মানবসভ্যতা ধ্বংস করতে ভূমিকম্প তার ভয়াবহতা নিয়ে ফিরে এসেছে বারবার। প্রযুক্তিগত দিক থেকে যথেষ্ট উন্নত হওয়া সত্ত্বেও মানুষ প্রকৃতির এই খেয়ালিপনার কাছে নেহাতই শিশু। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এমনই কিছু ভয়াবহ ভূমিকম্পের দুঃস্বপ্ন আজও অনেকে ভুলতে পারেনি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দশটি ভয়াবহ ভূমিকম্প। যার ছোবলে শেষ হয়ে গিয়েছিল কয়েক লাখ প্রাণ।
১। ১৯০৬ সালের ৩১ জানুয়ারি, কলম্বিয়াঃ
কলম্বিয়া এবং ইকুয়েডর উপকূল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ভূমিকম্পের ছোবলে, সঙ্গে ছিল সুনামিও। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৮.৮। সুনামি ও ভূমিকম্পের যৌথ থাবায় প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় এক হাজার মানুষ। এই কম্পনের তীব্রতা অনুভূত হয়েছিল পুরো মধ্য আমেরিকাসহ উত্তরের সানফ্রান্সিসকো এবং পশ্চিম জাপানেও।
২। ৪ নভেম্বর, ১৯৫২, রাশিয়াঃ
হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ৯.০ তীব্রতায় ভূকম্পন অনুভূত হয়।
৩। ২২ মে, ১৯৬০, চিলিঃ
রিখটার স্কেলে ভূকম্পের তীব্রতা ছিল ৯.৫। সান্তিয়াগো এবং কনসেপসিওন এই ভূকম্পের কবলে পড়েছিল, সঙ্গে দোসর ছিল ভয়ঙ্কর ঢেউ। প্রকৃতির এই ধ্বংসলীলায় শেষ হয়ে গিয়েছিল প্রায় পাঁচ হাজার প্রাণ, গৃহহারা হয়েছিলেন দুই লাখ মানুষ।
৪। ২৮ মার্চ, ১৯৬৪, আলাস্কাঃ
সেখানেও ভূমিকম্প ও সুনামির যৌথ থাবায় প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ১২৫ জন মানুষের। ক্ষতি হয়েছিল প্রায় লাখ কোটি টাকার। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৯.২। ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল আলাস্কাসহ পশ্চিম ইউকনের কিছু অংশ ও কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া অঞ্চলে।
৫। ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৫, আলাস্কাঃ
রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৮.৭। সঙ্গে দোসর ছিল সুনামি। যেখানে ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ৩৫ ফুট বা ১০.৭ মিটার।
৬। ২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪, ইন্দোনেশিয়াঃ
৬। ২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪, ইন্দোনেশিয়াঃ
ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচেহ নগরীতে রিখটার স্কেলে ৯.১ তীব্রতার কম্পন অনুভূত হয়। সুনামির কোপে সেবার প্রাণ গিয়েছিল ২ লাখ ২৬ হাজার মানুষের। সেই বছরের ভূমিকম্পের কবলে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ আরও নয়টি দেশ।
৭। ২৮ মার্চ, ২০০৫, সুমাত্রাঃ
রিখটার স্কেলে ৮.৬ তীব্রতা ছিল ভূমিকম্পের। প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৩০০ মানুষ। বেশির ভাগই সুমাত্রার পশ্চিম উপকূলে নিয়াস দ্বীপপুঞ্জে থাকতেন।
৮। ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১০, চিলিঃ
চিলিতে সেবারের ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় ৫০০ মানুষ। ক্ষতি হয়েছিল বহু মূল্যের সম্পত্তির। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৮.৮।
৯। ১১ মার্চ, ২০১১, জাপানঃ
জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প ছিল এটি। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৯.০। সঙ্গে আছড়ে পড়েছিল সুনামিও। ভূমিকম্প ও সুনামির ছোবলে পঁচিশ বছরের মধ্যে দুনিয়া সবচেয়ে ভয়াবহ পরমাণু সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল। প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।
১০। ১১ এপ্রিল ২০১২, বান্দা আচেহঃ
ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচেহ থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে ৩০৮ মাইল দূরে অবস্থিত আচেহ জেলায়ই ছিল আজকের ভূকম্পের উৎসস্থল। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৮.৬। কম্পন অনুভূত হয়েছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতাও জারি করা হয়েছিল ২৮টি দেশে। * রকমারি ডেস্ক
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।