মানবদেহে রক্তচাপ আছে। কারও কারও যদি সেই রক্তচাপ স্বাভাবিক চাপের চাইতে বেশি থাকে, তবে তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা যেতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তির বয়স ৩০ বছর হয় তবে তার Blood Pressure, Systolic Blood Pressure 120mmHg এর নিচে থাকতে হবে এবং Diastolic Blood Pressure 80mmHg এর নিচে থাকতে হবে। তবে কারও Blood Pressure 120 বা, 130 মিঃ মিঃ মারকারী (systolic) এবং 80mm বা 90mm (Diastolic) হলেই তাকে উচ্চ রক্তচাপের রোগী বলা যাবে না।
উচ্চ রক্তচাপকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। ১. উপরের রক্তচাপ বা Systolic Blood Pressure ২. নিচের রক্তচাপ বা Diastolic Blood Pressure. উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে তিনটি Grade এ ভাগ করা হয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ হিসেবে মাথা ব্যথা হতে পারে অথবা নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। তবে, এই লক্ষণগুলি অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের অনেক ক্ষেত্রেই কোনো লক্ষণ থাকে না। যার ফলে তারা চিকিৎসকের পরামর্শে আসেন না। বেশকিছু রোগী চোখের সমস্যা নিয়ে অথবা কিডনির সমস্যা নিয়ে অথবা হার্টের সমস্যা নিয়ে যখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে আসেন, তখন হঠাৎ করেই তার উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ রক্তচাপ বেশি থাকলে, শরীরের বেশ কিছু Organ (হার্ট, কিডনি, ব্রেইন) এর ক্ষতি হয়ে থাকে যার ফলে, ঐ Organ গুলির সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে আসলে তখন উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হয়। উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হওয়ার পর রোগীর উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা নিতে হবে। অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, প্রচুর পরিমাণ মদপান করা, অস্বাভাবিক ওজন, নিয়মিত ব্যায়াম না করা ইত্যাদির জন্য রক্তচাপ বাড়তে পারে। তবে শতকরা ৯৫ ভাগ রোগীর উচ্চ রক্তচাপের কারণ জানা যায় না। শতকরা ৫ ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কারণ জানা যায়। রমজান মাসে, হৃদরোগী, উচ্চ রক্তচাপের রোগী, বিশেষ করে ডায়াবেটিসের রোগীদের ওষুধ সেবন নিয়ে চিন্তা করতে হয়। রমজান মাসে ওষুধ সেবন নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
যে ওষুধ দিনে দুই বার খেতে হবে, সেই ওষুধ ইফতারের সময় ও সেহেরির সময় খেতে হবে। যে রোগীকে দিনে একবার ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া আছে সেটি ইফতারের সময় অথবা সেহেরির সময় খেলেই চলবে। ডায়াবেটিস রোগী অনুরূপভাবে ওষুধ সেবন করবেন। হৃদরোগী, উচ্চ রক্তচাপের রোগী বা ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা থাকা যাবে কিনা এই নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় আছে। সবচেয় বড় কথা রোগী যদি নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ মনে করেন তাহলে তিনি রোজা রাখতে পারবেন।
ডা. আমিরউজ্জামান খান
ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ইন্টারভেনশনাল
কার্ডিওলজিস্ট,
ফোন : ০১৫৫২-৪১২৬২৪
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।