সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: ঘাড় ও কাঁধে ব্যথা?

ঘাড় ও কাঁধে ব্যথা?


কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ট্যাব—বর্তমান যুগের মানুষের অতি পরিচিত অনুষঙ্গ। এগুলো আমাদের গভীর মনোযোগ কেড়ে নেয়। কখনো কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায় যান্ত্রিক পর্দার দিকে তাকিয়ে। ব্যবহারের সময় বসার ভঙ্গিটা স্বাস্থ্যকর হলো কি না, সে খেয়াল আর থাকে না। পরিণাম ঘাড় ও কাঁধে অসহনীয় ব্যথা। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ, উইমেনস হসপিটাল এবং প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের যৌথ এক গবেষণায় দেখা যায়, কোলে ল্যাপটপ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ মাথা নিচু করে বসে থাকলে মেরুদণ্ডের ওপরের দিকের হাড়ের ছোট্ট সন্ধিস্থল এবং ঘাড়ের মাংসপেশি অস্বাভাবিক অবস্থানে চলে যায়। এতে মাংসপেশি, স্নায়ু, রগ, লিগামেন্ট ও সুষুম্না ডিস্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এ ধরনের সমস্যা কীভাবে এড়াতে পারেন? প্রথম করণীয় হলো নিজের অবস্থান সম্পর্কে সচেতনতা। যদি দীর্ঘক্ষণ হাতে ফোন নিয়ে কথা বলতে হয় অথবা ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপে কাজ করতে হয়, মাঝে মাঝে বিরতি নিন। এতে নিজের শরীরটা আরামদায়ক অবস্থানে আছে কি না, খেয়াল হবে। আপনার পিঠ কি বাঁকা হয়ে আছে? কাঁধ দুটো কুঁজো হয়ে আছে? মাথা নিচু হয়ে রয়েছে? চিবুক সামনের দিকে অথবা মাথাটা এক কাঁধের দিকে হেলে রয়েছে? পা দুটো আড়াআড়ি আর নিতম্বের এক পাশ উঁচুতে আছে অনেকক্ষণ ধরে?

কাজে ভালো দক্ষতার জন্যই আপনার শারীরিক সুস্থতা সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি। নিজের শারীরিক অবস্থান ঠিক রেখে কাজ করছেন কি না, নিয়মিত যাচাই করে নিতে হবে। বসে কাজ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে—এমন ব্যক্তিরা শরীর শিথিল রাখার কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যাগুলো এড়ানো যাবে।


যদি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করেন
  •  এমন চেয়ারে বসুন যাতে কোমরের নিচের অংশে স্বস্তি হয়। প্রয়োজনে পেছনে ছোট বালিশ রাখুন।
  • মনিটরের ওপরের অংশটা ঠিক চোখ বরাবর রাখুন। ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য।
  • সোজা হয়ে বসুন। বাঁকা হয়ে বা সামনের দিকে ঝুঁকে থাকবেন না।
  • কাঁধ দুটো শিথিল এবং কনুই দুটো শরীরের কাছাকাছি রাখুন।
  • দুই হাত, কবজি, পুরো বাহু ও ঊরু দুটো মেঝের সমান্তরালে রাখুন।


যদি হাতে ফোন নিয়ে কথা বলতে হয়
  • কাঁধ ও মাথার মাঝখানে ফোন রেখে কথা বলবেন না।
  • আরামদায়ক এবং হাতমুক্ত যন্ত্র বা হেডসেট ব্যবহার করতে পারেন। নিজের পছন্দ অনুযায়ী তারবিহীন (ব্লুটুথ) হেডসেট বেছে নিতে পারেন।

যদি ই-বুক রিডার বা ট্যাবলেট ব্যবহার করেন
যান্ত্রিক পর্দায় পড়ার জন্য অনেকে ট্যাবলেট কম্পিউটার বা ট্যাব ও ই-বুক রিডার ব্যবহার করেন। এগুলোর অবস্থান চোখের জন্য স্বস্তিকর জায়গায় রাখতে হবে। যেখানে-সেখানে বসে এসব যন্ত্র ব্যবহার না করাই ভালো। প্রতি ১৫ মিনিট পর পর পড়া থামিয়ে বিরতি নিন। যন্ত্রটা এক হাত থেকে আরেক হাতে নিন, উঠে দাঁড়ান, একটু হাঁটুন, তারপর আবার কাজ শুরু করুন। শারীরিক অবস্থানের এই পরিবর্তন অত্যন্ত দরকারি।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল


সূত্রঃ প্রথম আলো, ০১:২৩, এপ্রিল ০৫, ২০১৫ 

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।