উদ্ধারকাজে নেতৃত্বদানকারী বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবদুস সোবহান জানান নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, নারী ১৪ জন ও শিশু আটজন। তিনি আরও জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম মাওয়া-মানিকগঞ্জের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। রুস্তম এলেই ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধারকাজ শুরু হবে। তবে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) উপপরিদর্শক আবদুস সালাম জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ১৫ জন, পুরুষ ১৬ জন ও শিশু ৭ জন। উদ্ধারকারী জাহাজ থেকে মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঘটনার পরপরই নদীতে থাকা অন্যান্য লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলার গিয়ে বেঁচে যাওয়া প্রায় ৫০-৬০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে। তবে কতজন এখনো নিখোঁজ, তা জানা যায়নি। ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গুরুতর অবস্থায় এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর শিশুটি মারা যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিকাশ মণ্ডল শিশুটির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার কিয়াম শিকদার জানান, নিহত শিশুটির নাম স্মৃতি। তার বাবার নাম ফারুক শেখ। তাদের বাড়ি এই ওয়ার্ডেই। ফারুক তাঁর ছেলেমেয়ে, স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ দুর্ঘটনায় তিনি বেঁচে গেলেও তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়ি এখনো নিখোঁজ। ছেলেকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে উদ্ধার পাওয়া যাত্রী হাফিজুর রহমান শেখের ভাষ্য, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাটুরিয়া ঘাট থেকে লঞ্চটি দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছাড়ে। রওনা হওয়ার ১৫ মিনিট পরে আড়াআড়িভাবে আসা একটি কার্গো জাহাজ লঞ্চটির মাঝখান বরাবর আঘাত করে। এতে লঞ্চটি উল্টে ডুবে যায়। তিনি লঞ্চের ডেকে ছিলেন। ধাক্কায় তিনি নদীতে পড়ে যান। তিনি আরও জানান, যাঁরা লঞ্চের ডেকে ছিলেন, তাঁরা বের হতে পেরেছেন। তবে ভেতরে থাকা যাত্রীরা কেউ বের হতে পারেননি। হাফিজুরের বাড়ি বাগেরহাটে।
তদন্ত কমিটি গঠন ও অর্থ সহায়তা
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ ঘটনা তদন্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নূর-উর-রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।