সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: ভাইরাস কি,কিভাবে আসে ,কি ভাবে কাজ করে,কিভাবে দূর করা যায়

ভাইরাস কি,কিভাবে আসে ,কি ভাবে কাজ করে,কিভাবে দূর করা যায়


 
এর আগে আমি পেনড্রাইভের ভাইরাস সম্পর্কে একটি পোষ্ট করেছিলাম। পড়ে নিতে পারেন এখানে এবং এখানে আজ লেখব কম্পিউটারের ভাইরাস সম্পর্কে।আমার লেখার মাধ্যমে উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। লেখাটা বড় হলেও কষ্ট করে পড়েন। আশাকরি নিশ্চয় কাজে আসবে।



১.ভাইরাস কী? কম্পিউটারের ভাইরাস কি প্রশ্ন করলে একজন অদক্ষ লোক ও বলে দিতে পারবে এটি কম্পিউটারের শত্রু।এর থেকে দূরে থাকা দরকার।তবে এর মাধ্যমে পুরো উত্তরটা মনে হয় আসবেনা।কম্পিউটার দুটো জিনীসের সমন্বয়ে চলে একটি হার্ডওয়ার অন্যটি সফটওয়ার।আপনি যখন পুরো কম্পিউটারটি হার্ডওয়ার দিয়ে চলার উপযুক্ত করবেন তখন প্রয়োজন হবে অপারেটিং সিস্টেম,মাল্টিমিডিয়া,গ্রাফিক্স,ইউটিলিটি ইত্যাদি সফটওয়ারের যা ছাড়া আপনি কম্পিউটারটা ব্যবহার করতে পারবেনা।ভাইরাস ও সে রকম ১টি সফটওয়ার।তবে সামান্য পার্থক্য আছে। মাল্টিমিডিয়া,গ্রাফিক্স,ইউটিলিটি সফটওয়ার গুলো আপনি আপনার প্রয়োজন পুরণ করার জন্য ব্যবহার করে থাকেন।যে প্রোগ্রামার এটি তৈরি করুক না কেন এটি আপনি যখন ইন্সটল করবেন তখন থেকে আপনার কমান্ডমত এটি কাজ করবে।ভাইরাস কিন্তু আপনার কমান্ডমত কাজ করেনা।এটি যে প্রোগ্রামার তৈরি করে তার কাজ করে।আর ঐ প্রোগ্রামার তার বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য এগুলো তৈরি করে থাকে।এটি এমন এক সফটওয়ার যা ইউজারকে ফাকিঁ দিয়ে নিজে নিজে ইন্সটল হয়ে যায় এবং অল্প সময়ে পুরো কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে।পরে প্রোগ্রামারের উদ্দেশ্যে পূরণ করতে থাকে যার ফলাফল একজন ইউজারের সর্বনাশ।

২.কিভাবে আসে? কিভাবে এই সম্মানিত মেহমান কম্পিউটারে আসে তা বলার আগে কিভাবে এটি ছড়াই বললে মনে হয় আরো পরিস্কার হবে বিষয়টা।আপনাকে যদি কেউ প্রশ্ন করে বর্তমান বিশ্বে তথ্য আদান প্রদানের সবচেয়ে দ্রুত মাধ্যম কোনটি আপনি নিশ্চয় ইন্টারনেট ছাড়া অন্য কিছুর নাম বলবেন না।কারণ চিঠি পত্রের যুগ এখন শেষ পর্যায়ে।আপনি একটা চিঠি পাঠাবেন আমেরিকায় তার জন্য আপনি এখন আর পোষ্ট অফিসে যাননা।কারণ আপনার ইন্টারনেট আছে।একই ভাবে আপনার একটা সফটওয়ার দরকার যেটা আজকেই বের হয়েছে কিছুক্ষণ আগে আমেরিকায়।তাহলে আপনি মার্কেটে গিয়ে হাজার টাকা দিলে ও সেটি পাবেন না।এর জন্য ও আপনার ভরসা ইন্টারনেট।টেক্সট,ইমেজ,অডিও,ভিডিও সব কিছুই আজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাওয়া যায় যেখানে ভাইরাসটাও একটি।নিচে দুটি উদাহরণ দিচ্ছি।

