সুস্বাদু ও পুষ্টিকর শীতকালীন শাক সবজির মধ্যে অন্যতম সবজি
গাজর। গাজর ভিটামিন ও মিনারেল যেমন, থায়ামিন, নিয়াসিন, ভিটামিন বি৬, ফলেইট এবং ম্যাংগানিজে ভরপুর একটি
সবজি যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি জরুরী। এছাড়াও গাজরে আছে ফাইবার, ভিটামিন
এ, ভিটামিন
সি, ভিটামিন কে ও পটাশিয়াম। অর্থাৎ আমাদের দেহকে সুস্থ সবল
রাখতে যে সব ভিটামিন ও মিনারেলস দরকার তার সবই রয়েছে এই গাজরে। গাজরকে সেকারণে
বলা হয় সুপারফুড। শুরু তাই নয় গাজরের রয়েছে ৬ টি মারাত্মক শারীরিক সমস্যা
সমাধানের দারুণ ক্ষমতা।
১) লিভার সুস্থ রাখে
গাজর একটি টক্সিন মুক্তকারি খাবার হিসেবে পরিচিত। এইধরনের
খাদ্য লিভার সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। গাজর লিভারকে পরিস্কার
করে। লিভারজনিত সকল ধরনের রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। গাজর লিভারে জমে থাকা
মেদ দূর করে লিভারজনিত নানা সমস্যা দূরে রাখে।
২) কার্ডিওভ্যস্কুলার রোগ প্রতিরোধ করে
গবেষণায় দেখা যায়, যারা কোলেস্টোরলের সমস্যায় ভোগেন তারা যদি প্রতিদিন ১টি
করে গাজর খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন তবে কোলেস্টোরলজনিত বেশীরভাগ রোগ থেকে
মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কারণ গাজরে রয়েছে আলফা ক্যারোটিন, বিটা
ক্যারোটিন ও লুটেইন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা কোলেস্টোরলের বিরুদ্ধে কাজ
করে ও হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। এছাড়াও গাজরে বিদ্যমান ফাইবার দেহের
খারাপ কোলেস্টোরল শুষে নেয়। এতে দেহে কোলেস্টোরলের মাত্রা ঠিক
থাকে এবং হৃৎপিণ্ডকে কোলেস্টোরলজনিত প্রায় সকল ধরনের রোগ থেকে বাঁচায়।
৩) চোখের সুরক্ষায় কাজ করে
গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। ভিটামিন এ চোখের
সুরক্ষায় কাজ করে। এছাড়াও গাজরের বিটা ক্যারোটিন লিভারে ভিটামিন এ তে
পরিনত হয় যা সরাসরি রেটিনায় পৌছায়। যা রেটিনা থেকে রডোস্পিনে পৌঁছে যায়।
রডোস্পিন একটি হালকা বেগুনি রঙের পিগম্যান্ট যা রাতেরবেলায় আমাদের
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। সুতরাং গাজর রাতকানা রোগ থেকে আমাদের মুক্ত রাখে।
৪) ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
গবেষণায় দেখা যায় গাজরের মধ্যে রয়েছে ফুসফুস, স্তন ও
কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা। ফ্যালক্যারিওনল ও ফ্যালক্যারিনডিওল
দুটি ক্যান্সার প্রতিরোধী যৌগ যা দেহে ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান
করে। গাজরে এই দুটি যৌগ প্রাকৃতিকভাবেই রয়েছে। প্রতিদিন গাজর খাওয়ার
অভ্যাস দেহকে ভেতর থেকে ক্যান্সার প্রতিরোধী করে গড়ে তোলে। এছাড়া গাজর চামড়ার
ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে। গবেষকদের মতে যারা নিয়মিত গাজর খান তাদের
প্রায় ৭০% মানুষ চামড়ার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যান।
৫) বয়সের ছাপ দূর করে
গাজরে বিদ্যমান বিটা ক্যারোটিন ত্বকের ক্ষতিপূরণ করে এবং
ত্বকের টিস্যু নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। বিটা ক্যারোটিন খুব
ভালো একটি অ্যান্টিএইজিং উপাদান যা ত্বকের বয়সজনিত দাগ ও রিঙ্কেল দূর
করে। গাজর খেলে ত্বকে বয়েসের ছাপ ধীরগতিতে আসে। গবেষকদের মতে সপ্তাহে ৬টি
গাজর ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে বিশেষভাবে কার্যকরী।
৬) দাঁতের সুরক্ষা করে
চোখের পাশাপাশি দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় গাজরের গুরুত্ব
অনেক বেশি। গাজর খেলে দাঁত পরিস্কার হয়। দাঁতে জমে থাকা প্লাক দূর হয়।
ডাক্তাররা বলেন গাজর খাওয়ার সময় আমাদের মুখে স্যালাইভার নিঃসরণ ঘটে যা
মুখের ভেতর অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে। এতে করে দাঁত ক্ষয়ের জন্য দায়ী
ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। প্রতিদিন একটি করে গাজর খাওয়ার অভ্যাস দাঁতের
মাড়ি ও দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে।
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিয়া টাইমস
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।