। আর ঠাণ্ডা পানি হাতে, পায়ে আর মাথায় নিন। তবে এর পরও দেহের তাপমাত্রা বেশি থাকতে পারে। তবুও সেক্ষেত্রে মানসিক বিষাদের ঘনঘটা কিছুটা হালকা মনে হবে।


উষ্ণ পানির সাথে হালকা ম্যাসাজ: ঈষদুষ্ণ পানির সাথে হালকা ম্যাসাজ করে মাসলকে স্বস্তি দিতে পারলে আরাম পাবেন। এই ম্যাসাজ  পদ্ধতির সবচেয়ে উত্তমটি হচ্ছে 'বল বাথ ট্রিক' সাধারণ ব্যাপার, একটি বল দিয়ে শরীরের নানা স্থানে আলতোভাবে ডলতে থাকুন। বাথটাব থাকলে তা পানি ভর্তি করে দুটি বল নিচে রেখে শুয়ে পড়ুন এবং দেহটাকে আগ-পিছ করুন। তবে অনেকে টেনিস বল ব্যবহার করেন। এতে করে বলের আকার বড় হওয়ার ফলে পিঠে বেশি পরিমাণ চাপ পড়ে। ফলে হালকা ব্যাথা হয়ে যেতে পারে। কাজেই একটু ছোট আকারের নরম বল ব্যবহার করলে তা বেশি কার্যকর হবে।


উষ্ণ পানির গোসলে আড়মোড়া ভাঙা: মূলত আড়মোড়া ভাঙা বা স্ট্রেচ করা যতটা উপকারী বলে মনে হয়, আসলে ততটা নয়। আবার উপকারহীনও বলা যায় না। এতে পেশির নানা ব্যাথা দূর হতে পারে। গরম পানির গোসলে স্ট্রেচ বাড়তি কিছু আরাম যোগ করতে পারে। যেমন, আনুভূমিক অবস্থায় বসলে বা শুয়ে থাকলে পেশী কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে। ব্যাক পেইন অর্থাৎ পিঠের ব্যাথায় উপকার আসতে পারে। দেহের পেশীগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনের টিস্যুগুলো উষ্ণতায় কিছুটা নরম হতে পারে যাকে 'থিক্সোট্রপিক ইফেক্ট' বলে; ঠিক যেভাবে তাপমাত্রায় প্লাস্টিক নরম হয়ে আসে। দেহের স্নায়ুতন্ত্রের কিছু অবাধ্য আচরণকে কিছুটা সংযত করে দিতে পারে। দেখা গেছে, স্ট্রেচিংয়ের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন পেশী বা অঙ্গের নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়। এটা আসলে নড়াচড়ার সময় পেশীর বাধাপ্রদানকে কমিয়ে দেয়। এতে টিস্যুর কোনো পরিবর্তন হয় না। কিন্তু এর সাথে পানির তাপমাত্রা ভালো কিছু দিতে পারে।


গরম পানিতে ঈপসম লবণ ব্যবহার কি ভালো?: অনেকে মনে করেন, গরম পানিতে ঈপসম লবণ দেহের হালকা ক্ষত, চুলকানি এবং মৃদু ব্যাথা সারিয়ে দেয়। সম্ভবত এ তথ্যটি সঠিক নয়। তবে গোসলের সময় এ লবণকে শুষে নেয় ত্বক। তখন ভিন্ন অনুভূতি জাগতে পারে। কিন্তু এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয় যে, এ লবণ ত্বকে প্রবেশ করে ব্যাথা-বেদনা উপশম করে। এমনকি এটিও জানা যায়নি যে, লবণ দেহে প্রবেশ করে কোনো ক্ষতি করে কিনা।


ঘন শ্বাস-প্রশ্বাসের আবির্ভাব: গরম পানিতে গোসলের সময় অনেকের ঘন এবং ভারী নিঃশ্বাস নিতে হয়। এটি ক্ষতিকর কোনো বিষয় নয়। গরম পানির বাষ্প এবং তাপমাত্রার সাথে রক্তের ক্রিয়াকলাপে শ্বাস ভারি হয়ে আসতে পারে। এর মাধ্যমে টেনে নেওয়া গরম বাষ্প আবার বের হয়ে আসে। খেয়াল করলে বুঝবেন, এই ভারী শ্বাস-প্রশ্বাসের আসা যাওয়া এক ধরনের আরামদায়ক অনুভূতি দেয় আপনাকে। তবে তা স্বাভাবিকভাবে এবং হালকা মেজাজে করাই ভালো। সূত্র: ইন্টারনেট



0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।