১.Mr. A একজন ভাইরাস প্রোগ্রামার।ভাইরাস তৈরি করা এবং ছড়ানোই তার কাজ।উদ্দেশ্য সফল করার জন্য নিজের ব্লগ আছে।আবার সে বিভিন্ন ফোরামের সদস্য এবং সে নিয়মিত ওগুলোতে পোষ্ট করে,সদস্যদের সমস্যাই নিজে কমেন্টস করে।

নতুন ভাইরাসতো তৈরি করেই,যে সব সফটওয়ারগুলোর সিরিয়াল কী পাওয়া যায়না কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোর পেচও তৈরি করে যেখানে তার ভাইরাস প্রোগ্রামের কমান্ডগুলো এড করে দেয়।আজকাল পিসিকে স্মুথলি চালানোর জন্য,ট্রাবলশ্যুটিং করার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইউটিলিটি সফটওয়ার বের হচ্ছে।এসব সফটওয়ারগুলোকে এডিট করে সে নিজের ভাইরাস প্রোগ্রামের কমান্ডগুলো এড করে দেয়(ভাইরাস এফেক্টেড সফটওয়ার)।মোট কথা যে সব সফটওয়ার ও সিরিয়ালের খুব বেশি চাহিদা সেখানে সে সাধ্যমত সব চেষ্টাই করে তার কমান্ডগুলো ঢুকানোর জন্য।আর ফোরাম,ব্লগের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেই।

২.Mr.B একজন হ্যাকার।তারও A এরমত ব্লগ আর ফোরাম আছে। সে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আর ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ ডাটা সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত।এজন্য সে দরকারী প্রোগ্রাম তৈরি করে অনলাইনে ছেড়ে দেয় এবং বিভিন্ন লিংক এর সাথে যুক্ত করে দেয় যেখানে ক্লিক করলে প্রোগ্রামটি পিসিতে সেট হয়ে যায়।তার কাছে অসংখ্য মেইল এড্রেস আছে।সে নানা রকম অফার বা লোভ দেখিয়ে ঐ সব মেইল এড্রেসে মেইল পাঠায়(হয়ত যুক্তরাস্ট্রের গ্রিন কার্ড বা লক্ষ ডলার লটারির অফার আপনিও পেয়েছেন যেখানে আপনার ক্রেডিট কার্ডের নংটা নির্ভুলভাবে বসাতে বলে)এমনকি আপনার বন্ধুর আইডি দিয়েও আপনাক মেইল পাঠায় যেখানে ছবি বা অন্য কিছুর কথা বলা থাকে অথচ আপনার অজান্তে তার প্রোগ্রামের লিংক যুক্ত করে দেয়।এতে মেইলটিতে ক্লিক করলে প্রোগ্রামটি পিসিতে যুক্ত হয়। আর পিসির গুরুত্বপূর্ণ ডাটাগুলো তার কাছে চলে যায় বা পিসিটিকে সে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।এভাবে সে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ডাটা সংগ্রহ করে।

আবার সে নাম করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য এমন প্রোগ্রাম তৈরি করে যেটা সব সময় ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রতি নজর রাখে এবং ডাটা সংগ্রহ করার চেষ্টা করে।তাই আমরা অনেক সময় শুনে থাকি অমুক সাইটটি হ্যাক হয়েছে,অমুক প্রতিষ্ঠানে হ্যাকাররা হামলা চালিয়েছে বা কারো একাউন্ট শূণ্য হয়ে গেছে।আমরা এসব প্রোগ্রামকে সাধারণত মেইলওয়ার বা স্পাইওয়ার বলে চিনি।

