সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: Waist Pain-কোমরব্যথা হলে

Waist Pain-কোমরব্যথা হলে


পিএলআইডি—এটি সাধারণত ২৫ থেকে ৪০ বছরের মানুষের ক্ষেত্রে বেশি হয়। কোমরের প্রতিটি হাড়ের মধ্যে ডিস্ক থাকে। এই ডিস্ক যদি বের হয়ে গিয়ে স্নায়ুমূলের ওপর চাপ ফেলে, তাহলে কোমরে ব্যথা হতে পারে

কোমর ও ঘাড়ব্যথার রোগীর সংখ্যা আমাদের দেশে দিন দিন বেড়েই চলছে। ঘাড় ও কোমরব্যথার অন্যতম কারণ হলো অসচেতনতা। একটু সচেতন হলে এই ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। ঘাড় ও কোমরব্যথা বেশি হয় তাঁদের, যাঁরা বসে দীর্ঘক্ষণ কাজ করেন। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ফলে সাধারণত শরীরের অঙ্গস্থিতি (পশ্চার) সঠিকভাবে ধরে রাখা সম্ভব হয় না। ফলে ঘাড় ও কোমরের মাংসপেশিতে স্ট্রেস থাকে দীর্ঘক্ষণ। এই স্ট্রেস থাকার কারণে মাংসপেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায় এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে সমস্যা দেখা দেয়।


কেন হয় ব্যথা?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোমরের হাড়গুলোতে ক্ষয় হয়, যাকে লাম্বার স্পনডোলাইসিস বলে। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকে এই ক্ষয় শুরু হয়।
পিএলআইডিএটি সাধারণত ২৫ থেকে ৪০ বছরের মানুষের ক্ষেত্রে বেশি হয়। কোমরের প্রতিটি হাড়ের মধ্যে ডিস্ক থাকে। এই ডিস্ক যদি বের হয়ে গিয়ে স্নায়ুমূলের ওপর চাপ ফেলে, তাহলে কোমরে ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া আরও যেসব কারণে কোমরে ব্যথা হতে পারে
* ভারী বস্তু তোলার কাজ করলে
* কোমরে আঘাত পেলে
* অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে, বসে বা সামনে ঝুঁকে কাজ করলে
* তিন থেকে পাঁচ বছর একটানা সেলাইকাজ করলে
* নিয়মিত গাড়ি চালালে
* কুঁজো হয়ে হাঁটলে বা বসলে
* শরীরের ওজন উচ্চতা অনুযায়ী বেশি হলে
* গর্ভকালীনও কোমরে ব্যথা হতে পারে

কোমরব্যথায় করণীয়
লো ব্যাক পেইন বা কোমরব্যথায় ভোগেননি, এমন মানুষের সংখ্যা কম। সাধারণত নারীরা কোমরব্যথায় বেশি ভোগেন। কোমরব্যথার চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ অবশ্যই ভালো। কিছু নিয়ম মেনে চললে সাধারণত বেশ সুস্থ থাকা যায়।

* শরীর সামনে বাঁকাবেন না। কোনো কিছু নিচ থেকে তোলার সময় শরীর না বাঁকিয়ে হাঁটু ভেঙে বসে তুলুন। ভারী জিনিস শরীরের কাছাকাছি রাখুন।
* এক হাতে কোনো ভারী জিনিস বহন করবেন না। এতে যে হাতে বহন করবেন, সে পাশের স্পাইনের মাংসপেশিতে টান লাগবে।
* কোমর সোজা রেখে বসুন। এর জন্য চেয়ারে লাম্বার রোল বা ছোট কুশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
* শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন। জাজিম ও পাতলা একটি তোশকের বিছানায় ঘুমাবেন। কোনো ফোম ব্যবহার করবেন না।
* দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকবেন না। যদি দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তাহলে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে না থেকে প্রতি ২০ মিনিট পরপর ৫ মিনিট করে বসে পড়ুন। দাঁড়ানোর সময় ফুটরেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। অনেকক্ষণ দাঁড়াতে হলে কিছুক্ষণ পরপর শরীরের ভর এক পা থেকে অন্য পায়ে নিন।
* বিছানা থেকে ওঠার সময় সব সময় এক পাশে কাত হয়ে উঠবেন
* অল্প হিলের জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করুন
* তরকারি কাটা, মসলা পেষা, কাপড় কাচা ও ঘর মোছার সময় মেরুদণ্ড যাতে সোজা অবস্থায় থাকে, সে জন্য উঁচু টুল, টেবিল বা চেয়ার ব্যবহার করবেন
* কেনাকাটার সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট দাঁড়ানোর বা হাঁটার পরে একটু বসবেন


নিয়মিত ব্যায়াম
নিয়মিত ব্যায়াম কোমর ব্যথার ভালো প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। তবে সামনের দিকে ঝুঁকে কোনো ব্যায়াম করবেন না। এতে ব্যথা আরও বাড়বে। প্রথম সহজ ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন।



ব্যায়াম
* উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দুটি পাশে রেখে দিন। ২-৩ মিনিট আরাম করুন।
* কনুইয়ে ভর দিয়ে শরীরের ওপরের অংশ ধীরে ধীরে যতটুকু পারেন ওপরে তুলুন। ১০ সেকেন্ড এভাবেই থাকুন।
* উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাতের তালুতে ভর দিয়ে শরীরের ওপরের অংশ ধীরে ধীরে ওপরে তুলুন। এভাবে ১০ সেকেন্ড থাকুন। আবার ধীরে ধীরে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন।


ব্যায়াম
উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাতগুলো শরীরের পাশে রেখে দিন। হাতের ওপর ভর না দিয়ে ডান পা সোজা রেখে শ্বাস নিতে নিতে ধীরে ধীরে ওপরের দিকে তুলুন। যতটুকু পারেন ওপরে তুলে রাখুন। এবার দুই পা একসঙ্গে সোজা করে ওপরে তুলে ১০ পর্যন্ত গুনুন। 

ধীরে ধীরে নামান। এবার হাতের ওপর ভর না দিয়ে দুই পা ও কোমরের ওপরের অংশ একসঙ্গে ধীরে ধীরে ওপরের দিকে তুলুন। ১০ সেকেন্ড ধরে রেখে ধীরে ধীরে নিচে নামান। এভাবে পাঁচবার করে ব্যায়ামটি দিনে তিনবার করুন। ব্যথা বেশি হলে একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত।



ফাহমিদা বানু
জ্যেষ্ঠ ফিজিওথেরাপিস্ট,
সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড (সিআরপি),
সাভার, ঢাকা


সূত্রঃ প্রথম আলো, আপডেট: , ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৭

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।