হাতের লেখা সুন্দর। লেখাপড়ায়ও ভালো। অথচ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্ত্তন গ্রামের হাবিবুর রহমানের (১৪) দুই হাতে কোনো আঙুলই নেই। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে হাবিবুর এবার উপজেলার রবির বাজার দারুস সুন্নাহ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেডিসি) দিচ্ছে।
হাবিবুর নর্ত্তন গ্রামের আইয়ুব আলী ও হাছনা বেগমের ছেলে। সে স্থানীয় চৌধুরী বাজার কুতুব শাহ দাখিল মাদ্রাসায় পড়ে। হাবিবুরের মা হাছনা বেগম মুঠোফোনে বলেন, জন্ম থেকেই হাবিবুরের দুই হাতে কোনো আঙুল নেই। তাঁরা হাবিবুরের চিকিৎসার জন্য জন্মের কিছুদিন পর ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা কোনো আশা দিতে পারেননি। সরেজমিনে গত শনিবার সকালে দেখা যায়, পরীক্ষাকেন্দ্রের ৮ নম্বর কক্ষে বসে গণিত বিষয়ের পরীক্ষা দিচ্ছে হাবিবুর। দুই হাতে ঠেস দিয়ে কলম ধরে সে উত্তরপত্রে অঙ্ক কষছে। পরীক্ষা শেষে তার সঙ্গে কথা হয়। আঙুল ছাড়া লেখালেখি করতে কষ্ট হয় কি না জানতে চাইলে হাবিবুর বলে, ‘লেখাপড়া করতে অইলে তো কষ্ট করা লাগব। আগে কষ্ট অইত। এখন আর হয় না।’ ইবতেদায়ি পরীক্ষায় সে জিপিএ ৩ দশমিক ৫২ পেয়েছিল।
হাবিবুরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চৌধুরী বাজার কুতুব শাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট আইয়ুব আনসারী মুঠোফোনে বলেন, ‘হাবিবুর লেখাপড়ায় ভালো। তার বাংলা ও ইংরেজি লেখা খুবই সুন্দর। আমরা তার প্রতি যত্নশীল।’ হাবিবুরের মা হাসিনা বেগম বলেন, ছেলের জন্য তিনি অনেক দিন ধরে প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পাননি। রাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেন, ইউনিয়নভিত্তিক বরাদ্দ কম থাকায় হাবিবুরকে ভাতা দেওয়া যায়নি। পরেরবার তাকে দেওয়া হবে।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।