উদাহরণ দিতে পারিঃ*সম্প্রতি ইউরোপের একটি দেশের প্রেসিডেন্টের ওয়েব সাইট হ্যাক হয়েছে।এতে তার ছবির বদলে হ্যাকাররা বিখ্যাত কৌতুক অভিনেতা মি:বিনের ছবি বসিয়ে দিয়েছে।ওয়েবসাইটটি খুললেই মি:বিন সবাইকে হাত নাড়িয়ে তার মুখের সুন্দর ভঙ্গি(সুন্দর ভঙ্গিটাতো বুঝতেই পারছেন)দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছে।*সম্প্রতি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের সাইট টুইটার ইরানের হ্যাকাররা ৩ ঘন্টারও বেশি নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রাখে।ততক্ষণে কর্তৃপক্ষ একবারও সাইটটিতে শত চেষ্টা করে ঢুকতে পারেনি।এখন তারা হাজার হাজার ইউজারের দুর্বল পাসওয়ার্ডগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেখানে বিখ্যাত নামি দামি ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠানের পাসওয়ার্ডও রয়েছে।*আর চীনের ব্যাপারে গুগলের সিদ্ধান্তের কথাতো সবাই জানেন।*গতবছরের দিকে চীনের সেনাবাহিনী পেন্টাগণে হামলা চালায়।পেন্টাগণ দাবি করে তারা প্রতিঘন্টায় একবার করে তাদের ডাটাগুলো স্ক্যান করে এবং সর্বক্ষণ নজরে রাখে।আর এরই ভিতর সল্পসময়েই চীনের সামরিক বাহিনী হামলাটি চালায়।তবে চীনের সেনাবাহিনী অভিযোকটি অস্বীকার করেছিল।*২০০৮ এর দিকে ব্রিটেনে এক হ্যাকারকে ১২ বছরের জেল দেওয়া হয় ক্রেডিট কার্ড হ্যাক করার দায়ে।সে স্বীকার করেছিল ২০০৪-২০০৬ এর ভিতর প্রায় ১০০ জনের ক্রেডিট কার্ড সে হ্যাক করেছিল।তবে সে কখনো ঐ সব একাউন্ট থেকে একবারে অর্ধেকের বেশি টাকা তুলেনি।এরকম অসংখ্য ঘটনা অনলাইনে নিয়মিত ঘটে যা সবসময় মিডিয়াতে আসেনা বা আসলেও আমরা পাইনা।

উপরে বর্ণিত A&B দুজনই কিন্তু খুবই দক্ষ প্রোগ্রামার। তারা বিভিন্ন ইন্টারনেট সিকিউরিটি ও এন্টিভাইরাসের ডেফিনিশনগুলো বিশ্লেষন করে দেখেই তাদের প্রোগ্রামগুলো তৈরি করে যেন যতটুকু সম্ভব এদেরকে ফাঁকি দেওয়া যায়।তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে অনলাইনে কি কি আলোচনা হয় তারা এ ব্যাপারেও সজাগ।প্রায় এক তৃতীয়াংশ বা তারও বেশি সাইট তারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং তাদের সংখ্যা অনেক।হয়ত আমরা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি নয় বলে B দের হামলাটা বুঝতে পারিনা।কিন্তু A দের জ্বালায় অতিষ্ট হচ্ছি নিয়মিত।

এভাবে A&B দের সাথে যুক্ত হয়ে পিস আক্রান্ত হয়।পরবর্তীতে ঐ ইউজার নিজেকে অন্যের সাথে শেয়ার করে।এভাবে ১ জন থেকে ৫জন১০জন হয়ে সংখ্যা বাড়ছেই।কেউ হয়তো বলতে পারেন আমি নেট ইউজ করিনা কিন্তু আক্রান্ত হচ্ছি কেন।নেট ইউজ না করলেও আপনি পেনড্রাইভ ইউজ করেন বা বাজার থেকে সফটওয়ার সংগ্রহ করেন।কোনটাতে A&B দের হাত নেই আপনিতো জানেনা।

