সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: দ্বীপগ্রাম কাট্টলি বিল

দ্বীপগ্রাম কাট্টলি বিল



 

জলাভূমি আর নীল আকাশের নিচে নিঃশব্দেই জেগে আছে কাট্টলি বিলের অনেকগুলো দ্বীপকাপ্তাই লেকের বিস্তৃত জলরাশির মাঝখানে এই দ্বীপগুলোতে গড়ে উঠেছে মানুষের বসতি

মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে দ্বীপের বুকে গড়ে উঠেছে বাজারজেলেদের নৌকা মেরামতের সরঞ্জাম আর শুটকিপল্লি গড়ে উঠেছে এই বাজারেকাট্টলি বিলের দূরত্ব রাঙামাটি সদর থেকে পানিপথে প্রায় চার ঘণ্টাএকমাত্র বাহন লঞ্চ বা দেশিবোটআমাদের অবশ্য যাত্রাপথ ছিল লংগদু হয়েলংগদু থেকে কাট্টলি বিল দ্বীপের দূরত্ব প্রায় দুই ঘণ্টারমতো

 সকালের কুয়াশা মোড়ানা স্নিগ্ধতাকে সঙ্গী করে মোটরবাইকে রওনা হলাম দিঘীনালা থেকেআঁকাবাঁকা সরু পাহাড়ি পথ পেরিয়ে এক ঘন্টায় পৌঁছে যাই লংগদু বাজারেরাঙামাটির পুরানো বাজারগুলোর মধ্যে অন্যতম লংগদু বাজারপাশেই মায়ানী মুখ, যেখানে কর্ণফুলীর উপনদী কাছালং মিশেছেমায়ানী নদীর মুখে গড়ে ওঠা মাইনী বাজার এই অঞ্চলের পুরান এবং প্রধান বাজারবাজারের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী বাঙালিমায়ানী মুখ পেরিয়ে রাঙামাটির দিকে যেতেই সুমদ্রের মতোই বিশাল জলরাশির বুকে দ্বীপের মতো কাট্টলি বাজারচারপাশে লেকের নীল জলরাশি জুড়ে শীতের আগমনী জানিয়ে দেয় মিষ্টি কুয়াশালেকের এই অংশজুড়ে মাছধরা নৌকার সারিপানকৌড়ি আর নানান জাতের পাখির ঝাঁক বিলের চারপাশেআসলে শীতের পাখি দেখতেই কাট্টলি বিলে আগমনমাছের প্রাচুর্যের কারণে কাট্টলি বিল পাখিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়ছোট সরালি, টিকি হাঁস, বড় সরালি, মাথা মোটা টিটি, গাঙচিল, গাং কবুতর, চ্যাগা, চখাচখিসহ নানান প্রজাতির পাখির ঝাঁকে মুখরিত পুরো বিলদেশিবোটে করে রওনা হলাম লংগদু ঘাট থেকে- যাত্রী সংখ্যা ১২জননীল জলরাশির বুক চিড়ে ঢেউ তুলে চলেছে ইঞ্জিনচালিত বোটজল শুধু জলপাড়ি  যেন গেছে ভেসে, মাঝপথে শুধু ছোট ছোট দ্বীপ আর দূরে পাহাড়ের সারি। মাঝখানের এই দ্বীপগুলোতে মাত্র দুএকটি পরিবারের বসবাস। 

বর্ষায় এসব দ্বীপ পানির নিচে থাকেতাই প্রত্যেক পরিবারের যোগাযোগের জন্য একটা করে নৌকা আছেজলের জীবন দেখতে দেখতে চলেছি কাট্টলি বিলের দিকেদেখি দূরের পাহাড়গুলোকে চুম বুলিয়ে নীল মেঘ অবারিত জলরাশিকে নিজের রংয়ে রাঙিয়ে দিয়ে ভেসে বেড়ায়জলের বুকে মাঝে মাঝে ভেসে ওঠে পরিযায়ী পাখির ঝাঁকবেশ কয়েক বছর ধরে অতিথি পাখির সমাগম ঘটে কাট্টলি বিলেএই বিলে পাখি শিকার কমে যাওয়ায় পরিযায়ী পাখির সংখ্যাও বেড়েছেপাখির ঝাঁক দেখলেই বোটের গতি কমানো হয় যাতে পাখি উড়ে না যায়দেখতে দেখতে দুপুর নাগাদ পৌঁছে যায় কাট্টলি বিলেলেকের নীলাভ স্বচ্ছ ঠাণ্ডা জলে দীর্ঘ স্নান শেষে তিন থেকে চার পদের তাজা মাছ সমেত মধ্যাহ্ন ভোজ সারলাম বাজারের শাহজাহান ভাইয়ের দোকানেপরিতৃপ্তির স্বাদ নিয়ে কাট্টলি বিল থেকে আবার যখন রওনা হলাম লংগদুর পথে ততক্ষণে সোনালী সূর্য সোনা রঙা আলোয় চরাচরকে মুড়িয়ে দিয়ে মুখ লুকিয়েছে পাহাড় ঘেষা লেকের জলে

যেভাবে যাবেন
কাট্টলি বিল যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে রাঙামাটি অথবা লংগদু উপজেলা সদরেঢাকা থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাস যায় রাঙামাটিতেআর রাঙামাটি থেকে সকালে মারিশ্যা এবং লংগদুর পথে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোতে করে কাট্টলি বিলে যাওয়া যাবেসবচেয়ে ভালো হয় যদি লংগদু হয়ে যানএক্ষেত্রে রিজার্ভ দেশিবোট নিতে পারেনভাড়া ১ হাজার ২শথেকে ১ হাজার ৫শটাকা

প্রয়োজনীয় তথ্য
যদি সাঁতার না জানেন তবে পানিতে নামবেন না, লেকের পানি বেশ গভীরলাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করতে পারেনকাট্টলি বিলে রাতে থাকার কোনও সুযোগ নেইবিকেলেই ফিরে আসতে হবে
কাট্টলি বিল বিষয়ক যে কোন তথ্য ও সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন: ০১৫৫৬-৭১০০৪৩, ০১৮১৫৮৫৬৪৯৭ (সিএইচটি ট্র্যাভেল)


1 টি মন্তব্য:

  1. মাঈনমুখ যাওয়ার পথে এই জায়গাটা পড়ে। ছোট্ট, তবে খুব সুন্দর। আর ভ্রমনটা অবশ্যই দারুন লাগবে।

    উত্তরমুছুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।