খাবারের পদে করলা থাকলে রুচি বাড়ে। তা ছাড়া এই গরমে
করলা স্বস্তি দেবে, শরীরও ভালো রাখবে। চিংড়ি,
ডাল দিয়ে কিংবা কেবল মুচমুচে ভাজা যেমনই হোক
করলা সমান স্বাদের। আলু-করলা বা আলু-উচ্ছের ভাজি খাবারকে আনন্দদায়ক করে তোলে।
করলা দিয়ে খাবার শুরু করা বাঙালির শত বছরের ঐতিহ্যও বটে। তেতো বলে পরিত্যাগ না
করলে করলা তার প্রতিদান দেবেই।
করলা ঔষধি গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে
না। আস্ত একটা ফার্মেসিই বলা যায় এই সবজিকে। নিয়মিত করলা খেলে রোগবালাই থাকে
শতহস্ত দূরে। প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় আছে ২৮ কিলোক্যালরি,৯২
দশমিক ২ গ্রাম জলীয় অংশ,৪ দশমিক ৩
গ্রাম শর্করা,২ দশমিক ৫ গ্রাম আমিষ,১৪
মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম,১ দশমিক ৮ মিলিগ্রাম লোহা ও ৬৮
মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। এখন
দেখে নেওয়া যাক করলার বিশেষ কিছু উপকারিতা। করলা রক্তচাপ ও চর্বি কমায়। এর তেতো
রস কৃমিনাশক। এটি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। এ ছাড়া এটি ভাইরাসনাশকও। হেপাটাইটিস এ,হারপিস
ভাইরাস,ফ্লু ইত্যাদির বিরুদ্ধেও করলা বেশ কার্যকর। লিভার
ক্যানসার, লিউকোমিয়া, মেলানোমা
ইত্যাদি ক্যানসার প্রতিরোধ করে করলা। যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাঁরা
নিয়মিত করলা খেতে পারেন। কারণ এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এ ছাড়া রক্তশূন্যতায়
ভুগছেন এমন রোগীদের উত্তম পথ্য করলা।
করলা হিমোগ্লোবিন তৈরি করে শরীরে রক্ত বাড়ায়। করলার ভিটামিন সি ত্বক ও চুল ভালো
রাখে এবং ম্যালেরিয়া জ্বরে স্বস্তি দেয়। মাথাব্যথারও উপশম করে করলা। এটি শরীর থেকে
বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় ও রক্ত পরিষ্কার করে। স্ক্যাভিজের মতো রক্তরোগ
প্রতিরোধেও সাহায্য করে। করলার সবচেয়ে বড় গুণ এটি বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখতে সাহায্য
করে। তাই করলা খেয়ে ধরে রাখুন তারুণ্য। করলা বাত ঠেকাতেও কার্যকর। এ জন্য চার চা–চামচ করলা বা উচ্ছে পাতার রস একটু গরম করে সেই
সঙ্গে এক চা–চামচ বিশুদ্ধ গাওয়া ঘি মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খেতে
হবে।
হাসিনা আকতার
লেখক প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা,
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।