তাহলে সিদ্ধান্ত নিতে পারি কম্পিউটার আক্রান্ত হয় ১.পেনড্রাইভ,সিডি -ডিভিডির মাধ্যমে ২. A&B এর লিংক ভিজিট করলে ৩.ভাইরাস এফেক্টেড ফাইল ইন্সটল করলে।৪.আপনার পিসি এমন একটি পিসির সাথে নেটওয়ার্কিং আছে যেটা ভাইরাসে আক্রান্ত।তাহলে ডাটা ট্রন্সফারের মাধ্যমে আপনার পিসিও ঐ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

৩.কি ভাবে কাজ করে: কিভাবে কাজ করে তা জেনে লাভ নেই বরং তা একজন ইউজারের কী কী সমস্যা তৈরি করে তা জেনে নিই। শুরুতেই ১টা কথা বলি,ভাইরাস কিন্তু সবসময় exe, vbs এক্সটেনশনের হয় এবং আক্রমণও করে exe,xml,scr, এক্সটেনশনের ফাইলকে। তাই ইমেজ,টেক্সট,মিউজিক ইত্যাদি কোন ফাইল স্ক্যান করা আপনার নিষ্প্রয়োজন।সুতরাং আমরা শুধু exe ফাইলের কথাই বলব এখানে। অন্যকোন ফাইলকে সে কখনো আক্রমণ করেনা।তাই exeছাড়া অন্য ফাইল কোন কারণে করাপ্ডেট দেখলে ভাইরাসকে দায়ী করবেন না। বরং যেকোন ফাইল অপারেটিংগত ত্রুটির কারণে করাপ্টেড হতেই পারে।এবার আসুন সমস্যাগুলো দেখি। ১.একজন Administrative User কম্পিউটারকে নিজের মত চালানোর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড ব্যবহার করে।যেমন:টাস্কমেনেজার(ctrl+alt+Delete)।বাকি গুলো হল cmd,msconfig,gpedit.msc,regedit কমান্ড যা Run এ গিয়ে দিতে দিতে হয়। বলতে গেলে এ কমান্ডগুলোতেই থাকে একজন Administrative User এর সর্বোচ্চ পাওয়ার।কিন্তু ভাইরাস এ কমান্ডগুলোকে ডিজেবল করে দেয়।শত চেষ্টা করলেও(থার্ডপার্টি সফটওয়ার ছাড়া)কমান্ডগুলো কাজ করেনা।২.ফোল্ডার অপশন ডিজেবল হয়ে যায়।কখনো ফোল্ডার অপশন থাকে কিন্তু Show hidden files and folders অপশনটা কাজ করেনা।আপনি এই দিছেনতো অকে দেওয়ার পর আবার সেই আগের জায়গায় চলে যায়।৩.কখনো দেখা যায় আপনার ইন্সটল করা প্রোগ্রামগুলো কিছুক্ষণ পর খুলছেনা।খুলতে গেলে মেসেজ দেয়exe ফাইলটি পাওয়া যাচ্ছেনা।ইন্সটল করা সব প্রোগ্রামই এ সমস্যা করবে তেমন নয় বরং যে কটাকে ধরেছে এগুলোই করে।সাধারণত ভাইরাস এফেক্টেড সফটওয়ার ইন্সটল করলেই এ সমস্যা হয়।৪.উইন্ডোজ খোলার পথে বন্ধ হয়ে যায়,দাঁড়িয়ে থাকে বা বার বার রিস্টার্ট নেয়।৫.আমরা যখন অফিস ডকুমেন্টের(ওয়ার্ড,এক্সেল ইত্যাদি)কাজ করি তখন এগুলোর টেম্প ফাইল তৈরি হয় এবং ফাইল ক্লোজ করলে এগুলো অটোমেটিক চলে যায়।কিন্তু ভাইরাস এফেক্টেডের কারণে এগুলো যায়না বরং জমা হতে থাকে।৬.পিসিতে পেনড্রাইভ দিলেই অটোরান সহ অপরিচিত ফাইল তৈরি হয়।তাছাড়া পেনড্রাইভকে Safely remove করতে গেলে সেফলি রিমোভ হবেনা মেসেজ দেয় অর্থাৎ পেনড্রাইভকে Safely remove করা যায়না।৭. EXPLORER.EXE এর Process বন্ধ হয়ে যায় যার ফলে ডেস্কটপের সবকিছু অদৃশ্য হয়ে যায়।

