সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: ফরমালিন সমস্যা সমাধানের সহজ উপায়

ফরমালিন সমস্যা সমাধানের সহজ উপায়




ফরমালিন নিয়ে ভাবনা ও প্রতিক্রিয়া বলে দেয় আমরা বাংলাদেিশরা জাতি হিসেবে কেন ক্রমাগত নিম্নগামী পথে ধাবিত হচ্ছিফরমালিন অনেক ক্ষতিকর একটা কেমিক্যালকিন্তু বুঝতে হবে সমস্যাটি ফরমালিনের নয়, সমস্যাটি হচ্ছে খাদ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তির (ফুড প্রিজারভেশন টেকনলজি)সারা বিশ্বে তাজা খাদ্য ও ফলমুল সংরক্ষণের যে স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতিটি আছে, বাংলাদেশে সেগুলো অনুসরণ করা হচ্ছে না। প্রথমে জানা প্রয়োজন, সেই স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি কী? এই পদ্ধতিকে বলা হয় কুল চেইনখাদ্য ও ফলমুল সংরক্ষণ প্রযুক্তি খুবই সহজ।


যেকোনো তাজা খাদ্য ও ফলমুল তিন ধরনের বিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্গত হয়কেমিক্যাল, ব্যাকটেরিয়াল ও এঞ্জাইমএই পরিবর্তনকে ঠেকানোর জন্য দুটি পদ্ধতির ওপর নিভর্র করা হয়। এক. শুকিয়ে ফেলাদুই. ঠান্ডার মধ্যে রাখানিম্নতাপে রাখতে হলে উপাদনের পর থেকেই কোল্ডস্টোরেজের মধ্যে সেগুলো রাখতে হবে। এখন চীনে ছোট ছোট কোল্ডস্টোরেজ পাওয়া যায়৷ এগুলো অত্যন্ত সাশ্রয়ী ও মডুলারযেকোনো স্থানে পার্ট খুলে লাগানো সম্ভবসরকার প্রতিটি বাজারের পাশে এ ধরনের দুটি করে ছোট সাইজের কোল্ডস্টোরেজ স্থাপন করতে পারে৷ একটি মাছ-মাংসের জন্য, আরেকটি সবজি-ফলের জন্য৷ তাহলে ব্যবসায়ীদের আর ফরমালিন ব্যবহার করতে হবে নাএকটি ছোট বাজারের পাশে এ ধরনের দুটি করে কোল্ডস্টোরেজের দাম পড়বে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকা। 

ঢাকা শহরে যদি ৫০টি বাজার থাকে, ৫০টি বাজারের জন্য ১০০টি কোল্ডস্টোরেজের সর্বমোট খরচ পড়বে ১৫ কোটি টাকা৷ এই ১৫ কোটি টাকার বিনিময়ে হয়তো-বা ফরমালিন সমস্যার সমাধান হবে অর্ধেকবাকি অর্ধেক সমাধানের জন্য পাইকারি বাজারগুলোতেও এ ধরনের কুল চেইনের ব্যবস্থা করতে হবেহয়তো-বা আরও ৫০ কোটি টাকার মতো খরচ হতে পারে শুধু ঢাকা শহরকে ম্যানেজ করতে। ব্যবসায়ীরা ফরমালিন ব্যবহার করেন তাজা খাদ্য ও ফলমুলের আয়ু বাড়ানোর জন্যযদি পচে যায়, তাহলে তাঁর সম্পূর্ণ মূলধন হারিয়ে যায় ৷ যেসব ব্যবসায়ী এ ব্যবসা করেন, তাঁরা সবাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীফলে একটি বাজারের পাশে ৩০ লাখ টাকা খরচ করে কোল্ডস্টোরেজ বসানো একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পক্ষে সম্ভব নয় কিন্তু সরকার যদি এই ব্যবস্থা করে দেয়, ব্যবসায়ীরা সেই সার্ভিস নিতে পারবেন এবং সরকারও এ ব্যবস্থা থেকে অনেক অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবে৷ কিন্তু সরকার, প্রশাসন বা বড় চিন্তাবিদেরা এ ব্যাপারে আদৌ কোনো রকমের পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। 

ফরমালিন রোধের ব্যাপারে কেবল আন্দোলন করা হয়৷ মিডিয়াতে লেখালেখি করা হয়৷ ধরপাকড়, টিভি প্রোগ্রাম, আইন তৈ​রি ও বৈঠক করা হয়৷ কিন্তু যা করতে হবে, তার ধারে-কাছেও কেউ নেইএকটি বিষয় বুঝতে হবে যে এ সমস্যা কেবল বাংলাদেশেরই সমস্যা নয়, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এটি আছেকোটি কোটি টাকা খরচ করে এই সমস্যাগুলোর সমাধানের উপায় আবিষ্কার করতে হবে নাকারণ, সারা বিশ্বে প্রযুক্তি এখন নাগালের মধ্যে চলে এসেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দেখলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে যে উন্নত দেশগুলো কীভাবে এই সমস্যাগুলো সমাধান করছে৷ একই উপায়ে বাংলাদেশের সমস্যাগুলো সমাধান করা যেতে পারেকোনো আইন-কানুনও তৈরি করতে হবে নাশুধু কাজটি করতে হবেএ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে তাজা খাদ্য ও ফলমূল সংরক্ষণ করার জন্য শুধু কুল চেইন করতে হবেতখন আপনা-আপনি এ ব্যাপারে সবাই সচেতন হবে৷ এক কথায় বলতে গেলে, সমস্যা সমধানের জন্য প্রকৃত সময়—‘প্রেজেন্ট টাইম ইজ দ্য রাইট টাইমআবার অন্য একটি ভাষায় বলতে গেলে, ‘কথা কম কাজ বেশি।




সূত্রঃ প্রথম আলো

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।