সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: ভ্রমণে ডায়াবেটিক রোগীর সতর্কতা

ভ্রমণে ডায়াবেটিক রোগীর সতর্কতা


ডায়াবেটিস আছেতাই বলে কি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করবেন না? বিশেষ করে প্রতিবছর এই সময়ে আমাদের দেশ থেকে অনেকে হজ পালন করতে যানডায়াবেটিসের ওষুধ বা ইনসুলিন নিয়ে কী করবেন তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেকেইডায়াবেটিক রোগীর ভ্রমণকালীন সতর্কতা নিয়ে রয়েছে কিছু দিকনির্দেশনা


ভ্রমণের আগেই সচেতন হোন
বেশ কিছুদিনের জন্য বাড়ির বাইরে যাবেন বা বিমানে লম্বা দূরত্ব অতিক্রম করবেনএমন পরিকল্পনার পর ভ্রমণের অন্তত চার সপ্তাহ আগে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করুনপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে নিনচোখ, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ইত্যাদির কোনো জটিলতা আছে কি না জেনে নিনরক্তে শর্করার মাত্রা অনুযায়ী ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক করে নিনসম্ভব হলে চিকিৎসককে আপনার ভ্রমণবৃত্তান্ত জানানকতক্ষণ বিমানে থাকবেন, কটায় ছাড়বে বা পৌঁছাবে এবং কতক্ষণ ট্রানজিট

সঙ্গে কী কী নেবেন?
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন ভ্রমণকালে ডায়াবেটিক রোগীদের যা যা নিতে বলছে তা হলো:
১. যথেষ্ট পরিমাণ ইনসুলিন, সুই, পেন ডিভাইস, মুখে খাবার ওষুধ|
২. রক্তে শর্করা পরিমাপক যন্ত্র, সুই, স্ট্রিপ, অতিরিক্ত ব্যাটারি|
৩. চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র, ডায়াবেটিক আইডি কার্ড যদি থাকে|
৪. শুকনো খাবার, যেমন বিস্কুট, ক্র্যাকার্স, বাদাম বা শুকনো ফল, ক্যান্ডি বা শুকনো চকোলেটের মতো খাবার বায়ুরোধী দৃশ্যমান পলিথিন প্যাকেটে নিতে হবে

ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ইনসুলিন বা ওষুধ বা যেকোনো ইনজেকশন বোতল তার প্রকৃত প্যাকেটে নিতে হবে, যাতে লেবেল ও কোম্পানির নাম স্পষ্ট লেখা আছেখুলে নিয়ে আলাদা প্যাকেটে নেবেন নাসঙ্গে কাগজপত্র অবশ্যই রাখতে হবে যেন কর্তৃপক্ষ চাইলেই দেখানো সম্ভব হয়ওষুধপথ্য লাগেজে না দিয়ে হাত ব্যাগে নেওয়া ভালোএতে হারিয়ে যাওয়ার বা অতিরিক্ত বা অতি ঠান্ডা তাপমাত্রায় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কমবিমানের ভেতর তাপমাত্রায় ইনসুলিন নষ্ট হয় না, বিমানবন্দরের তল্লাসি যন্ত্রেও ইনসুলিন নষ্ট হয় না

যখন সময় পেরিয়ে যাচ্ছে
বিমান ভ্রমণে দিকের কারণে সময়ের হের-ফের হয়ফলে দুটি ডোজ কখনো বেশি কাছাকাছি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকেএতে শর্করা কমে যেতে পারেসাধারণ নিয়মে আপনি যখন পূর্বদিকে যাচ্ছেনযেমন পশ্চিমের কোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে আসছেন তখন সময় সংকুচিত হচ্ছে, দিন কমে যাচ্ছেতাই আপনার ভ্রমণকালীন ডোজ কমাতে হবেআবার যখন প্রাচ্য থেকে পশ্চিমে যাচ্ছেন, তখন দিন যাচ্ছে বেড়ে, ডোজ বাড়াতে হতে পারেতবে এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালোযাঁরা দীর্ঘ ভ্রমণ করবেন তাঁদের জন্য অল্প সময় কাজ করে বা র্যাপিড অ্যাকটিং ইনসুলিন ভালোভ্রমণকালে আপনার ঘড়ির সময় আগের মতোই রাখুনএতে কতটা সময় পেরোলেন বুঝতে সুবিধা হবেপ্রয়োজনে বিমানে বসে শর্করা মাপুনখাবার পরিবেশন করতে শুরু করলে তারপর ইনসুলিন নিনঅন্তত দুই দিন আগে আপনি জানিয়ে দিতে পারেন যে বিমানে কী ধরনের খাবার চানসুগার বা ফ্যাট ফ্রিট্রানজিট দীর্ঘ হলে সেখানে অবশ্যই খেতে হবেপানিশূন্যতা রোধে যথেষ্ট পানি পান করুন, অ্যালকোহল বা কফি এড়িয়ে যানদীর্ঘ ভ্রমণে কয়েক বার উঠে হাঁটাহাঁটি করুন বা পায়ের ব্যায়াম করুন


ডা. তানজিনা হোসেন
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিভাগ
বারডেম হাসপাতাল|


সূত্রঃ প্রথম আলো, ০১:১৩, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৪

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।