আরো কিছু উপসর্গ মাঝে মধ্যে দেখা যায়।তবে উপরের কারণগুলো যদি দেখেন তাহলে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন আপনার পিসিটি ভাইরাস আক্রান্ত।সবগুলো উপসর্গই যে একসাথে পাবেন তেমন কিন্তু নই।বরং একটা দুটা যেকটা পাবেন তাই।উপরুক্ত চিহ্নগুলো চেক করে(বিশেষ করে ফোল্ডার অপশন আর পেনড্রাইভ সমস্যা) কোন পিসিতে হাত দিয়ে আপনি মুহুর্তেই বলে দিতে পারবেন ঐ পিসিটি ভাইরাস আক্রান্ত কিনা।

এবার বলি আপনার পিসির কী কী ক্ষতি করতে পারে।মূলত উপরে বর্ণিত কাজগুলো দ্বারা সে আপনার উইন্ডোজকে নিজের নিয়ন্তণে নেয়।আপনার পিসিতে দিনের পর দিন ঐ সমস্যাগুলো একটা থেকে দুটা বাড়তে থাকে।আস্তে আস্তে সি ড্রাইভ(উইন্ডোজ ড্রাইভ)থেকে চলে যায় অন্য ড্রাইভে। ১মে অন্য ড্রাইভের System Volume Information কে আক্রমণ করে।পরে ঐড্রাইভে যে exe ফাইল বা সেটআপ ফাইল থাকে তাকে আক্রমণ করে।ফলে আক্রান্ত ফাইলটা হয়ে যায় ভাইরাস এফেক্টেড ফাইল।পরবর্তীতে আপনি সেটা ইন্সটল করেন।অথচ সে ফাইলগুলো আপনার মুল্যবান বেকআপ ফাইল।তাছাড়া কোন কোন ভাইরাস ড্রাইভগুলোতে অটোরান ফাইল তৈরি করে।এঅবস্থায় ডাবল ক্লিক করলে ড্রাইভগুলো খোলেনা বরং এক্সপ্লোরার থেকে খুলতে হয়।অটোরান ফাইলটি মুছে দিলেও পরে আবার তৈরি হয়।কারণ আপনার উইন্ডোজটা আক্রান্ত।

সম্ভব হলে একটা পরামর্শ নিন:-আপনার পিসি যখন ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তখন উপরের সমস্যাগুলো কিছু থার্ডপাটি সফটওয়ার দিয়ে সাময়িক নিরাময় করা যায়।কিন্তু জরুরি প্রয়োজনটা মিটিয়েই সচেতন হোন।তখন ওইন্ডোজটা রিইন্সটল না দিয়ে পুরু দেবেন।কেন দেবেন?থার্ডপাটি দিয়ে সমাধান পেয়েছেন মানে এ নয় আপনি ভাইরাসটা শেষ করতে পেরেছেন।বরং সেটা তার কাজ চালিয়ে যায় যতক্ষণ পিসি ওপেন থাকে।আপনি বলতে পারেন এন্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করব আর কি।একদম শুরুর পর্যায়ে হলে আপনার কথাটা ঠিক আছে।কিন্তু ভাইরাসটা খুব শক্তিশালি হলে বা বেশি ছড়িয়ে পড়লে আপনার কথাটার কোন মুল্য নাই।তাছাড়া ভাইরাস সিস্টেম ফাইলগুলোকে খুবই দুর্বল করে ফেলে। তাই আপনি স্ক্যান করে ভাইরাসগুলো তাড়াতে পারলেও আক্রান্ত সিস্টেম ফাইলগুলো পুরো পারফরমেন্স দেখাতে পারেনা।তখন পিসি হয়ে যায় স্লো।তাছাড়া শক্তিশালি ভাইরাসগুলো এন্টিভাইরাসকে ফাঁকি দিয়ে একবার ঢুকতে পারলে এন্টিভাইরাস তাকে আর ধরতে পারেনা।কিন্তু কষ্ট করে বিলগেটসকে নতুনভাবে দিয়ে দিলে ঝামেলা শেষ।তখন ড্রাইভের অটোরান ফাইলগুলোও ডিলিট করতে পারবেন সহজে।তবে অবশ্যই এ সমস্যায় ড্রপডাউন মেন্যু দিয়ে ড্রাইভে ঢুকবেন।

