সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: ভালো মা–বাবা হতে চান?

ভালো মা–বাবা হতে চান?



ভালো ও আদর্শ মা-বাবা হওয়ার জন্য কত চেষ্টা থাকেসব মা-বাবা সন্তানের সুন্দর ভবিষ্য চানঅনেক সময় তাঁরা নিজেদের অজান্তে এমন কিছু করে ফেলেন, যা সন্তানের জন্য মঙ্গলজনক হয় নামা-বাবার চিন্তা ও আচরণের ওপর ভিত্তি করে চারটি ধরন দেখা যায়:
১.কর্তৃত্বপরায়ণ(অথরেটেরিয়ান)
২. পারমিসিভ (সন্তানকে কোনো নিয়মের মধ্যে রাখতে পারে না, একেবারেই সন্তানের সব ইচ্ছার কাছে নতিস্বীকার করে)
৩. আনইনভলব (সন্তানের ভালো-মন্দ কোনো দিকেই নজর দেয় না, সন্তানের সঙ্গে একরকম দূরত্ব থাকে)
৪. অথরেটেটিভ (এই ধরনের বাবা-মায়েরা শাসন ও স্নেহের ভারসাম্য রেখে চলেন, সন্তানকে নিয়মের মধ্যে রেখে তাকে পর্যাপ্ত স্বাধীনতাদেন, যা সন্তানের সুস্থ বিকাশের সহায়ক)

এই চার ধরনের মধ্যে শেষের ধরনের বাবা-মায়েরা আদর্শ বাবা-মাতবে বাস্তবতা হচ্ছে, কোনো বাবা-মা সব সময় একটা ধরনের মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন নাপরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে তাঁরাও মাঝেমধ্যে অযাচিত আচরণ করে ফেলেন, যা সন্তানের জন্য ক্ষতিকরসন্তানের বিকাশে মা-বাবার ভালো আচরণ যাকে আমরা বলি গুড প্যারেন্টিংতার জন্য বাবা-মাকে যে বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ রাখতে হবে: ভালো বাবা-মা হতে হলে আগে ভালো স্বামী-স্ত্রী হতেই হবেসন্তানের সামনে বাবা-মা একে অন্যকে তাচ্ছিল্য বা অপমান করবেন নাঝগড়া-বিবাদ,মারামারিতোনয়ইসন্তানকে ভালোবাসা শেখাতে হলে সন্তানের পাশাপাশি আপনার স্ত্রী বা স্বামীর প্রতি ভালোবাসাদেখান,সন্তানযাতেবুঝতেপারেতারবাবা-মাপরস্পরকেভালোবাসেনসন্তানের সামনে পরিবারের অন্য সদস্য, তার শিক্ষক, সহপাঠী বা গৃহকর্মীর সমালোচনা বা তাদের প্রতি বিরূপ আচরণ করবেন না

সন্তানের দৈনন্দিন কাজের দায়িত্ব দুজনকে ভাগ করে নিতে হবেএ নিয়ে একে অন্যকে দোষারোপ করবেন নাসন্তানের সঙ্গে খেলুন, তাকে যতটুকু সময় দেবেন, তা যেন খুব গুণগত হয়। সন্তানের ছোটখাটো দোষ-ত্রুটিকে বড় করে দেখবেন না, কথায় কথায় সন্তানকে তাচ্ছিল্য, তুলনা করবেন না। পরিবারে বয়োজ্যেষ্ঠ কেউ থাকলে (দাদা, নানা, দাদি, নানি) তাঁদের প্রতি বাবা-মাকে পর্যাপ্ত সম্মান দেখাতে হবে, অন্যথায় সন্তানের মনে শ্রদ্ধা বোধ জন্ম নেবে না। বাবা-মাকে নৈতিক দিক থেকে শক্ত হতে হবেসন্তানের কাছে বাবা-মা সব সময় এক আদর্শ মডেল বা সুপার হিরোএকটা সময় যদি সন্তান আবিষ্কার করে তার বাবা-মা একজন দুর্নীতিপরায়ণ বা অস, তখন তার মনে তীব্র দ্বন্দ্ব তৈরি হয় সে বিষণ্নতা, মাদকাসক্তি নানা সমস্যায় আক্রান্ত হয়

রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক নিয়ম মেনে চলুন, তাহলে সন্তানেরা আপনাকে অনুসরণ করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবেবাড়িতে সুস্থ বিনোদনচর্চার চেষ্টা করুন, বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুনকেবল ইলেকট্রনিক গেজেটে দিয়ে সন্তানকে খুশি করার চেষ্টা করবেন না, বিনোদনের অন্যান্য মাধ্যমের সঙ্গে তাকে পরিচিত করান। সন্তানের কোনো বিষয় নিয়ে মতানৈক্য হলে নিজেরা বিবাদে লিপ্ত না হয়ে একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিন। সন্তানের কোনো অপরাধ একে অন্যের কাছে গোপন করবেন নাবিষয়টি সংশোধনের জন্য সন্তানকে বুঝিয়ে বলুনসন্তানকে নিয়ম মেনে চলতে বলে নিজেরা নিয়মের বাইরে থাকবেন না। সন্তান লালনে নিজেদের কোথাও সমস্যা হচ্ছে মনে করলে পেশাদার বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে পারেন


লেখক: মনোরোগ বিশেষজ্ঞ
soton73@gmail.com
সূত্রঃ প্রথম আলো

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।