সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: হাইড্রোজেন চালিত 'রবো জেলি'!

হাইড্রোজেন চালিত 'রবো জেলি'!



মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক হাইড্রোজেন শক্তিতে চলে এমন একটি রোবট তৈরি করেছেন যা জেলিফিশের মতো পানিতে চলতে পারে। এর নাম দেওয়া হয়েছে 'রবো জেলি'। এর আছে জেলিফিশের মতোই সাধারণ সাঁতারের চলন পদ্ধতি, যা একে করে তুলেছে একটি আদর্শ বাহন! এই রোবটটি এখনো গবেষণা পর্যায়ে থাকলেও তাদের আশা ভবিষ্যতে এই রোবটের সাহায্য নিয়ে তারা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া যে কোনো জিনিস সহজে উদ্ধার করতে পারবেন।

বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলতে গেলে এটি হাইড্রোজেন চালিত বাহন। কিন্তু সাধারণ অর্থে এটি জ্বালানি ছাড়াই চলছে বলা যেতে পারে। কারণ হাইড্রোজেন নির্ভর হওয়ার কারণে এর জ্বালানি কখনো ফুরোবার নয়! এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত এক বিজ্ঞানী ট্যাডেস বলেন, 'আমরাই সর্বপ্রথম এমন এক রোবট আবিষ্কার করেছি যা বাইরে থেকে হাইড্রোজেন ব্যবহার করে পানির নিচে চলতে সক্ষম'। এই রবো জেলির কার্যপ্রণালী বুঝতে হলে জানতে হবে আসল জেলিফিশের গঠন। সত্যিকারের জেলিফিশ দেখতে অনেকটা ছাতার মতো। এটি তার শরীরের ভেতরে থাকা বৃত্তাকার মাংসপেশি ব্যবহার করে সামনে এগোয়। যখন পেশি সংকোচিত হয়, তখন এর ছাতার মতো অংশটি নিজ থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং পানিকে প্রপেলারের মতো কেটে সামনে এগিয়ে যায়। আবার যখন বেশি প্রসারিত হয়ে পূর্বাবস্থায় ফেরে, তখন ছাতার মতো অংশটি স্বাভাবিক অবস্থায় রূপান্তর হয়। সাধারণভাবে বলতে গেলে এই হলো জেলিফিশের চলন প্রক্রিয়া। এই একই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছে কৃত্রিম এই রোবট মাছের ক্ষেত্রেও। তাই রবো জেলির জন্য কৃত্রিম মাংসপেশিও তৈরি করা হয়েছে।

সঙ্কোচন-প্রসারণ প্রক্রিয়ার জন্য এ ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়েছে সংকর ধাতু যা জেলিফিশের প্রকৃত আকার মনে রাখতে সক্ষম হবে। প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত সংকর ধাতুটি কার্বন ন্যানোটিউবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিশুদ্ধ কার্বন দণ্ডের সঙ্গে মোড়ানো থাকে। বিশুদ্ধ কার্বনের ইলেকট্রিক্যাল প্রোপার্টির কারণেই একে বেছে নেওয়া হয়েছে। দণ্ডগুলোতে প্লাটিনামের ব্ল্যাক পাউডারে কোটিং দেওয়া থাকে। এ প্রক্রিয়াতে পাওয়ার দেওয়ার জন্য তাপ-উৎপাদনকারী রাসায়নিক বিক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। পানিতে অঙ্েিজন এবং হাইড্রোজেনের মধ্যে আর প্লাটিনাম সার্ফেসে এ বিক্রিয়া ঘটানো হয়। এই বিক্রিয়া থেকে নির্গত তাপ রবো জেলির মাসলে সরবরাহ করা হয় যাতে এই তাপশক্তি কৃত্রিম মাসলকে রিফ্রেশ করে চলতে সাহায্য করতে পারে। এই তাপ শক্তি ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে চলে রবো জেলি এবং শক্তির পুনরুৎপাদন করে চলে।

ফলে একাজে তাকে মোটেও বাহ্যিক কোনো ব্যাটারি বা অন্য কোনো শক্তির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ইউএস নেভি এবং মেরিনের জন্য এই বাহন তৈরি করা হচ্ছে। ইউএস অফিস অব নেভাল রিসার্চ এ গবেষণার সব ব্যয়ভার বহন করছে বলে জানা যায়। এই প্রজেক্ট সাফল্য পেলে সমুদ্রের নিচে গবেষণায় ইউএস নেভি অনেক এগিয়ে যাবে।

য়নাজমুল হক ইমন

সূত্রঃ   বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৪এপ্রিল ২০১২ খ্রিঃ।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।