.কিভাবে দূর করা যায়ঃ উপরের লেখাগুলো পড়লে আপনার অবশ্যই ১টা ধারনা আসার কথা কিভাবে পিসি থেকে ভাইরাস দূর করা যায়।তাই আমি আগে আলোচনা করছি ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায় কি।এই পর্যন্ত এন্টিভাইরাসকেই ভাইরাসের একমাত্র ঔষধ বলে সবাই স্বীকার করে।তবে আমি পুরোটা করিনা।কারণ আপনি নিজেই কিছু কাজ করতে পারেন।এন্টিভাইরাস দরকার শুধুমাত্র ভাইরাস এফেক্টেড ফাইল চেক করার জন্য।অরজিনাল ভেন্ডর ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে সংগ্রহ করা সফটওয়ারগুলো কিন্তু ১০০% নিরাপদ নয়।আর আমরা কোন্ কালে অরজিনাল ভেন্ডর থেকে সফটওয়ার সংগ্রহ করেছি?তাই আমাদের সংগ্রহ করা সফটওয়ারগুলো ভাইরাস এফেক্টেড কিনা তা চেক করার জন্য এন্টিভাইরাসই একমাত্র ভরসা।তাছাড়া A&B এর হাত থেকে বাঁচার জন্য এন্টিভাইরাস আর ইন্টারনেট সিকিউরিটি ছাড়া তেমন কোন নিরাপদ ব্যবস্থা নেই।তবে দুঃখের বিষয় হল এগুলোর কোনটাই আপনাকে ১০০% নিরাপত্তা দিতে পারবে এমন গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবেনা।আপনি এগুলোর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৮০থেকে৯০ভাগ নিরাপত্তা পেতে পারেন তা যে ব্রান্ডেরই মাল হোক না কেন।এর বিনিময়ে তাকে দিতে হবে মিনিমাম ৫০ মে:বা: জায়গা,প্রতি সপ্তাহে আপডেটের সুযোগ,কম্পিউটারকে স্লো করার অধিকার।কখনো আপনার সুস্থ কোন ফাইলকে অসুস্থ বলেও ধরবে কিন্তু।সে অপমানও আপনাকে সইতে হবে।আর লাইসেন্সের ঝামেলাতো রয়েছে।চুরি করে কদিনই বা চলে?ঐ যে স্কুলে পড়েছিলামনা পেট শুধু খাই আর খাই,কোন কাজ করেনা।এন্টিভাইরাস আর কি।এত ঝামেলার পরেই নিরাপত্তা পেতে পারেন।তাই আমি এগুলো নিয়মিত ব্যবহারের পক্ষে নয়।আমি সফটওয়ার সংগ্রহ করতে করতে অনেকগুলো হলে তখন এগুলোকে একবার যে কোন দুটা(না পারলে অন্তত১টা) এন্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করিয়ে নিই।তারপর সিডিতে রাইট।আর এভাবে আমি খুব নিরাপদেই থাকতে পেরেছি এ পর্যন্ত।

