কিডনিতে পাথর রোগ হওয়া আমাদের দেশে
আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। আর রেনাল স্টোনের রোগের ব্যাপারে আমরা সবাই কম বেশি
জানি। প্রধানত কিডনির ডাক্ট সিস্টেমে পাথর হওয়াকেই আমরা রেনাল স্টোন ডিজিস
বলি। এই
রোগ হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ দায়ী এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর কারণ
মাল্টিফ্যাক্টোরিয়াল। এবার চলে আসি আজকের
আলোচ্য কথায়, আমাদের প্রায় সবারই অতি পছন্দের পানীয় হচ্ছে চা।
চায়ের যেমন হাজারো গুণ রয়েছে, তেমনি অতিরিক্ত চা পানে আছে বড় মাত্রার ঝুঁকিও। আর সেটা হচ্ছে রেনাল স্টোন! পাথরের উপাদান অক্সালেট! বেশির ভাগ চা-এর প্রিপারেশনে অক্সালেট-এর মাত্রা বেশি থাকে যা অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অক্সালেট অনেক বছর ধরে রেনাল ডাক্ট সিস্টেমে ডিপোজিট হতে হতে একটা সময় ক্যালসিয়ামের সাথে যৌগ (ক্যালসিয়াম অক্সালেট) তৈরি করে সৃষ্টি হয় রেনাল স্টোন। ক্যালসিয়াম অক্সালেট হচ্ছে সেই রেনাল স্টোন, যেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হয়ে থাকে (৩৫%-৭৫% পর্যন্ত)। সেজন্য অতিরিক্ত চা সেবন থেকে দূরে থাকতে হবে। প্রশ্ন আসতেই পারে যে তা হলে কি পরিমাণ চা পান করা যেতে পারে? এর কোনো সরাসরি উত্তর নেই। কেননা এই ব্যাপারটাও অনেক ফ্যাক্টরের উপর ডিপেনডেন্ট। যে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা হচ্ছে, পানি পান যে কোনো ভাবেই কম না হয়। কারণ, অতিরিক্ত অক্সালেট সেবন হলে এবং তার সাথে ডিহাইড্রেশন হলেই প্রধানত বিপত্তি বাঁধে। সেজন্য প্রচুর পানি পান করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ, যদি আপনি সত্যিকারে চা প্রেমী হয়ে থাকেন! কিছু তথ্য এক চা চামচ প্রস্তুতকৃত চা’তে অক্সালেট থাকে ৭২ মি গ্রা! যাদের অক্সালেট স্টোন হওয়ার ঝুঁকি থাকে (বিভিন্ন জেনেটিক কারণের জন্য) তাদের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের অক্সালেট-এর পরিমাণ বেঁধে দেয়া হয় (৫০ মি গ্রা থেকে ২০০ মি গ্রা অবস্থা ভেদে)। তবে সাধারণত যাদের রেনাল স্টোনের কোনো জেনেটিক ঝুঁকি নেই তারা চা বেশি পান করলে সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, ডিহাইড্রেশন প্রিভেন্ট করার জন্য।
ডা. এন এইচ সার্জা
শহীদ সোহরাওয়ার্দী
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সার্জারি বিভাগ।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।