সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: Alice - বহুনামের এলিস

Alice - বহুনামের এলিস


Alice
Alice

ইতিহাসের এক আলোচিত নারী ছিলেন এলিস। তিনি এতটাই আলোচিত ছিলেন যে ইতিহাসের নানা অধ্যায়ে তাকে নানা নামে অভিহিত করা হয়। তিনি ছিলেন ফ্রান্সের রাজা সপ্তম লুই-এর কন্যা। এলিস নামে বেশি পরিচিত হলেও তিনি এলায়েস, এডিলায়েড, এডিলে, এলিঙ্সহ আরও কিছু নামে ইতিহাসবিদদের গ্রন্থভুক্ত হয়েছেন। তার মা কনস্তান্স অব কাসতিল ছিলেন রাজা লু্ই-এর দ্বিতীয় পত্নী। রাজার প্রথম পত্নী ছিলেন ইলিয়ন অব একিতেন। এখানে একটা মজার ব্যাপার রয়েছে। নাম বিভ্রাটের কারণে এলিসকে অনেকে গুলিয়ে ফেলেন তার বৈমাত্রেয় বোন এলিং এর সঙ্গে। তবে ইতিহাসে এলিস পরিচিত কাউন্টেস অব ভেকসিন হিসেবে, আর এলি পরিচিত এলি অব ফ্রান্স নামে।


এলিসের জীবনে সুনামের চেয়ে দুর্নামের রাজত্বই ছিল বেশি। রাজনৈতিক কারণে জীবনের মোড় ঘুরে গেলেও তার এত কেলেঙ্কারির পেছনে নিদের উদ্দামতারও একটা বড় দায় ছিল। তার উৎকামুকতা ও অতিকামুকতা নিয়ে নানা গল্প মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত ছিল। এখনো ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সে বাছবিচারহীন যৌন জীবনের প্রসঙ্গ উঠলে উচ্চারিত হয় তার নাম। অবশ্য এর পেছনের গল্পটা রাজনৈতিক। ১১৬৯ অব্দে রাজা লুই ও ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় হেনরির মধ্যে এক সমঝোতা হয়। ওই সমঝোতা অনুযায়ী এলিসের সঙ্গে বিয়ে ঠিকঠাক হয় হেনরির পুত্র রিচার্ডের। এর পর এলিসকে পাঠানো হয় ইংল্যান্ডে। কিন্তু এখানেই ঘটে অন্য ঘটনা। এলিসের বিয়ের ব্যবস্থা না করে তার হবু শ্বশুর হেনরি রাজসভায় নিয়োজিত রাখেন তাকে। এভাবেই কেটে যায় সাত-আট বছর। ১১৭৭ অব্দ নাগাদ এ নিয়ে কদর্য কুৎসা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স জড়িয়ে পড়ে ঘোরতর দ্বন্দ্বে। এ দ্বন্দ্ব যখন ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করে, তখন শেষে সপ্তম লুই-এর সঙ্গে আপসরফা করেন হেনরি, তবে বিবাদের মূল বিষয় অমীমাংসিতই থেকে যায় : এলিস থাকেন হেনরির সঙ্গেই। শেষ পর্যন্ত তার বিয়েটা আর হয়নি। চারদিকে তখন রটে যায়_ এলিসকে আসলে রক্ষিতা করে নিয়েছেন হেনরি, গর্ভে এক সন্তানও রয়েছে তার। সর্বত্র তখন বলাবলি চলছিল_ এলিস দেখতেই যা ভালো, তার ঘটনা মোটেও ভালো নয়।

১১৮৯ অব্দের ৬ জুলাই মারা যান হেনরি। তখন ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেন এলিস-এর ২০ বছর ধরে বাগদত্ত স্বামী রিচার্ড। দুই বছর পর ১১৯১ অব্দের মার্চে, মেসিনায় এক ঘোষণার মাধ্যমে ওই বাগদান বাতিল করেন তিনি। সম্ভবত ১২৩০ অব্দে অবসান ঘটে তার কলঙ্কিত জীবনের। বিভিন্ন উপন্যাস, নাটক ও চলচ্চিত্রের রূপায়িত হয়েছে এলিস-এর জীবনের নানা ঘটনা, নানা কাহিনী।

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৭ জানুয়ারী ২০১২ ইং

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।