যাক এবার ১ম থেকে কাজগুলো শুরু করুন পর্যায়ক্রমে।নতুনভাবে উইন্ডোজ দিন।অটোরান বন্ধ করে দিন।তারপর সিস্টেম রিস্টোর বন্ধ (My Computer>Properties>System Restore এ গিয়ে Turn off System Restore on all drives এর চেক তুলে দিয়ে Yes,Ok করে)পিসি রিস্টার্ট দিন।এবার সি সহ সমস্ত ড্রাইভের System Volume Information\_restore{9E42ABDF-336B-4093-AF0F-2F23508C78D5}এর ভিতরের সমস্ত ফাইল ডিলিট করে দিন।এর ফলে আপনি সিস্টেমকে রিস্টোর(যেটা আমারা খুব করি)করার সুযোগটা আর পাবেনা,বিনিময়ে ভাইরাস আপনার কম্পিউটারে স্থায়ী বাসা বাঁধতে পারবেনা,হার্ডডিস্কের অনেক জায়গা খালি হবে।বেকআপে থাকা আপনার সমস্ত সফটওয়ার ফাইলকে আপডেট এন্টিভাইরাস দ্বারা স্ক্যান করে নিন।এখন আপনি ভাইরাসমুক্ত।এবার আপনার স্ক্যান করা ফাইলগুলো থেকে যা যা আপনার দরকার ইন্সটল করে নিন।বেকআপ থাকা সন্দেহজনক সফটওয়ারগুলো ডিলিট করে দিন। আপনার পছন্দমত সেটিংসটা শেষ করে হিরেনবুটসদিয়ে একটা ইমেজ তৈরি করে নিন যাতে ভবিষ্যতে উইন্ডোজ দিতে আর বিরক্তিবোধ না করেন।তাহলে যেকোন সফটওয়ার স্ক্যান না করেই ব্যবহার করতে পারবেন।যদি দেখেন ঐ সফটওয়ার ইন্সটল করার কারণে পিসি আক্রান্ত হয়েছে তাহলে হিরেনবুটস দিয়ে ৫ মিনিটের কাজটা সেরে নেবেন আর ধরে নেবেন সফটওয়ারটি A&B এর মাল।তাহলে আপনিও আমার মত এন্টিভাইরাসকে আর খুব বেশি গুরুত্ব দেবেন না।অবশ্য হিরেনবুটসের পরামর্শটা আলোচনার বিষয়ে পড়েনা।তবে এটি থাকলে এন্টিভাইরাসের দরকার কম হয়।এবার উপরের ২ নং এ বলা কারণগুলো নিয়ে বলি:-

১.পেনড্রাইভের থেকে বাঁচার জন্য টিপসটা পড়ে নিন।বাজার থেকে মিউজিক সিডি আনলে তা সিলেক্ট অল না করে ১টা ১টা সিলেক্ট করে কপি করুন।যেকোন কপির ক্ষেত্রে সবসময় অল সিলেক্ট এড়িয়ে চলুন।এতে হিডেন ভাইরাসটা কপি হবেনা।আর সফটওয়ার সিডি হলে সফটওয়ারগুলো ব্যবহার করার আগে স্ক্যান করে নিন।২.অনলাইনে ফর্নো সাইটগুলো ভিজিট করা থেকে দূরে থাকুন।ব্রিটেনের এক সংস্থা জরিপ চালিয়ে দেখেছে বিশ্বে প্রতিদিন ভিজিট করা সাইটগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেক হচ্ছে ফর্নো সাইট যেখানে উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা বেশি জড়িত।তাদের মতে এগুলো A&B দের লোকালয়।তারা মা -বাবাদেরকে পরামর্শও দিয়েছেন ছেলেমেয়েদেরকে এসব সাইটের প্রতি সতর্ক করার জন্য।কিন্তু চোর কি শুনে ধর্মের বুলি???অপরিচিত সাইট/লিংক ভিজিট না করায় ভাল।অনলাইনে কখনো কোথাও আপনার ক্রেডিট নং সহ ব্যক্তিগত তথ্যগুলো দেবেন না।অপরিচিত মেইল,সাইটের ইনভাইটেশন ব্লক করে দিন।কোন সফটওয়ার যখন গুগলে সার্চ দেবেন দেখবেন সফটওয়ারটির নামের সাথে মিল আছে এরকম সাইটের লিংকও সার্চে এসেছে।এটি হল সফটওয়ারটির অরজিনাল সাইট।ডাউনলোডের জন্য এ লিংকটি ব্যবহার করুন।৩.ইন্সটল করার আগে নিশ্চিত হোন আপনার সফটওয়ারটি ভাইরাস এফেক্টেড না।৪.নেটওয়ার্কিং থাকলে ফাইল ফুল শেয়ার করা থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকুন।যতটুকু সম্ভব ভাইরাস এফেক্টেড পিসির সাথে কম ডাটা ট্রান্সফার করেন।
ভাইরাস সম্বন্ধে আপনাদের অভিজ্ঞতা এখানে তুলে ধরুন।তাহলে আমার ভুলগুলো সংশোধন করে নিতে পারব।

