সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: রহস্যময় হারানো যুগ

রহস্যময় হারানো যুগ



ইসরায়েলের গ্যালিলিতে একটি বিশাল কাঠের খণ্ড আবিষ্কার করেছে আধুনিক মানুষ। এটির আকৃতি মেপে জানা গেছে যে, পৃথিবীতে এর স্থান হলো তৃতীয়। বাকি দুটি তৈরি হয়েছিল ১৯৩৪ সালে আর এই কাঠের খণ্ডটির বয়স এক হাজার বছর। ঘন অন্ধকারে ঢাকা গুহার মধ্যে কে বা কারা এ বিরাট কাঠের খণ্ডটি রেখেছিল তার সঠিক খবর আমরা এখনো জানি না।

চীনা অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গেও এ ধরনের প্রত্নতাত্তি্বক রহস্য জড়িয়ে আছে। এটিকেও আকস্মিকভাবে আবিষ্কার করা হয় একটি সমাধি ক্ষেত্রের মধ্যে। তখন থেকেই হারিয়ে যাওয়া পৃথিবীর নানা বস্তু সম্পর্কে আমাদের কৌতূহলের মাত্রা ক্রমশই বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। প্রথমেই তোমাদের শোনাই ওই অদ্ভুত কাচ খণ্ডটির গল্প। বিংশ শতাব্দীতে মানুষ তার কৌতূহলী চোখের সামনে পৃথিবীর সমস্ত রহস্যের অবগুণ্ঠন উন্মোচিত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু গ্যালিলির সেই কাচ খণ্ডটিকে কি জয় করতে পেরেছে মানুষের বৈজ্ঞানিক মনীষা?

ইসরায়েলের গ্যালিলি শহরে আবিষ্কৃত হয়েছে ওই বিরাট কাচের খণ্ডটি_ যা একটি প্রাচীন সংগ্রহশালার মূল প্রবেশ পথের সামনে রাখা আছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে পর্যটকরা নিয়মিত এ মিউজিয়ামটি পরিদর্শন করতে আসেন। তারা এটিকে ভালোভাবে পরীক্ষা করেন। তারপর বুঝতে পারেন যে এটি তৈরি হয়েছে এক ধরনের ঘন সবুজ কাচের উপাদান দিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক এলেন সেখানে। এ গবেষক দলের নেতা ছিলেন ড. রবার্ট ব্রিল। তিনি নিউইয়র্ক শহরের করনিং মিউজিয়াম তার গ্লাসের প্রশাসক পদে আসীন ছিলেন। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন এ খণ্ডটির আকার আকৃতির ওপর গবেষণা করেন। তারপর তারা আরও বেশি অবাক হয়ে যান যখন জানতে পারেন যে, এটি তৈরি হয়েছে শুধু একটি মাত্র কাচ খণ্ডের দ্বারা। এ আশ্চর্য বস্তুটি লম্বায় ৩.৪০ মিটার, চওড়ায় ১.৯৪ মিটার আর এটি ৫০ সেন্টিমিটার পুরু। এর ওজন হবে ৮.৮ টন। তখনই জানা গেল, এটি হলো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কাচ খণ্ড। বয়স নির্ধারণ করে বলা হলো যে এটি অন্তত এক হাজার বছরের পুরনো। তাহলে এতদিন আগে কিভাবে এতবড় একটি কাচের খণ্ড তৈরি হয়েছিল? এ প্রশ্ন ঘুরতে থাকে বিজ্ঞানীদের মনে। নানাভাবে তারা এর উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এখনো গ্যালিলির এ বৃহৎ কাচের খণ্ডটি আমাদের কাছে এক চিরন্তন বিস্ময়। কারা এটিকে তৈরি করেছিল এবং কেনই বা এটিকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল একটি গুহার অভ্যন্তরে তা আমরা জানি না। ১৯৫২ সালের ১ ডিসেম্বর। চীনের জিয়াংসু প্রদেশে তখন চলেছে খনন কাজ। সেখানকার একটি মিডল স্কুলের জন্য তৈরি হচ্ছে খেলার স্টেডিয়াম।

যেখানে এই খোঁড়ার কাজটি চলছে তার চারপাশে আছে ছোট ছোট পাথরের টিলা আর উঁচু ঢিবি। শ্রমিকরা অনেক পরিশ্রম করেও মাটির চাঁই সরাতে পারছে না। কি আছে মাটির নিচে? হঠাৎ একজন শ্রমিকের চোখে মুখে ভয়ের ইশারা দেখা দেয়। ঘেমে উঠছে বেচারা। কি হয়েছে তার? বার বার কোদাল চালাচ্ছে সে। ছুটে এলো সবাই। আর অবাক হয়ে গেল। কি লুকিয়ে আছে সেখানে? এক মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ এসে পেঁৗছে গেল। তারপর তারা দেখতে পেল যে, এ মাঠটির অন্তরালে লুকিয়ে আছে দুটি শিলালিপি। তার একটিতে লেখা জেনারেল ঝৌয়ের নাম। চীনের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে জেনারেল ঝৌ ছিলেন এক বিশিষ্ট নেতা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি চীন শাসন করেছিলেন ২৬৫-৪২০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তার মানে ওই শিলালিপিটি অনেক বছরের পুরনো। এরপর জানা গেল এটি তৈরি হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে। এ ঘটনাটিতে সবাই একেবারে অবাক হয়ে যায়। কেননা পশ্চিমের জগৎ ঊনবিংশ শতাব্দীর আগে অ্যালুমিনিয়ামের ব্যবহার জানত না। তাহলে? চীনারা কিভাবে এতদিন আগে অ্যালুমিনিয়াম আবিষ্কার করেছিল। আর তাই বোধহয় তারা বিদ্যুতের ব্যবহার জানত, যার জন্য প্রচুর পরিমাণ অ্যালুমিনিয়াম দরকার পড়ে। পরবর্তী সময় কোনো চোরের দল হয়তো আসল শিলালিপি সরিয়ে নিয়ে একটি নকল অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি শিলালিপি রেখে যায়। ১৯৮৫ সালে চীনা বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করেন যে, চীন দেশের কোনো একটি প্রদেশে প্রাকৃতিক অ্যালুমিনিয়ামের খনি আছে। প্রাকৃতিক অ্যালুমিনিয়াম বিশ্বের মাত্র কয়েকটি জায়গায় পাওয়া যায়। এখনো এই অ্যালুমিনিয়াম নিয়ে চলছে পরস্পর বিপরীত বক্তব্য। কিন্তু ক্রমশই আমরা বুঝতে পারছি যে, শিলালিপিগুলো সত্যি সত্যি অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি ছিল। এর মধ্যে কোনো ফাঁকি বা জুয়া নেই।
 জুয়েল সরকার

সূত্রঃ   বাংলাদেশপ্রতিদিন, ৬ এপ্রিল ২০১২ খ্রিঃ।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।