ভারতের কেরালার মুসলিম লোয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
শিক্ষক এ টি আব্দুল মালিক। তিনি ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে ১৯ বছর ধরে প্রতিদিন নদী
সাঁতরে পার হন। বাড়ি থেকে তাঁর স্কুলে যাওয়ার রাস্তা রয়েছে দুটি। প্রথমটি হচ্ছে
বাড়ি থেকে বের হয়ে দুবার বাস বদল করতে হবে, এরপর আবার দুই কিলোমিটার
রাস্তা হেঁটে যেতে হবে। আর এতে সময় লাগবে অন্তত তিন ঘণ্টা। দ্বিতীয় রাস্তাটি হচ্ছে
বাড়ি থেকে হেঁটে স্থানীয় কাদালুন্দিপুঝা নদীর তীরে যেতে হয়। আর এতে সময় লাগে ১০
মিনিট। এরপর এই নদী সাঁতরে তীরে উঠে হাঁটতে হয় অন্তত তিন মিনিট। এরপর পৌঁছে যান
তার প্রিয় শিক্ষার্থীদের কাছে।
এটি আব্দুল মালিক জানান, প্রতিদিন নদী সাঁতরে স্কুলে
যেতে তার সময় ও অর্থ দুটিই সাশ্রয় হয়। এছাড়া গাড়িতে যেতে হলে অনেকদিন নির্দিষ্ট
সময়ে স্কুলে পৌঁছানো যায় না। নদীর তীরে পৌঁছে তিনি তার পোশাক এবং অন্যান্য
জিনিষপত্র প্লাষ্টিক ব্যাগে ভরিয়ে ফেলেন। চোখে পানিরোধক চশমা পরে প্লাষ্টিকের সেই
ব্যাগ এক হাতে পানির ওপরে ধরে পারি দেন নদী। স্থানীয়দের কাছে এই শিক্ষক পরিচিতি
পেয়েছেন জীবন্ত ঘড়ি হিসেবে। তিনি যখন প্রতিদিন পানিতে নামেন তখন ঘড়ির কাটা থাকে
ঠিক ৯টায়। এরপর নদীর তীরে ওঠে কাপড় পরে পৌঁছান স্কুলে। এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ব
শিক্ষক দিবসে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা তাঁকে সম্মাননা জানান। যুক্তরাজ্যের
একজন মানসিক চিকিৎসক এই শিক্ষকের মহান এই ত্যাগের জন্য একটি নৌকা উপহার দেন।
কিন্তু এর আগেই কেটে গেছে ১৯ বছর।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।