সামপ্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব প্রবীণেরা নিয়মিত দাঁতের প্লাক (খাদ্যকণা ও ব্যাকটেরিয়াসমূহ) দূরীকরণের চিকিৎসা নেন তারা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের জটিলতায় কম ভোগেন। এই গবেষণাটি করা হয় তাইওয়ানের ২২০০০ জন ৫০ বছর বয়সের ঊর্ধ্বের রোগীকে নিয়ে। গবেষকরা বলেছেন, যেসব রোগী তাদের দাঁত সঠিকভাবে স্কেলিং করান তারা পরবর্তী সাত বছর হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের মতো রোগ থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকেন। দন্ত চিকিৎসকরা স্কেলিংয়ের মাধ্যমে দাঁতের ওপর থেকে এবং মাড়ির পকেট থেকে 'প্লাকসমূহ' দূর করেন।
আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব রোগী আগে মাড়ির রোগে আক্রান্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৬৪ শতাংশ বেশি। বর্তমানে ডেন্টাল সার্জনরা নিখুঁত চিকিৎসার জন্য ডেন্টাল প্লাক দূরীকরণে অত্যাধুনিক আলট্রাসনিক স্কেলার ব্যবহার করেন যেটা পানি এবং তরঙ্গের মাধ্যমে কাজ করে। ডেন্টাল প্লাকের ভেতরে বাস করে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া যদি কোনোভাবে রক্তের সঙ্গে মিশে যায় তাহলে সৃষ্টি হয় নানা জটিলতার। উপরন্তু একটি স্থায়ী দাঁত পড়ে যাওয়ার একমাত্র কারণ হলো ডেন্টাল প্লাক। গবেষকরা বলেছেন, প্লাক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে রক্তনালির প্রদাহের সৃষ্টি হয়। ফলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। সঠিক সময়ে চিকিৎসার মাধ্যমে এ প্রদাহ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বা ডেন্টাল প্লাক দূর করা যায়।
যখন দাঁতের চার পাশের টিস্যুগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয় তখনই একজন রোগী পেরিওডেন্টাল রোগে আক্রান্ত হয়। দুর্ভাগ্যবশত মাড়ির ক্ষয়ই হচ্ছে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দাঁত পড়ে যাওয়ার প্রথম কারণ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ৩৫ ঊধর্্ব লোকেরাই মাড়ির রোগে আক্রান্ত হন। মাড়ির এই ধরনের রোগ মুখের ভেতরের হাড়ের কাঠামোকে ধ্বংস করে, এর ফলে কখনো কখনো হাড় প্রতিস্থাপনও করতে হয়।
যখন দাঁতের চার পাশের টিস্যুগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয় তখনই একজন রোগী পেরিওডেন্টাল রোগে আক্রান্ত হয়। দুর্ভাগ্যবশত মাড়ির ক্ষয়ই হচ্ছে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দাঁত পড়ে যাওয়ার প্রথম কারণ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ৩৫ ঊধর্্ব লোকেরাই মাড়ির রোগে আক্রান্ত হন। মাড়ির এই ধরনের রোগ মুখের ভেতরের হাড়ের কাঠামোকে ধ্বংস করে, এর ফলে কখনো কখনো হাড় প্রতিস্থাপনও করতে হয়।
মাড়ির ভেতরে খাদ্যকণা জমে থেকে যে আবরণ তৈরি করে তার নাম ডেন্টাল প্লাক। এই ডেন্টাল প্লাক ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে পাথরের মতো অবস্থায় যখন থাকে তখন দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা। সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মাড়ির প্রদাহ বা পেরিওডেন্টাল ডিজিজ। এই পেরিওডেন্টাল ডিজিজ বা মাড়ির রোগকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগটিকে বলা হয় জিনজিভাইটিজ। এ অবস্থায় মাড়িতে প্রদাহ হয় এবং সামান্য আঘাতেই মাড়ি থেকে রক্ত পড়ে, কখনো দেখা যায় দাঁত ব্রাশের সময় বা শক্ত আপেল বা পেয়ারা জাতীয় ফল খেলেও মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়। কখনোবা ঘুম থেকে ওঠলে দেখা যায় বালিশে রক্ত অথবা মুখের ভেতরে রক্ত জমাট হয়ে আছে । এই অবস্থায় চিকিৎসা না হলে প্রদাহ আরও গভীরে যায়। কারণ জমে থাকা পাথর বা ডেন্টাল প্লাক তখন দাঁতের পার্শ্ববর্তী অন্যান্য অংশ যেমন পেরিওডেন্টাল মেমব্রেন ও এলভিওলার বোন নামক পাতলা হাড়কে আক্রমণ করে, ফলে ভিত্তি নষ্ট হয়ে যায় এবং এ অবস্থায় প্রদাহ মাড়িতে আরও গভীরে যায় এবং পকেট তৈরি হয় এবং দাঁত তার অবস্থান থেকে নড়ে যায়। ফলে দাঁত ফেলে দিতে হয়। নতুবা চিকিৎসা ব্যবস্থা জটিল হয়।
লেখকঃ অধ্যাপক ডা. অরুপরতন চৌধুরী
সিনিয়র কনসালটেন্ট
ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টিস্ট্রি,
বারডেম হাসপাতাল
ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
ফোন : ০১৮১৯২১২৬৭৮
সূত্রঃ বাংলাদেশপ্রতিদিন, ১৪ জুলাই ২০১২ খ্রিঃ
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।