সর্বশেষ আপডেট: ০৬/০৫/২০১০ইং।

৪টি মন্তব্য:

  1. কামরুল ভাই আমার ছালাম নিবেন।
    নিচের ৩ টি পদ্ধতিতেও পেনড্রাইভ ফরমেট করতে পারছি না।
    by Ajob Arafat on Thursday, September 8, 2011 at 11:32pm •
    পদ্ধতি ১:
    (১)প্রথমে My computer এ যেয়ে right click করুন।
    (২)তারপরে Manage এ ক্লিক করুন। দেখবেন computer Management window
    আসবে।
    (৩)এবার Diskmanagement এ ক্লিক করুন।
    দেখবেন আপনার ড্রাইভ গুলো শো করছে।
    (৪)এবার আপনার পেনড্রাইভ সিলেক্ট করে রাইট ক্লিক করুন।
    (৫)তারপরে Fomat এ ক্লিক করুন।


    পদ্ধতি ২:
    (১)প্রথমে স্টাট বাটন থেকে রানে ক্লিক করুন
    (২)তারপরে cmd লিখুন
    (৩)এবার কমান্ড প্রমপ্টের মধ্যে লিখুন
    convert g:/fs:ntfs লিখে ইন্টার চাপুন।
    [এখানে g আপনার পেনড্রাইভের ড্রাইভ লেটার]
    (৪)এর পরে পেনড্রাইভ নরমাললি ফরমেট করুন ।


    পদ্ধতি ৩:
    (১)রান অপশনে যেয়ে Regedit লিখুন
    (২)তারপরে যান Mycomputer>HKEY_LOCAL_MACHINE>SYSTEM>CurrentControlset>Control>Storage Device Policies
    (৩)ডিলেট করুন Storage Device Policies এই অপশনটি।
    (৪)তারপর নরমাললি পেনড্রাইভ ফরমেট করুন।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. আপনার পদ্ধতিগুলো ঠিক আছে। ওভাবে হয়ে যাওয়ার কথা। না হলে http://kamrulcox.blogspot.com/2012/03/rufus.html
      www.hiren.info/download/freeware-tools/USBFormat.zip
      http://downloads.pcworld.com/pub/new/utilities/peripherals/SP27608.exe টুলগুলো দিয়ে ফরমেটের চেষ্টা চালান। আশাকরি হবে।

      মুছুন

  2. ধন্যবাদ এমন সুন্দর পোস্ট করার জন্য। আমি অনেক দিন ধরে এই রকমের একটি পোষ্ট খুঁজছিলাম। আপনার এই পোস্ট অনেক উপকারে আসবে আমার বিশ্বাস। এর আগেও একটা টিপস্ পেয়েছিলাম। এই টিপসইটও অনেক উপকারী। যার দরকার হবে দেখতে পারেন। আবারো লেখককে ধন্যবাদ না দিয়ে পারছি না। তবে এরকম আরো একটি লেখা পড়েছিলাম ।। এখানে> http://muktomoncho.com/archives/851

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. ধন্যবাদ কমেন্টস এর জন্য। আসলে পোস্টটি ২০১০ সালে করা। এখন অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে।

      মুছুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।